শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

বাংলাদেশজুড়ে উৎসব

প্রতিদিন ডেস্ক

বাংলাদেশজুড়ে উৎসব

বাংলাদেশে উৎসবের আনন্দ : তিন যুগ পর আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ে বাংলাদেশে সমর্থকদের মধ্যে উৎসবের আনন্দ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। ছবি : রোহেত রাজীব

দীর্ঘ ৩৬ বছর পর ফিফা বিশ্বকাপের শিরোপা ঘরে তুলেছে আর্জেন্টিনা। ১৯৮৬ সালে ম্যারাডানো দিয়েছিলেন বিশ্বকাপ উপহার। এরপর ২০২২ সালে শিরোপা উপহার দিলেন আরেক মহাতারকা লিওনেল মেসি। কাতারে রবিবার রাতে ফুটবল বিশ্বকাপ ফাইনালে আর্জেন্টিনার জয়ের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ মেতে ওঠে উৎসবের আনন্দে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সমর্থকরা বাঁধভাঙা উল্লাসে ফেটে পড়েন। আর্জেন্টিনার তারকা রেকর্ডের বরপুত্র লিওনেল মেসির ছবি নিয়ে তারা আনন্দ মিছিল বের করেন। নেচে-গেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। ঢাকঢোল পিটিয়ে ও বাজনা বাজিয়ে শোভাযাত্রাসহ নানান আয়োজন চলতে থাকে মধ্যরাত থেকে। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

ঢাবি : কাতার বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা ঘিরে রবিবার সারা দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে ফুটবলপ্রেমীদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। ক্যাম্পাস ফুটবলপ্রেমীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়। বড় পর্দায় খেলা দেখতে এক ঘণ্টা আগেই হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের মাঠ এবং টিএসসি প্রাঙ্গণ কানায় কানায় ভরে যায়। বিকাল থেকে আর্জেন্টিনার সমর্থকরা জড়ো হতে থাকেন। অনেকেই আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে ও পতাকা নিয়ে মিছিলে অংশ নেন। জার্সি পরে দলবেঁধে সমর্থকদের ফটোসেশন আর আড্ডা দিতে দেখা যায়। টিএসসি ও মুহসীন হলের মাঠ ছাড়াও প্রতি হলে এবং ডাস চত্বরে বড় পর্দায় খেলা দেখানো হয়।

চট্টগ্রাম : বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা ঘিরে উন্মাদনায় মাতে চট্টগ্রাম। বাদ্যযন্ত্র ও আতশবাজি ফাটানোয় নগরীর অলিগলি উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়। আর্জেন্টিনা আর মেসির হাজার হাজার ভক্ত নগরীর বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত বড় পর্দার সামনে জড়ো হন। খেলা শুরুর আগে বাজি ফুটিয়ে তারা আগাম উৎসব উদযাপন করেন। অধিকাংশ দর্শকের গায়ে ছিল আর্জেন্টিনার জার্সি। ২২ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি থেকে মেসির শটে গোলের সঙ্গে সঙ্গে পুরো নগরী বাঁধভাঙা উল্লাসে মেতে ওঠে। নগরীর চকবাজার প্যারেড মাঠে সবচেয়ে বড় পর্দায় খেলা দেখার আয়োজন করা হয়। এ ছাড়া জামাল খান মোড়, হালিশহর বিডিআর মাঠ, নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটিসহ বিভিন্ন এলাকার খোলা জায়গায় বড় পর্দায় খেলা দেখার আয়োজন করা হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের খোলা মাঠেও খেলা দেখানো হয়। খেলা শুরু হওয়ার আগেই মাঠ কানায় কানায় ভরে ওঠে।

চবি : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বড় পর্দায় বিশ্বকাপ খেলা দেখানো হয়। শিক্ষার্থীরা ছাড়াও বাইরের দর্শকরাও সেখানে ভিড় জমান। পর্দার সামনে বসার জায়গা না পেয়ে অনেকে দাঁড়িয়ে খেলা দেখেন।

রাজশাহী : ওইদিন সন্ধ্যার আগে নগরীর মহল্লায় মহল্লায় আর্জেন্টিনার বড় পতাকা নিয়ে ঢাকঢোল বাদ্য নিয়ে সমর্থকরা মিছিল করেন। নগরীর মোড়ে মোড়ে বড় পর্দায় খেলা দেখার ব্যবস্থা করা হয়। সারা দিনই নগরীর বিভিন্ন বিপণি ও দোকানে আর্জেন্টিনার পতাকা বিক্রি হয়। ফাইনাল খেলা উদযাপনে রাতে প্যান্ডেল করে বিশেষ খাবার ও ভোজের আয়োজন করা হয়।

রাবি : আর্জেন্টিনাকে শুভকামনা জানিয়ে ক্যাম্পাসে আনন্দ শোভাযাত্রা করে আর্জেন্টিনা ফ্যানস ক্লাব।

