শুক্রবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

ইভিএমের আশায় ইসি

সিসি ক্যামেরার ভবিষ্যৎ বাজেটের ওপর

নিজস্ব প্রতিবেদক

ইভিএমের আশায় ইসি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে মধ্য জানুয়ারির মধ্যে ইভিএম প্রকল্প পাস না হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দেড় শ আসনে ইভিএমে ভোট গ্রহণ সম্ভবপর হবে না বলে ইসির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল। তবে ১৭ জানুয়ারিতে মঙ্গলবার একনেক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানান, এই প্রকল্পটি সভায় আসেনি। তিনি বলেন, মঙ্গলবারের বৈঠকে ইভিএম প্রকল্পটি তালিকায় ছিল না। কাজেই এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। সেক্ষেত্রে প্রকল্পটির বর্তমান হাল কী- জানতে চাইলে মান্নান বলেন, এটি ‘যথাযথভাবে প্রক্রিয়াধীন’ আছে।

এদিকে নির্বাচন কমিশন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের আশা এখনো ছাড়েনি। চলতি মাসের মধ্যে ইভিএম প্রকল্পের অগ্রগতি হবে বলে আশা করছে নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, প্রকল্প অনুমোদন সাপেক্ষে সর্বোচ্চ দেড় শ আসনে ইভিএমে ভোট করার পরিকল্পনার কথা জানানো হয়েছিল। চলতি মাসের মধ্যে পরিকল্পনা কমিশনের এ নিয়ে অগ্রগতি আশা করেন তারা। আগামী নির্বাচন কমিশন সভায় কত আসনে ইভিএমে ভোট করা যাবে তা নিয়ে আলোচনা করা সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে জানান এ নির্বাচন কমিশনার। গতকাল আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি। মো. আলমগীর বলেন, ‘দেড় শ আসনে ইভিএম হলে দুই লাখ লাগবে। এর কম এক লাখও হতে পারে। প্ল্যানিং কমিশন থেকে চূড়ান্ত কিছু পায়নি। ইয়েস বা নো কিছুই বলেনি। ... যেহেতু প্ল্যানিং কমিশনে আছে, তারা চূড়ান্ত কিছু বললে আমরা বলতে পারব। এ মাসে প্ল্যানিং কমিশন যদি বলে আমরা এত দিতে পারব, তখন আমরা কত আসনে বলতে পারব।’ গত ১৯ অক্টোবর প্রায় দুই লাখ ইভিএম কেনা ও রক্ষণাবেক্ষণসহ আনুষঙ্গিক ব্যয়ের জন্য ৮ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প তৈরি করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠায় ইসি। এক দফা ফেরত আসার পর সংস্কার করে পুনরায়ও পাঠানো হয় প্রস্তাব। কিন্তু কোনো অগ্রগতি না দেখে নভেম্বরে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছিলেন, মধ্য জানুয়ারির মধ্যে প্রকল্পটি পাস না হলে পরবর্তী কাজগুলো করা সম্ভব হবে না। সবশেষ একনেক সভা মঙ্গলবার প্রকল্পটি উত্থাপিত না হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দুই দিন পর এই নির্বাচন কমিশনার ‘মধ্য জানুয়ারির’ সময়সীমার বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন। গতকাল মো. আলমগীর জানান, এটা ইভিএম প্রকল্প অনুমোদন পাওয়া সাপেক্ষে সর্বোচ্চ দেড় শ আসনে ইভিএমে ভোটের পরিকল্পনার কথা বলা রয়েছে। বলার সঙ্গে সঙ্গে তো করা যায় না। নতুন ইভিএমের ক্ষেত্রে প্রকিউরমেন্টে, সফটওয়্যার ইন্সটলেশন, কোয়ালিটি চেকিং, ডেলিভারি, ট্রেনিং, ভোটার এডুকেশনের বিষয় রয়েছে। সবকিছু মিলিয়েই আমরা বলেছিলাম-মধ্য জানুয়ারির মধ্যে না হলে আমাদের পক্ষে দেড় শ আসনে করা সম্ভব না। কথাটি বলেছি সর্বোচ্চ। আমাদের হাতে যে ইভিএম আছে তা নিয়ে ৭০-৮০টি করতে পারব। 

উপনির্বাচনে যে কারণে সিসি ক্যামেরা থাকছে না : আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ছয় আসনে উপনির্বাচন রয়েছে। এসব ভোটে সিসি ক্যামেরা থাকছে না। অর্থ সংকটের কারণে তা করতে পারছে না ইসি। তবে জাতীয় নির্বাচনে সিসিক্যামেরা রাখা হবে কি না সে বিষয়ে তখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। তিনি বলেন, কিছু নির্বাচনে সিসিক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছে, ভালো সুফল পেয়েছি বিভিন্ন নির্বাচনে। এটা এক্সিটিং (বাজেটের) টাকার মধ্যে ব্যয় হয়েছে। এর জন্য একস্ট্রা বাজেট সরকারের কাছে চাইনি আমরা। আমাদের চলতি অর্থবছরের যে টাকা রয়েছে সে টাকা দিয়ে পাঁচটি যে উপনির্বাচন হবে, সেখানে সিসি টিভি ব্যবহারের জন্য যে টাকা দরকার হবে সে টাকা তো নেই। এ আর্থিক অবস্থার মধ্যে সরকারের কাছে বাজেট চাওয়াও যুক্তিযুক্ত না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সুষ্ঠু নির্বাচনে থাকবে সব ব্যবস্থা- ইসি রাশেদা সুলতানা :

নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেছেন, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানাব, তারা যেন নিশঙ্কচিত্তে ভোটে কেন্দ্রে আসেন এবং উসবমুখর পরিবেশে নিজের পচ্ছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে যান। গতকাল বিকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কেন্দ্রে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ ও ৩ আসনের উপনির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসির যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের রির্টানিং কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন, পুলিশ সুপার এ এইচ এম আবদুর রকিব, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোতাওয়াক্কিল রহমান।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর