রবিবার, ২১ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

রাজনৈতিক দলের কোর্টে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বল

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজনৈতিক দলের কোর্টে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বল

বদিউল আলম মজুমদার

সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। বলটা রাজনৈতিক দলের কোর্টে মূলত। গতকাল সকালে নির্বাচন কমিশনের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের প্রস্তাবনা সম্পর্কিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

এদিকে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কী প্রক্রিয়ায় হবে তা ঠিক করতে রাজনৈতিক সমঝোতার বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। সুজন সম্পাদক বলেন, রাজনৈতিক সমঝোতা দরকার। কোনো দল বা কেউ এককভাবে এই অবস্থা থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়। রাজনৈতিক সমঝোতার পর সিদ্ধান্ত আসতে পারে যে কী কাঠামোতে নির্বাচন হতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সুজন সহসভাপতি বিচারপতি আবদুল মতিন। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। উপস্থিত ছিলেন সুজন-এর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ড. শাহদীন মালিক, ড. তোফায়েল আহমেদ, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, আকবর হোসেন, ফারুক মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনা প্রসঙ্গে বদিউল আলম বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনা সম্পর্কে আমার ব্যক্তিগত কোনো প্রস্তাবনা নেই। বলটা রাজনৈতিক দলের কোর্টে মূলত। এটা জাতীয় সমস্যা। আমরা বহুদিন ধরে একটা জাতীয় সনদের কথা বলে আসছি, সবাই মিলে ঐকমত্যে পৌঁছানো প্রয়োজন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।

সুজন সম্পাদক বলেন, ইসির দায়িত্ব সুষ্ঠু নির্বাচন করা। তারা যদি তা না করতে পারে তাহলে ইসির উচিত সরকার ও রাজনীতিবিদদের জানানো যে তার কনস্টিটিউশনাল ম্যান্ডেটটা (সাংবিধানিক আদেশ) পূরণ করতে পারবেন না। এটা যদি ২০১৪ সালে একতরফা নির্বাচনের আগে বলতে পারত তা হলে বাংলাদেশের ইতিহাস ভিন্ন হতো। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অনিয়মের অভিযোগের মধ্যে যে কোনো মুহূর্তে ভোট বাতিলের ক্ষমতা চেয়ে ইসি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের যে প্রস্তাব দিয়েছে তা অপ্রয়োজনীয়। সুজন জানায়, এই ক্ষমতা এরই মধ্যে ইসির আছে। কিন্তু তারা এই ক্ষমতা প্রয়োগ করছে না। ইসি মনে করে, তাদের ভোট স্থগিত করার ক্ষমতা আছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা ফলাফল প্রকাশ করার পরে ইসির আর কোনো কিছু করার থাকে না। তারা এই ক্ষমতাটা চায় কিন্তু এটা ঠিক নয়। ফলাফল গ্যাজেট আকারে প্রকাশ করার আগ পর্যন্ত তাদের ক্ষমতা আছে। এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট আদালতের রায় আছে। আগস্টের শুরুতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আরপিও বেশ সংস্কারের প্রস্তাব সরকারকে জানায় ইসি, যা গত ৮ আগস্ট আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে। যদিও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে করণীয় ঠিক করতে ৩৯টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে করা ইসির বৈঠক শেষ হয় জুলাইয়ের শেষে। সুজন বলছে, সংলাপ শেষ হওয়ার আগেই মন্ত্রণালয়ের আরপিও এর প্রস্তাব পাঠিয়েছে ইসি। সংলাপে যে প্রস্তাবগুলো এসেছে সেগুলো যুক্ত হয়েছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সংবাদ সম্মেলনে সুজন আরও জানায়, দলীয় সরকারের অধীনে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে পর পর দুটি ব্যর্থ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দলীয় সরকারের অধীনে সব নির্বাচন ছিল অগ্রহণযোগ্য। তাই বর্তমান সাংবিধানিক কাঠামোতে এবং প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সীমাহীন দলীয়করণের কারণে আগামী নির্বাচন যে সুষ্ঠু হবে না তা নিশ্চিত করেই বলা যায়। আরপিওতে না ভোটের বিধান যুক্ত করা, হলফনামার ছক পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা, বিদেশে অবস্থানরতদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, হলফনামা মিথ্যা তথ্য প্রদানকারীদের মনোনয়নপত্র বাতিলে সুস্পষ্ট বিধান রাখার প্রস্তাব করে সুজন।

 

 

সর্বশেষ খবর