শুক্রবার, ১১ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
ফরিদপুরে সমাবেশ

নেতা-কর্মীরা হাজির তিন দিন আগেই

ফরিদপুর প্রতিনিধি

ফরিদপুরে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ কাল। তিন দিন আগেই নেতা-কর্মীরা সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেছেন। তবে মৃত্যুর ১২ বছর পর এক বিএনপি নেতাকে গ্রেফতার করতে তার বাড়ি গেছে পুলিশ। এদিকে আজ শুরু হচ্ছে বাস ধর্মঘট। বিভাগীয় গণসমাবেশ সামনে রেখে সরকার ও প্রশাসনের ইন্ধনে বাস ধর্মঘট ডাকা হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।

তবে বাস বন্ধ করে বিএনপির সমাবেশে জনসমাগম ঠেকানো যাবে না বলে দাবি করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। সমাবেশস্থল কোমরপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সরকার সমাবেশ বানচালে নানা ষড়যন্ত্র করছে। ক্ষমতাসীন দলের সব বাধা ও ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে বুধবার রাত থেকেই সমাবেশে মানুষ আসছে। কোনো বাধা, হামলা করে বিএনপিকে দমানো যাবে না। বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ কেন্দ্রস্থল কোমরপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে গতকাল সন্ধ্যায় নেতা-কর্মীদের উপস্থিত হতে দেখা গেছে। গতকাল দিনভর রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, মাগুরা, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া থেকে বাসে, ট্রাকে ও মাইক্রোবাসে নেতা-কর্মীদের আসতে দেখা গেছে। সন্ধ্যার পর গোটা মাঠ লোকারণ্য হয়ে যায়। বিভিন্ন স্থান থেকে নেতা-কর্মীদের শুকনো খাবার সঙ্গে নিয়ে আসতে দেখা গেছে। ফরিদপুর জেলা বিএনপির সদস্যসচিব এ কে এম কিবরিয়া স্বপন বলেন, বুধবার রাত থেকে বিএনপির নেতা-কর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষ সমাবেশস্থলে আসছেন। জানা গেছে, মহাসড়কে সব ধরনের অবৈধ থ্রি-হুইলার চলাচল বন্ধের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল ফরিদপুর বাস মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। দাবি না মানলে ফরিদপুরের সব রুটে বাস ও মিনিবাস বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল সংগঠনটি। তবে সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই গতকাল সকাল ৯টা থেকে মাইকিং করে বলা হয়েছে, আজ (শুক্রবার) সকাল ৬টা থেকে শনিবার রাত ৮টা পর্যন্ত ফরিদপুরের সব রুটে বাস ও মিনিবাস বন্ধ থাকবে।

এদিকে ফরিদপুর শহর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও পৌর কমিশনার বাচ্চু মিয়া আলী মারা যান এক যুগ আগে। অথচ তাঁকে গ্রেফতারের জন্য মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে পুলিশ অভিযান চালিয়েছে পশ্চিম খাবাসপুর এলাকার মিয়াপাড়া সড়কের বাড়িতে। এ ঘটনায় শহরজুড়ে বেশ হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, বিভাগীয় গণসমাবেশ কেন্দ্র করে পুলিশ বিএনপি নেতাদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করছে। এ অভিযান থেকে বাদ যায়নি ১২ বছর আগে প্রয়াত ওই বিএনপি নেতার বাড়িও। ২০১০ সালের ২৮ আগস্ট মারা যান বাচ্চু মিয়া আলী। তাঁর স্ত্রী মৌসুমী আলী, ছেলে মাহির আরাফাত আলী (১৬) ও মেয়ে অন্তরা মালিয়া (২৫) বাড়িতে ছিলেন। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মৌসুমী আলী বলেন, ‘পুলিশের দুই সদস্য বাড়ির সামনে এসে দরজায় ধাক্কা দিয়ে ডাকাডাকি করতে থাকেন। তারা বলেন আমরা ঢাকা থেকে এসেছি। দরজা খুলুন, বাচ্চু মিয়া আলীকে ডাকেন। আমরা ওনাকে নিতে এসেছি। তখন আমি বলি তাঁকে নিতে হলে কবরস্থান থেকে নিয়ে যেতে হবে। তিনি বেঁচে নেই। তখন পুলিশ সদস্যরা বলেন দরজা না খুললে কীভাবে খুলতে হয় তা আমরা জানি। তখন আমি বলি রাতে দরজা খোলা যাবে না। আপনারা অপেক্ষা করেন, সকালে দরজা খুলব।’ মৌসুমী আলী বলেন, বুধবার সকালে তিনি থানায় গিয়ে এক যুগ আগে মারা যাওয়া বাচ্চু মিয়ার মৃত্যুসনদ জমা দেন। ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল বলেন, ‘পুলিশ ওয়ারেন্ট তামিল করতে ওই বাড়িতে গিয়েছিল।’ তিনি দাবি করেন, বাচ্চু মিয়া নয়, তাঁর ছেলের নামে ওয়ারেন্ট ছিল।’ বাচ্চু মিয়ার ছেলে অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং তার নামে কোনো মামলা নেই- এমন কথা জানালে ওসি বলেন, ‘তবে ওয়ারেন্টেও তথ্যগত ত্রুটি থাকতে পারে। আমরা ওয়ারেন্টটি যাচাই করে দেখছি।’

সর্বশেষ খবর