মঙ্গলবার, ৩ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি

ঠাঁই মেলেনি সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের

তারানা হালিমকে নিয়ে অনেকের বিস্ময়

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঠাঁই মেলেনি সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের

আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের আগে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পাওয়া নিয়ে জোর আলোচনায় ছিলেন ছাত্রলীগের সাবেক বেশ কিছু নেতা। জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে তারা দলীয় সভানেত্রীর কার্যালয়সহ দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। আশায় ছিলেন, এবার কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পাবেন। কিন্তু ঠাঁই মেলেনি তাদের কারও।

বলা হচ্ছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কমিটিতে বড় কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। নানা অভিযোগে অভিযুক্ত সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে রাখা এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের নাম দেখে অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ‘অভিজ্ঞ’ নেতাদের নিয়েই ভোট মোকাবিলা করতে চান আওয়ামী লীগ     সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে কারণে এবারের কমিটিতে বড় কোনো পরিবর্তন আনেননি তিনি। ২৪ ডিসেম্বর জাতীয় সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এমন ইঙ্গিত দেন। বর্তমান কমিটিতে যেসব নেতা দায়িত্ব পালন করছেন, তারা বেশ অভিজ্ঞ। দু-তিনজনকে বাদ দেওয়া হয়েছে নতুনদের অন্তর্ভুক্তির জন্য। আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো বলছে, ছাত্রলীগ হলো আওয়ামী লীগের নেতা তৈরির আঁতুড়ঘর। ছাত্রলীগকে নেতৃত্ব দেওয়া সাবেক ছাত্রলীগ নেতারাই একটা সময় দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আসেন। এটাই এতদিন ধরে হয়ে আসছে। ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বে থাকা বর্তমান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ছাড়াও তিনজন প্রেসিডিয়াম সদস্য রয়েছেন। এ ছাড়া ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বে ছিলেন এমন নেতা কেন্দ্রীয় কমিটিতে নেই। তবে অনেকেই ছাত্রলীগের বিভিন্ন হল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় কমিটিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। দলের শীর্ষ নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা যাকে যোগ্য মনে করেছেন, তাকেই দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ঠাঁই দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে অতীতে দলের জন্য অবদান, পরিবারের অবদান, এলাকাসহ নানা বিষয় মাথায় রেখেই তিনি নেতৃত্ব নির্বাচন করেন। আর যারা ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতা ছিলেন তারা তো এমনিতেই দেশব্যাপী পরিচিত। তারাও দলের জন্য কাজ করছেন। এবার দলে ঠাঁই হয়নি বলে আগামীতে যে হবে না এমনও নয়। যেমন ২০০৯ সালের সম্মেলনে আলোচনায় ছিলেন না এমন নেতারাও কেন্দ্রীয় কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে এসেছিলেন। আগামীতেও সেরকম চমক থাকতে পারে। গত রবিবার রাতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের পূর্ণাঙ্গ কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন। এতে দেখা যায়, স্বচ্ছ রাজনীতি করেও ছিটকে পড়েছেন কেউ কেউ। চরম নিষ্ক্রিয়দেরও বহাল রাখা হয়েছে কমিটিতে। আবার নানা অভিযোগে অভিযুক্ত এক সম্পাদকমণ্ডলীর নেতা কেন্দ্রীয় সদস্য হিসেবে রয়েছেন। সাবেক প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমকে দেখেও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন অনেকে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংরক্ষিত আসনের এমপি হন অভিনেত্রী, আইনজীবী তারানা হালিম। পরে তাকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বেশ কয়েকজনের মন্ত্রীর দফতর বদল করা হয়। সে সময় তারানা হালিমেরও দফতরও বদল হয়। এ নিয়ে চরম মন খারাপ করেছিলেন সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। প্রথম কয়েকদিন তিনি বিশেষ কারণে অফিস করেননি। সে সময় মন্ত্রণালয় রদবদল নিয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেছিলেন, ‘আমি অনেক কাজ শেষ করে এসেছি। এখন যিনি এসেছেন, তিনি সেগুলো উদ্বোধন করলেই হবে। তার প্রতি আমার শুভ কামনা থাকল। এত কাজ করে এসেছি, অবশ্যই এগুলোর উদ্বোধন হতে না দেখাটা খারাপ লাগবে।’

 

সর্বশেষ খবর