বরিশাল : নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বড় পর্দায় খেলা দেখানো হয়। একই সঙ্গে পিকনিকের আয়োজন করা হয়। বিশেষ করে বিভিন্ন সংগঠন ও পেশাজীবী নিজস্ব কার্যালয়ে খেলা দেখার আয়োজন করে। পাশাপাশি খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, বি এম কলেজ, মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন কলেজের হলে খেলা দেখার নানা আয়োজন করা হয়।

খুলনা : নগরীর মোড়ে মোড়ে ছোট পর্দা ও প্রজেক্টে খেলা দেখানো হয়। শহীদ হাদিস পার্কে সবচেয়ে বড় পর্দায় খেলা দেখার আয়োজন করা হয়। সন্ধ্যা ৭টার পরপরই সেখানে দর্শক আসতে শুরু করেন। খুলনা জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলামের উদ্যোগে এ আয়োজন করা হয়। দর্শকদের জন্য মোরগ-পোলাওর ব্যবস্থা করা হয়। কুয়েট, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়েও খেলা দেখার ব্যাপক আয়োজন করা হয়। কুয়েট রোড, খানজাহান আলী থানা এলাকা, দৌলতপুর দেয়ানা এলাকা, খালিশপুর, বয়রা, বৈকালীসহ নানান জায়গায় ছোট-বড় স্ক্রিনে ফুটবল ফাইনাল খেলার আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি চলে ভোজন।

সিলেট : বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার খালি স্থানে ও রেস্টুরেন্টে বড় পর্দায় খেলা দেখার আয়োজন করেন ফুটবলপ্রেমীরা। আর্জেন্টিনার জয়ের পর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে আনন্দ-উল্লাস।

পাবনা : পাবনায় আর্জেন্টিনা সমর্থকরা ঢাকঢোল ও বাজনা বাজিয়ে এবং হাতি নিয়ে শহরে বিশাল শোভাযাত্রা বের করেন। শোভাযাত্রায় ১২ বছরের শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে যাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ সমর্থকও বাদ যাননি।

কুমিল্লা : নান্দনিক ফুটবলে আর্জেন্টিনার জয়ে উৎসবের নগরীতে রূপ নেয় কুমিল্লা। সেই উৎসবের রং ছড়িয়ে পড়ে লালমাই পাহাড়ের কোলে অবস্থিত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়েও। রাতভর আনন্দ-উল্লাসে মাতিয়ে রাখেন মেসিভক্তরা। ‘মেসি মেসি’ স্লোগানে প্রকম্পিত হয় রাজপথসহ সবুজে ঘেরা লালমাটির ক্যাম্পাস। কেউ ড্রোন উড়িয়েছেন, কেউ আতশবাজি ফাটিয়েছেন। ছিল ঢাকঢোলের বাদ্য ও ভুভুজেলা। আর্জেন্টিনার পতাকা উড়িয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে অবিস্মরণীয় মুহূর্তকে স্মৃতির পাতায় লিখে রাখেন ফুটবলপ্রেমীরা।

ময়মনসিংহ : নগরজুড়ে আর্জেন্টিনা ভক্তদের জয়ের উন্মাদনা দেখেছেন জেলাবাসী। নগরীর পয়েন্টে বড় পর্দায় কয়েক শ দর্শক উপভোগ করেছেন আর্জেন্টিনা-ফ্রান্স ফাইনাল খেলা। জয়লাভের সঙ্গে সঙ্গে নগরীর অলিগলিতে আনন্দ-উল্লাসে ফেটে পড়েন শত শত সমর্থক।

বান্দরবান : পার্বত্য জেলা বান্দরবানেও আনন্দ মিছিল হয়েছে। মেসির দল টাইব্রেকারে শিরোপা লাভের পর রাতে হাজারো দর্শক ও মেসিভক্ত বান্দরবান শহরে নেচে-গেয়ে আনন্দ মিছিল করেন। খোলা জিপ ও মোটরসাইকেল নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েন হাজারো মেসিভক্ত।

মৌলভীবাজার : কাতার বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনালে আর্জেন্টিনার শিরোপা জয়ে বিজয় উৎসব করেছেন আর্জেন্টিনার মৌলভীবাজারের সমর্থকরা। গতকাল বিকালেও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়। পরে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পৌর মেয়র চত্বরে শোভাযাত্রাটি এসে শেষ হয়। মোটরসাইকেল নিয়ে অর্ধসহস্রাধিক সমর্থক শোভাযাত্রায় অংশ নেন। এর আগের রাতে ফাইনাল ম্যাচ জেতার পরপরই মৌলভীবাজার শহরের চৌমোহনা চত্বরে দলে দলে জড়ো হন মেসিভক্তরা। মধ্যরাতের মৌলভীবাজারকে উত্তাল করে দেন তারা। সারা পৌরশহরের পথঘাট অলিগলি ছিল তাদের দখলে।

দিনাজপুর : বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনালে আর্জেন্টিনা বিজয়ের পর দিনাজপুর শহরের বিভিন্ন সড়কে আনন্দ মিছিল বের হয়। রবিবার দিবাগত রাত ১২টায় আনন্দ মিছিলের কারণে কিছুক্ষন যানবাহন বন্ধ হয়ে গেলে পুলিশ এসে তা নিয়ন্ত্রণে আনে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর