শুক্রবার, ২১ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি চক্রে কুলি-রিকশাচালক

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনে টিকিট কালোবাজারি চক্রের সদস্যরা লাইনে দাঁড়িয়ে এক একটি এনআইডি দিয়ে চারটি করে টিকিট সংগ্রহ করেন। কখনো রিকশাওয়ালা, কুলি, দিনমজুরকে এনে দাঁড় করানো হয় লাইনে। তাদের মাধ্যমে টিকিট সংগ্রহ করা হয়। বিনিময়ে সামান্য কিছু টাকা দেওয়া হয় তাদের। এরপর এসব টিকিট বিক্রি করা হয় দ্বিগুণ দামে। শুধু রেলস্টেশনে নয়, ফেসবুকে গ্রুপ খুলেও টিকিট বিক্রি করা হয়।

গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কমলাপুর  রেলস্টেশন এলাকায় অভিযান চালিয়ে কালোবাজারি চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করে র‌্যাব-৩। তারা হলেন- সেলিম (৪৮) এবং তার দলের সদস্য শাহ আলম (৩৪), লিটন (৩৫), আবদুর রশিদ ফকির (৩০) ও খোকন মিয়া (৫৮)। তাদের কাছ থেকে ট্রেনের ৮৮টি টিকিট, ৪টি মোবাইল ফোন ও ১৮ হাজার ৪৪৭ টাকা জব্দ করা হয়।

 র?্যাব জানায়, চক্রটি কমলাপুর, বিমানবন্দরসহ দেশের বিভিন্ন রেলস্টেশনে কালোবাজারির মাধ্যমে টিকিট বিক্রি করে আসছিল। গতকাল বিকালে রাজধানীর টিকাটুলীতে র?্যাব-৩ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান র?্যাব-৩-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ট্রেন ছাড়ার সময় যত ঘনিয়ে আসে কালোবাজারে তাদের টিকিটের দাম তত বাড়তে থাকে। সাধারণত দ্বিগুণ মূল্যে টিকিট বিক্রি করেন তারা। সুযোগ বুঝে কখনো দাম আরও বাড়িয়ে দেন। এগারোসিন্দুর প্রভাতি, মহানগর প্রভাতি, চট্টলা এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ও পারাবত এক্সপ্রেস এসব ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করে চক্রটি। এ চক্রের আরও ইউনিট রয়েছে। প্রতি ইউনিটে রয়েছেন পাঁচ-সাত জন করে সক্রিয় সদস্য। রেলস্টেশনে যে পরিমাণ টিকিট বরাদ্দ থাকে তার ৫০ শতাংশ বিক্রি হয় অনলাইনে। ফলে কাউন্টারে এসে অনেকে টিকিট না পেয়ে ফিরে যান। এ সুযোগটাই গ্রহণ করেন টিকিট কালোবাজারি চক্রের সদস্যরা। চক্রটি স্টেশন ছাড়াও অনলাইনে বিভিন্ন জনের এনআইডি ব্যবহার করে টিকিট সংগ্রহ করে। এরপর এসব টিকিট নিয়ে রেলস্টেশনের ভিতরে ছড়িয়ে পড়ে তারা। তাদের টার্গেটে থাকে স্টেশনে এসে টিকিট না পাওয়া যাত্রীরা। ট্রেন ছাড়ার ঘণ্টা দুয়েক আগে যাত্রীসমাগম শুরু হলে তাদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যায়। এ সুযোগে দিগুণ দামে টিকিট বিক্রি করে। এটা তাদের স্বাভাবিক সময়ের কার্যক্রম। ঈদের সময় এদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যায় সবচেয়ে বেশি। এ সময় তারা এক একটি টিকিট তিন-চার গুণ বেশি দামে বিক্রি করে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত কোরবানির ঈদে ৫০০ টাকার টিকিট সর্বোচ্চ ২০০০ টাকায়ও চক্রটি বিক্রি করেছে। চক্রের হোতা সেলিমের নামে টিকিট কালোবাজারির অভিযোগে মোট সাতটি মামলা রয়েছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন মেয়াদে সে জেলও খেটেছে। এ ছাড়া অন্য আসামিদের বিরুদ্ধেও রয়েছে বেশ কয়েকটি মামলা।

সর্বশেষ খবর