শুক্রবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

খালেদা জিয়ার অবস্থা অপরিবর্তিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

খালেদা জিয়ার অবস্থা অপরিবর্তিত

কোনো উন্নতি নেই রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার। আগের দিনের মতোই অপরিবর্তিত রয়েছেন লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী। সার্বক্ষণিক ইনজেকশন আর ওষুধপত্র দিয়েই পরিপাকতন্ত্রের রক্তক্ষরণ বন্ধ রাখার চেষ্টা করছেন চিকিৎসকরা। যখনই প্রেশার বেড়ে যাচ্ছে, তখনই রক্তক্ষরণের আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন খালেদা জিয়ার এ পরিস্থিতিকে ‘আনপ্রেডিকটেবল’ বলে অভিহিত করেছেন। এ ব্যাপারে তিনি গতকাল রাতে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, “ম্যাডামের সিচুয়েশনটা ‘আনপ্রেডিকটেবল’। ভালো-মন্দ কিছুই বলা যাচ্ছে না। এই হঠাৎ করে তাঁর পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ হচ্ছে, ওষুধপত্র (ইনজেকশন) দিলে একটু কমে যাচ্ছে, পরদিন কিংবা কয়েক ঘণ্টা পরই দেখা যাচ্ছে আবারও তাঁর রক্তক্ষরণ শুরু হয়েছে। মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা প্রতিদিনই বৈঠক করছেন। আজ শুক্রবারও তারা বসবেন।”        

এদিকে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার এবারের শারীরিক অবস্থা নিয়ে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরাও টেনশনে রয়েছেন। পরিবারের সদস্যদের এবং এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বারবার যত দ্রুত সম্ভব তাঁকে বিশ্বের যে কোনো একটি ‘অ্যাডভান্স হেলথ সেন্টারে’ নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে মেডিকেল বোর্ড। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের মতে, বাংলাদেশে  এর বাইরে আর কোনো চিকিৎসা ও প্রযুক্তি নেই বেগম খালেদা জিয়ার জন্য। সর্বোচ্চ চিকিৎসাটাই প্রয়োগ করে যাচ্ছেন তারা। চিকিৎসকরা বলেছেন, “সিবিসিসহ গতকাল ম্যাডামের স্বাস্থ্যের একাধিক রুটিন টেস্ট করা হয়েছে। ডায়াবেটিস ইনসুলিন দিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখা হচ্ছে। চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন রক্তক্ষরণ বন্ধ রাখতে। এখন ‘টিপস সংযোগ’ করে দিতে পারলে রক্তক্ষরণ বন্ধ করা সম্ভব। ব্লাড ফ্লো কমে যাবে, যা বাংলাদেশের কোনো হাসপাতালে করা যাবে না। এটি উন্নত প্রযুক্তির সহায়তায় করতে হয়। তাই দ্রুত ‘হাই কেয়ার সেন্টারে’ শিফট করা উচিত।”

২৩ বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতি : এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ২৩ জন বিশিষ্ট নাগরিক। তারা মনে করেন, সরকার এ ধরনের মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দেখালে তা উন্নত রাজনৈতিক সংস্কৃতি সৃষ্টির জন্যও ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। বিবৃতিতে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক আহমেদ কামাল, অধ্যাপক স্বপন আদনান, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, অধ্যাপক পারভীন হাসান, অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, অধ্যাপক ড. শাহনাজ হুদা, মানবাধিকার কর্মী শিরিন হক, নূর খান লিটন, রেহনুমা আহমেদ, হানা শামস আহমেদ, নারীনেত্রী ফরিদা আখতার ও ডা. নায়লা জেড খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. নাসরিন খন্দকার, মির্জা তাসলিমা সুলতানা ও অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাইদুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।

মশাল মিছিল : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদের নেতৃত্বে গতকাল রাতে রাজধানীর কাকরাইল মোড় থেকে শান্তিনগর মোড় পর্যন্ত মশাল মিছিল হয়।

এ সময় নেতা-কর্মীরা খালেদা জিয়ার অবিলম্বে মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসার দাবিতে স্লোগান দেন। মশাল মিছিলে বিএনপি নেতা আমিনুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি নেতা মাহমুদুর রহমান সুমন, স্বেচ্ছাসেবক দলের ডা. জাহেদুল কবির, যুবদলের সোহেল আহমেদ, রবিউল ইসলাম নয়ন, ছাত্রদলের মেহেবুব মাসুম শান্ত প্রমুখ অংশ নেন।

সর্বশেষ খবর