বুধবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
কলকাতায় মামলা

আদানির সেই বিদ্যুৎ সরবরাহ অনিশ্চিত

কলকাতা প্রতিনিধি

বাংলাদেশে আদানি গোষ্ঠীর বিদ্যুৎ রপ্তানি প্রকল্পের বিরোধিতা করে কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের ৩০ ফলচাষি ও অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রোটেকশন অব ডেমোক্রেটিক রাইটস (এপিডিআর) নামে একটি সংস্থা। এতে বাংলাদেশে আদানির বিদ্যুৎ রপ্তানিতে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। গতকাল মামলাটি গ্রহণ করেন কলকাতা হাই কোর্ট। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি এ মামলার শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা জেলায় আদানি গোষ্ঠীর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ওপর দিয়ে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুতের তার যাচ্ছে বাংলাদেশে। কিন্তু জেলার যে অংশের ওপর দিয়ে আদানির এ বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন যাচ্ছে, সে জায়গায় (ফারাক্কা) প্রচুর আম ও লিচুর বাগান থাকায় তাতে প্রবল আপত্তি জানান সেখানকার ফল চাষিরা। গত বছরের জুলাইয়ে এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন গ্রামবাসী। আহত হন একাধিক গ্রামবাসী ও পুলিশ। গ্রামবাসীদের অভিযোগ ছিল, পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ না দিয়ে জোরপূর্বক আম-লিচু বাগানের ওপর দিয়ে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুতের লাইন বাংলাদেশে নিয়ে যাচ্ছে আদানি।

গ্রামবাসীর দাবি, এলাকাটি জনবসতিপূর্ণ। তাছাড়া প্রচুর আমগাছ, লিচুগাছ রয়েছে। ওই আম-লিচুর ফলনের ওপরই তারা নির্ভরশীল। কিন্তু ওই ফসলি জমির ওপর দিয়ে বিদ্যুতের তার গেলে ফলনের ওপর প্রভাব পড়বে।

গত জুলাইয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন লুৎফর রহমান নামে এক ফলচাষি। সে সময় বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের বেঞ্চ মামলা শোনার পর আদানি গোষ্ঠীর জমি কেনা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে না চাইলেও রাজ্য সরকারের সহযোগিতায় আদানি গোষ্ঠী যেহেতু বিদ্যুতের খুঁটি পুঁতেছে, তাই তাদের আদানির প্রকল্পের নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দেন রাজ্য সরকারকে। একই সঙ্গে মুর্শিদাবাদের জেলাশাসককে ফারাক্কা এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতেও নির্দেশ দেন বিচারপতি। আদালতের নির্দেশ ছিল, কৃষকদের জমির বিনিময়ে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার ক্ষেত্রে মুর্শিদাবাদের জেলাশাসকের কাছে আবেদন করতে হবে। তিনিই ক্ষতিপূরণের বিষয়টি বিবেচনা করবেন।

দীর্ঘ ছয় মাসে রাজ্য সরকারের নিরাপত্তায় আদানির সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ হলেও ক্ষতিপূরণ মেলেনি চাষিদের। চাষবাস হারিয়ে কার্যত বিপাকে পড়েছেন তারা। এমন অবস্থায় ফের আদানি গোষ্ঠী ও রাজ্য সরকারকে অভিযুক্ত করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন সেখানকার ক্ষতিগ্রস্ত ৩০ ফলচাষি ও এপিডিআর। যদিও জমি জটের অভিযোগ তুলে এর আগেও সরব হয়েছিল এপিডিআর।

তাদের পক্ষে কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন সিনিয়র আইনজীবী ঝুমা সেন। আদালত এদিন এ মামলাটি গ্রহণও করেন। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি এ মামলার প্রথম শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত। ওইদিন কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি হবে।

সর্বশেষ খবর