স্মার্টফোন ও ধূমপান আসক্তিতে মৌলিক পার্থক্য নেই বলে মন্তব্য করেছেন খ্যাতনামা লেখক ও কলামিস্ট অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সপ্তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ড. জাফর ইকবাল বলেন, আমাদের চারপাশে তথ্যপ্রযুক্তির অতিকায় দানবেরা তাদের নেটওয়ার্কের আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলেছে। ইন্টারনেটের কানাগলিতে আমাদের একাধিক প্রজন্ম হারিয়ে গেছে। সোশ্যাল নেটওয়ার্ক নামের বিচিত্র মাদকে সবাই আসক্ত। অনলাইন ক্লাস করতে গিয়ে অসংখ্য শিশু স্মার্টফোনে আসক্ত হয়ে গেছে। ডাইনিংয়ে বসে ছোট ছেলেটি সিগারেট খেলে আমরা আতঙ্কে চমকে উঠি। স্মার্টফোনে ফেসবুক, ইউটিউবে মগ্ন হয়ে থাকলে আমরা কিছুই মনে করি না। অথচ দুটোর মধ্যে মৌলিক কোনো পার্থক্য নেই। একটি জরিপের উদ্ধৃতি দিয়ে জাফর ইকবাল বলেন, একজন মানুষ তার এক-তৃতীয়াংশ সময় নানা ধরনের অ্যাপের পেছনে ব্যয় করে। তিনি বলেন, যে প্রযুক্তি তোমার কাজকর্মের জন্য ব্যবহার করা প্রয়োজন অবশ্যই তুমি সেটি ব্যবহার করবে, কিন্তু উল্টোটা যেন না হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, আমরা অতিমাত্রায় ডিভাইসনির্ভর হয়ে যাচ্ছি। অনেকের মনোযোগ ধরে রাখার ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। আমরা যেন প্রযুক্তির দাসে পরিণত না হই, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। দীপু মনি আরও বলেন, দেশে দক্ষ জনবল দরকার। সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসব জনবল তৈরি হবে। শিক্ষার্থীদের শুধু জ্ঞান অর্জন করলেই হবে না, দক্ষতাও থাকতে হবে, একই সঙ্গে আদর্শ সুনাগরিক হতে হবে। আমরা শিক্ষায় এখন গুণগত মান অর্জনে জোর দিচ্ছি। অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম ও উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম মফিজুল ইসলাম। মোট ১ হাজার ৩০২ জন শিক্ষার্থী সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ডিগ্রি গ্রহণ করেন। ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের শামসুন নাহার, ইংরেজি বিভাগের মাহদী-আল-মাহমুদ ও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মোস্তফা-ই-জামান আচার্য স্বর্ণপদক অর্জন করেন। এ ছাড়া ১৫ জন শিক্ষার্থীকে উপাচার্য স্বর্ণপদক দেওয়া হয়। সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মেজর জেনারেল (অব.) কাজী ফকরুদ্দীন আহমেদ সমাবর্তন অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।