মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার পেয়েছে গতি

চার মাসে ২ লাখ ৪০ হাজার চাহিদাপত্র অনুমোদন, আগামী দুই মাসের সব ফ্লাইট বুকড তবু চলছে ষড়যন্ত্র

জুলকার নাইন

সব প্রতিবন্ধকতা দূর করে গতি পেয়েছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে। নতুন চুক্তির আওতায় এরই মধ্যে গত চার মাসে ২ লাখ ৪০ হাজার চাহিদাপত্র অনুমোদন পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রতি মাসেই প্রায় ২০ হাজার কর্মী যাচ্ছেন মালয়েশিয়ায়। আগামী দুই মাসে মালয়েশিয়া যাওয়ার সব ফ্লাইট বুকড হয়ে গেছে এই কর্মীদের মাধ্যমে। এখন নেপালের পরই বাংলাদেশের কর্মীদের দখলে রয়েছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। এ গতি অব্যাহত থাকলে শিগগিরই নেপালকে অতিক্রম করে এক নম্বরে চলে আসবে বাংলাদেশ। এমন পরিস্থিতিতেও মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরকে কেন্দ্র করে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেই একটি পক্ষ। তাদের ষড়যন্ত্র সফল হলে আবার থমকে যেতে পারে বাংলাদেশের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় এই শ্রমবাজার।

শ্রমবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দুই দেশের সরকারের আন্তরিক চেষ্টায় গত বছরের ৮ আগস্ট থেকে মালয়েশিয়াতে কর্মী যাওয়া শুরু হয়। প্রতিদিন বেশ কয়েকটি ফ্লাইটে করে কর্মী যাচ্ছে মালয়েশিয়া। এই সময়ের মধ্যে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত ৫৫ হাজারের বেশি কর্মী মালয়েশিয়া গেছে। এ সময়ে ১ লাখ ২০ হাজার কলিং ভিসাও ইস্যু হয়েছে। এই সময়ে ই-ভিসার আবেদন হয়েছে ১ লাখ ১১ হাজার ৯৯৬টি এবং ই-ভিসা ইস্যু হয়েছে ১ লাখ ১২০টি। বিএমইটি ছাড়পত্র হয়েছে ৬৯ হাজার ৩১০টি। চাইনিজ নিউ ইয়ারের ছুটির পর এখন আরও বেশি গতিতে চলছে পুরো কার্যক্রম।

এদিকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন ইসমাইল ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা সফর করবেন। ৩ ফেব্রুয়ারি তিনি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করবেন। এই বৈঠকে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে আরেক দফায় আলোচনা হবে। এ বৈঠকের আগে আগে নতুন করে শ্রমবাজার নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। বায়রার একটি পক্ষ থেকে বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকদের নিজের পক্ষে রাখতে এবং মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার একচেটিয়া দখলে নিতে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর নাম ব্যবহার করা হচ্ছে। একাধিক আলোচনা সভা ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার শ্রমবাজার ইস্যুতে বৈঠকের রেফারেন্স দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি রাজধানীর অদূরে নবাবগঞ্জ উপজেলায় বায়রা সদস্যদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে অনলাইনে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, ওই ভিডিওতে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিতে দেখা গেছে। একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির এই ধরনের বিভ্রান্তিকর বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী। পরে বায়রার পক্ষ থেকে সংগঠনের মহাসচিব মন্ত্রীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে সমঝোতা স্মারক সই করে মালয়েশিয়া। এই গুটি কয়েক ব্যবসায়ী নিজেদের ব্যক্তি স্বার্থে শুরু থেকেই এই কার্যক্রমের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে আসছিল। মালয়েশিয়ার নিয়োগদাতাদের চাহিদা পূরণে বাংলাদেশ থেকে কর্মী পাঠানোর কার্যক্রম ব্যর্থ করতে এবং দুই দেশের সরকারের ভাবমূর্তি বিতর্কিত করতে নানা অপপ্রচার ও মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে চলছে ব্যবসায়ীদের এই অংশটি। এই ধরনের প্রতিবন্ধকতার কারণেই শ্রমবাজারে কর্মী পাঠানোতে দীর্ঘসূত্রিতা তৈরি হয়।

 

সর্বশেষ খবর