শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

তৃণমূল বিএনপি পাচ্ছে নিবন্ধন, প্রতীক সোনালি আঁশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পাচ্ছে তৃণমূল বিএনপি। সাবেক বিএনপি নেতা নাজমুল হুদার নেতৃত্বাধীন তৃণমূল বিএনপিকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্তমান নির্বাচন কমিশন। আদালতের আদেশের পর এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছে ইসি। এদিকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে শ খানেক দল নিবন্ধনের আবেদন করেছে। এগুলো যাচাই- বাছাই প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, ‘অ্যাপিলেড ডিভিশন থেকে তাদের (তৃণমূল বিএনপি) বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার জন্য। যেহেতু সর্বোচ্চ আদালত থেকে রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার জন্য আমাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সেহেতু আমরা দিতে বাধ্য। এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’ সর্বোচ্চ আদালত রায়ের প্রেক্ষাপটে যত দ্রুত সম্ভব দলটিকে নিবন্ধন দেওয়া হবে বলে জানান এই কমিশনার। গতকাল নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব দলটিকে নিবন্ধন দেওয়া হবে। দেরি করার তো সুযোগ নেই। আদালত নির্দেশনা দেওয়ার পর তো আর মাঠে খতিয়ে দেখার সুযোগ নেই। কেননা, আদালতের নির্দেশ আমরা পালন করতে বাধ্য। আদালত নিশ্চয় সেগুলো প্রমাণ পেয়েছেন।’ তিনি জানান, আদালত তাদের প্রতীকও নির্ধারণ করে দিয়েছেন। দলটির প্রতীক হবে সোনালি আঁশ। নিবন্ধিত দল হিসেবে গেজেট প্রকাশের পরই তা ইসির তালিকাভুক্ত হবে।

বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হয়ে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ), বাংলাদেশ ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স (বিএনএ) এবং বাংলাদেশ মানবাধিকার পার্টি (বিএমপি) নামে তিনটি দল গড়েছিলেন নাজমুল হুদা। এই হিসেবে তৃণমূল বিএনপি তার চতুর্থ দল। তৃণমূল বিএনপির নিবন্ধনের আবেদন প্রত্যাখ্যান করে নির্বাচন কমিশন ২০১৮ সালে একটি চিঠি দেয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধনের আবেদন না করা, সরকার নির্ধারিত ফির চালান জমা না দেওয়া ও নিবন্ধন দেওয়ার মতো তথ্য না থাকার কারণ দেখানো হয় সেখানে। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে কে এম নূরুল হুদা কমিশনের সময় আবেদন করেছিল দলটি। তখন নিবন্ধন মেলেনি। তবে আদালতের দ্বারস্থ হন নাজমুল হুদা। এখন আদালতের আদেশে নিবন্ধন দিতে হচ্ছে দলটিকে। গণসংহতি ও ইনসানিয়াত বিপ্লব নামে দুটি দলের বিষয়ে আদালতের সর্বোচ্চ আদেশ রয়েছে কি না তা যাচাই-বাছাই করে দেখতে হবে বলে জানান তিনি।

নতুন দল নিয়ে যাচাই-বাছাই চলছে : দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে শ খানেক দল নিবন্ধনের আবেদন করেছে। এগুলো যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। নতুন দল নিবন্ধনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আলমগীর জানান, ৯৩টি নতুন দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছিল। পাঁচটি দল নির্ধারিত প্রক্রিয়ায় আবেদন না করায় তাদের আবেদন বাতিল করা হয়েছে। দুটি দল আবেদন উইথড্র করেছে। ‘প্রাথমিক যাচাইয়ে আবদনপত্রে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে বলে অনেক দল উল্লেখ করেছে তা জমা দেয়নি। আমরা সেগুলো দেওয়ার জন্য বলেছি। তারা দিয়েছে। আগামী রবিবার যাচাই কমিটি ফের সেগুলো নিয়ে বিকাল ৩টায় বসবে। এরপর মাঠপর্যায়ে দলগুলো কার্যালয়, কমিটি আছে কি না, এসব খতিয়ে দেখা হবে।’ বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত দল ৩৯টি।

বিদ্যমান সীমানা পুনর্নির্ধারণ : বিদ্যমান সীমানাতেই আগামী সংসদ নির্বাচন করার প্রস্তাবের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন মো. আলমগীর। সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের বিষয়ে জানান, গত পাঁচ বছর স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও জনগণ বর্তমান সীমানা নিয়ে কাজ করেছেন। যেহেতু ২০১৮ সালে কমিশন শুনানি করে সিদ্ধান্ত দিয়েছে, তাই তাদের যদি কোথাও সমস্যা থাকে, তাহলে তাদের বক্তব্যের মাধ্যমেই জানতে পারব। কাজেই ভাবলাম যেটা আছে, সেটা থাকুক। সেটার ওপর আবেদন আহ্বান করলে তখন দেখা যাবে। তাদের যদি আপত্তি না থাকে তাহলে তো আমাদের কিছু করার নেই। এজন্য আমরা কোথাও হাত দিচ্ছি না। যেটা এখন আছে সেটাই খসড়া হিসেবে প্রকাশ করব।’ তিনি জানান, নীতিমালার পাশাপাশি কারও দাবি-আপত্তি থাকলে দুটিই আমলে নেওয়া হবে। এরপর শুনানিতে যেটা যৌক্তিক হবে সেটাই সিদ্ধান্ত হবে। এজন্য আমরা কোনো চাপে নেই। আমরা কোনো উত্তেজনা সৃষ্টি করতে চাই না- বলেন এ নির্বাচন কমিশনার।

সর্বশেষ খবর