মঙ্গলবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
১৪ দলের সমাবেশে আমু

মুক্তিযুদ্ধের শক্তির ঐক্য থাকলে বিএনপি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

মুক্তিযুদ্ধের শক্তির ঐক্য থাকলে বিএনপি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে

ঢাকায় গতকাল ১৪ দলের জনসভায় বক্তব্য রাখছেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু -বাংলাদেশ প্রতিদিন

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেছেন, বিজয়ের উৎসব থেকে দূরে সরিয়ে মানুষকে বিপথগামী করার জন্য বিএনপি ষড়যন্ত্র করছে। এই ডিসেম্বর মাসে তারা বিভিন্ন রকম তারিখ দিয়ে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ঐক্যবদ্ধ থাকলে বিএনপি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।

গতকাল বিকালে মহান বিজয় দিবস ও শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তন প্রাঙ্গণে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।  আমির হোসেন আমু বলেন, বিএনপির গাত্রদাহ নিবারণ করার জন্য আজ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন, ১৪ দল থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সবাই সজাগ, সচেতন। তারা বলেছিল, ১০ তারিখে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হবে, খালেদা জিয়া দেশ শাসন করবে। তাদের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন তো দূরের কথা, আজ তারা আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। তারা আজ বলছে, তাদের নাকি ১০ তারিখ জয় হয়েছে। তারা সরকারের সঙ্গে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে মুচলেকা দিয়ে গোলাপবাগে সভা করেছে, এটাই নাকি তাদের বিজয়। এই বিজয় নিয়ে তারা সন্তুষ্ট। আমরাও চাই তারা সন্তুষ্ট থেকে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখুক। তিনি বলেন, জাতীয় চার মূলনীতি গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্ম নিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদ যা জিয়াউর রহমান ছুড়ে ফেলে দিয়েছিল, আজ তা পুনঃস্থাপিত হয়েছে। এটা তাদের গাত্রদাহ। তিনি বলেন, আজ এ দেশে স্বাধীনতাকামী মানুষ, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির মানুষ, গণতান্ত্রিক মানুষ, প্রগতিশীল মানুষ, অসাম্প্রদায়িক মানুষ বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। এখানে ফাটল ধরার কোনো সুযোগ নেই। সেই ঐক্যবদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৪ দল এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম বলেন, বিএনপির কার্যালয়ে বোমার কারখানা পাওয়া গেছে। সরকারকে নাজেহাল অবস্থায় ফেলতে চেয়েছিল। তারা বলেছিল ১০ ডিসেম্বর জীবন থাকতে নয়াপল্টন থেকে যাবে না। নাকে খত দিয়ে গোলাপবাগে গরুর হাটে গিয়ে ১০-১৫ হাজার মানুষ নিয়ে মিটিং করেছে। কোনো ষড়যন্ত্র করলে মোকাবিলা রাজপথে হবে। প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি অসাংবিধানিক সরকার আনতে চায়। এই অপশক্তির বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে ইস্পাত দৃঢ় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সঠিক সময়ে নির্বাচন হবে। বিএনপি না আসলে তাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। জাতীয় পার্টি-জেপি সাধারণ সম্পাদক শেখ শহিদুল ইসলাম বিএনপির উদ্দেশে বলেন, আপনারা যা চান আমরাও তাই চাই। আপনারা চান অবাধ নির্বাচন, আমরাও চাই অবাধ নির্বাচন। আপনারা চান অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন, আমরাও চাই। আপনারা নির্বাচনে আসলেই তো অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন হবে।

ওয়ার্কার্স পার্টি সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি যদি ঐক্যবদ্ধ হয় বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়া তো দূরের কথা বাংলাদেশ থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। তারা নাকি সংবিধান পরিবর্তনের জন্য কমিশন গঠন করবে। অসাংবিধানিক উপায়ে সংবিধান পরিবর্তনের সুযোগ নেই।

জাসদ সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার বলেন, বিএনপি দেশে অসাংবিধানিক ধারা তৈরি করতে চায়, নির্বাচন পদ্ধতিকে অস্বাভাবিক করতে চায়। কোনো আপস ফর্মুলা নয়, অসাংবিধানিক দাবি মেনে নেওয়া নয়। বিএনপি-জামায়াতকে রুখে দাঁড়ানোর জন্য ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, শেখ হাসিনা দেশকে সমৃৃদ্ধ করার লক্ষ্যে ২৪ ঘণ্টা পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। দেশের উন্নয়ন ধরে রাখতে হলে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমুর সভাপতিত্বে ও আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাসের পরিচালনায় সমাবেশে জাতীয় পার্টি (জেপি) চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু মঞ্চে থাকলেও বক্তৃতা করেননি। এতে আরও বক্তব্য রাখেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, তরিকত ফেডারেশন চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, গণ আজাদী লীগের সভাপতি এস কে শিকদার, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, গণতন্ত্র পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফি প্রমুখ।

 

সর্বশেষ খবর