শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
নিবন্ধন মাত্র ২১ হাজার

করোনা টিকার চতুর্থ ডোজে সাড়া নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনা টিকার চতুর্থ ডোজে সাড়া নেই

ঢাকা মেডিকেলে চলছে করোনার চতুর্থ ডোজ টিকা দেওয়া -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ফের বাড়ছে করোনার প্রভাব। বাংলাদেশে সংক্রমণ প্রতিরোধে গত ২০ ডিসেম্বর দেশব্যাপী একযোগে শুরু হয়েছে টিকার চতুর্থ ডোজ কার্যক্রম। তবে টিকা গ্রহণে মানুষের মধ্যে আগের মতো আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। প্রথম দিনে চতুর্থ ডোজ নেন মাত্র ৫ হাজার ৫৩৯ জন। দ্বিতীয় দিনে সেই সংখ্যা বেড়ে ১৫ হাজার ৪৬৮ জনে দাঁড়ালেও পূর্ববর্তী ডোজগুলোর তুলনায় তা নগণ্য। গতকাল পর্যন্ত মোট চতুর্থ ডোজ টিকা নিয়েছেন ২১ হাজার ৪৮৩ জন। এর মধ্যে আগে পরীক্ষামূলকভাবে নিয়েছিলেন ৪৭৬ জন।

এদিকে গত বছর জানুয়ারিতে দেশে করোনার টিকা দেওয়া শুরু হলে মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ে। দুপুর ১টায় লাইনে দাঁড়িয়ে বিকাল ৪টায় টিকা গ্রহণের ঘটনাও আছে। এক দিনে ৩ লক্ষাধিক প্রথম ডোজ, ৫ লক্ষাধিক দ্বিতীয় ডোজ ও দেড় লক্ষাধিক মানুষের বুস্টার (তৃতীয়) ডোজ নেওয়ার রেকর্ডও রয়েছে। ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি দেশে প্রথমবারের মতো করোনা টিকার প্রয়োগ শুরু হয়। একই বছরের এপ্রিলে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হয়। ওই বছরের শেষ দিকে বিভিন্ন হাসপাতালে পরীক্ষামূলক বুস্টার ডোজ প্রয়োগ শুরু হলেও চলতি বছরের ১৯ জুলাই সারা দেশে একযোগে বুস্টার/তৃতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হয়। ওই এক দিনেই ৫৬ লাখের বেশি মানুষ বুস্টার ডোজ নেন। এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫ কোটি মানুষ প্রথম ডোজ টিকার আওতায় এসেছেন। দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন সাড়ে ১২ কোটির বেশি মানুষ। বুস্টার ডোজ (তৃতীয়) নিয়েছেন ৬ কোটি ৪৭ লাখের বেশি মানুষ। চতুর্থ ডোজ নিয়েছেন ২১ হাজার ৪৮৩ জন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, প্রথম দিন চতুর্থ ডোজ নিয়েছেন ৩ হাজার ২১৫ পুরুষ ও ২ হাজার ৩২৪ নারী। এর মধ্যে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পেয়েছেন ৩৭ জন, ফাইজারের টিকা পেয়েছেন ৫ হাজার ৪৮৪ জন, সিনোফার্মের টিকা পেয়েছেন ১৮ জন। গতকাল চতুর্থ ডোজ নিয়েছেন ১০ হাজার ৯০৪ পুরুষ ও ৪ হাজার ৫৬৪ নারী।

চট্টগ্রাম থেকে আমাদের প্রতিবেদক রেজা মুজাম্মেল জানান, করোনাভাইরাসের প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণের জন্য চট্টগ্রামে মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়লেও তৃতীয় ডোজে কিছুটা ভাটা পড়ে। চতুর্থ ডোজে সাড়া আরও কমে গেছে। গত দুই দিন টিকা নিতে মানুষের ভিড় দেখা যায়নি। সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০ ডিসেম্বর প্রথম দিন চট্টগ্রাম নগর ও ১৫ উপজেলায় মোট টিকা গ্রহণ করেছেন ৩৭০ জন। গতকাল চট্টগ্রামে মোট টিকা গ্রহণ করেছেন ২৭৪ জন। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, উপজেলা পর্যায়ে চতুর্থ ডোজ শুরু হয়েছে। তবে প্রথম প্রথম একটু কম আসছে। টিকার প্রতি অনেকের আগ্রহ কমে গেছে। আশা করছি, কার্যক্রম চলমান থাকায় আস্তে আস্তে সবাই টিকা গ্রহণের জন্য আসবে। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, নানা কারণে হয়তো চতুর্থ ডোজের আগ্রহ কম। এর মধ্যে আছে তৃতীয় ডোজ গ্রহীতার সংখ্যা কম হওয়া, করোনা নিয়ে ভীতি কমে যাওয়া এবং টিকায় আগ্রহ না থাকা। তাই তৃতীয় ডোজটি সবার আগে সম্পন্ন করা দরকার।   

স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, তৃতীয় ডোজ প্রাপ্তির চার মাস অতিবাহিত হয়েছে এমন ব্যক্তিদের চতুর্থ ডোজ প্রদান করা হচ্ছে। চতুর্থ ডোজে ফাইজারের টিকা দেওয়া হচ্ছে। যেখানে ফাইজার থাকবে না সেখানে অন্য টিকা দেওয়া হবে। টিকা প্রদানে ৬০ বছর এবং তদূর্ধ্ব বয়সী জনগোষ্ঠী অগ্রাধিকার পাবে। এ ছাড়া দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্ত ১৮ বছর এবং তদূর্ধ্ব বয়সী জনগোষ্ঠী, স্বল্প রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন জনগোষ্ঠী, অন্তঃসত্ত্বা নারী, দুগ্ধদানকারী মা এবং সম্মুখসারির যোদ্ধাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর