শুক্রবার, ৩ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা
ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের রায়

প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী নেতা ও প্রধান বিচারপতি থাকবেন ইসি গঠনে

প্রতিদিন ডেস্ক

ভারতে নির্বাচন কমিশন গঠন বিষয়ে যুগান্তকারী রায় দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। এ রায় অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ করবেন প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা ও প্রধান বিচারপতি। এর আগের নিয়ম অনুযায়ী, তিন সদস্যের এই নির্বাচন কমিশন গঠনে সুপারিশ করতেন প্রধানমন্ত্রী। এ সুপারিশ মেনে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও দুই নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগ দিতেন। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা।

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি কে এম যোসেফের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ গতকাল এই ঐতিহাসিক রায় দিয়েছেন। এ বিষয়ে কেন্দ্রকে উপযুক্ত আইন প্রণয়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তা না হওয়া পর্যন্ত সর্বোচ্চ আদালতের বেঁধে দেওয়া এই নতুন বিধি চালু থাকবে বলে রায়ে জানানো হয়েছে। বিচারপতি কে এম যোসেফ, অজয় রাস্তোগি, অনিরুদ্ধ বসু, হৃষিকেশ রায় ও সি টি রবিকুমারের সাংবিধানিক বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে জানিয়েছেন, স্বচ্ছতার স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত। সুপ্রিম কোর্ট রায় দিতে গিয়ে জানিয়েছে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তিন সদস্যের কমিটি নতুন নির্বাচন কমিশনারদের নাম প্রস্তাব করবে। তারপর তাদের নিয়োগ করবেন রাষ্ট্রপতি। আদালত জানিয়েছেন, দেশে নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ করবে একটি কমিটি। এ কমিটির সদস্য হিসেবে থাকবেন দেশের প্রধান বিচারপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধী দলনেতা। সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ আরও জানিয়েছে, দেশে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রাখা প্রয়োজন। সেই স্বচ্ছতার স্বার্থেই এই পদক্ষেপ। আদালতের পর্যবেক্ষণ হলো, সিবিআইয়ের প্রধান যেভাবে নিযুক্ত হন, সেভাবেই নির্বাচন কমিশনারদের নিযুক্ত করা উচিত। বর্তমান ব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে নির্বাচন কমিশনারদের নিযুক্ত করেন রাষ্ট্রপতি। তাদের কার্যকালের মেয়াদ হয় ছয় বছর। সচরাচর দেশের প্রাক্তন আমলাদের এই পদে বেছে নেওয়া হয়। তবে এই মনোনয়ন নিয়ে বারে বারেই প্রশ্ন উঠেছে। কংগ্রেস কিংবা বিজেপি, বিভিন্ন আমলে বিরোধী দলগুলো দাবি করেছে, সরকারের ঘনিষ্ঠ আমলাদের নির্বাচন কমিশনার করা হচ্ছে। খবরে বলা হয়, আপাতভাবে নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন এবং স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান হলেও বহুবার তাতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে। শাসক দলের বেলায় নীরব আর বিরোধী দলগুলোর ব্যবহারে অতিসক্রিয়, কমিশনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগও উঠেছে। সম্প্রতি ‘প্রকৃত’ শিবসেনা হিসেবে কমিশন শিন্ডেসেনাকে স্বীকৃতি দেওয়ায় উদ্ধব ঠাকরের সমর্থকেরা কমিশনের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পক্ষপাতের অভিযোগ তোলেন। উদ্ধব নিজে কমিশনকে শাসক দলের ‘দলদাস’ বলে কটাক্ষ করেন। এই আবহে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতার স্বার্থে প্রথা বাতিলের জন্য সুপ্রিম কোর্টে একাধিক জনস্বার্থ মামলা করা হয়েছিল।

আবেদনকারীদের দাবি ছিল, নির্বাচনের স্বচ্ছতার জন্য নিযুক্তি প্রক্রিয়ায় বদল আনা জরুরি। এখন এই রায়ের পর নির্বাচন কমিশন এক স্বাধীন সচিবালয় পাবে। স্বাধীনভাবে নিয়মনীতি তৈরি করতে পারবে। নিজেদের বাজেট স্বাধীনভাবে তৈরি করতে পারবে। তহবিলের জন্য সরকারের মুখাপেক্ষী হতে হবে না। সরাসরি কেন্দ্রীয় ট্রেজারি থেকে টাকা তোলার ক্ষমতা পাবে।

সর্বশেষ খবর