রবিবার, ১৯ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

তিন এয়ারলাইনস ৬০০ কোটি টাকা ভ্যাট মওকুফ চায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

অ্যারোনটিক্যাল এবং নন-অ্যারোনটিক্যাল চার্জের ওপর আরোপিত ভ্যাটের (মূল্য সংযোজন কর) ৬০০ কোটি টাকা মওকুফ করার আবেদন করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) তিন এয়ারলাইনস। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সরকারের পক্ষ থেকে ইউএইর একজন কূটনীতিককে ভ্যাট মওকুফের বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দেওয়ায় দেশটির বাংলাদেশ দূতাবাস সম্প্রতি এয়ারলাইনসগুলোর এ সংক্রান্ত আবেদন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। চিঠিতে এমিরেটস, ফ্লাই-দুবাই ও ইতিহাদ এয়ারওয়েজের ১০ বছরের (২০০৮ থেকে ২০১৮) জন্য অ্যারোনটিক্যাল এবং নন-অ্যারোনটিক্যাল চার্জের ওপর আরোপিত প্রায় ৬০০ কোটি টাকা ভ্যাট মওকুফ করার অনুরোধ জানানো হয়। এয়ারলাইনস তিনটি বলছে, ‘আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের ভিত্তিতে বিমান পরিবহন পরিষেবাগুলো সাধারণত শূন্য রেট বা ভ্যাট থেকে অব্যাহতি পায়। অ্যারোনটিক্যাল এবং নন-অ্যারোনটিক্যাল চার্জের ওপর বর্তমানে বাংলাদেশ যে ভ্যাট আরোপ করেছে তা এই মানদণ্ডের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। কারণ এয়ারলাইনসগুলো গ্রাহকদের কাছ থেকে এই (দাবিকৃত) ভ্যাট আদায় করতে পারে না।’ এভাবে ধার্য করা ভ্যাট ইউএইর এয়ারলাইনসগুলোর জন্য বিপুল আর্থিক ক্ষতির কারণ হবে। এমিরেটস বাংলাদেশের এরিয়া ম্যানেজার মোহাম্মদ আলহাম্মাদি, ইতিহাদ এয়ারওয়েজের (ভারতীয় উপমহাদেশ, এশিয়া-প্যাসিফিক) এরিয়া ফাইন্যান্স ম্যানেজার কুমার শংকর এবং ফ্লাই-দুবাইয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (অর্থ) অরবিন্দ কুমার পৃথক তিনটি চিঠি পাঠিয়েছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্প্রতি চিঠিগুলো জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) বিবেচনার জন্য পাঠিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, সাধারণত জাতীয় অগ্রাধিকার বা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কিত বিষয়গুলো জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে। বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) ওইসব কোম্পানির অন্যান্য সেবার ওপর যে ভ্যাট ছিল তা নেয়নি। তিনি আরও বলেন, বিদেশি এয়ারলাইনসগুলোর নিরীক্ষিত বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে অনেক গরমিল পাওয়া গেছে। ২০১৫ সালের ২৮ জুলাই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বেবিচক, এয়ারলাইনসগুলোর কাছ থেকে ২০০৯-১০ অর্থবছরের ১ জুলাই হতে অ্যারোনটিক্যাল ও নন-অ্যারোনটিক্যাল চার্জের ওপর ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আদায়ের ঘোষণা দেয়। এমিরেটসসহ ৯টি এয়ারলাইনস কোম্পানির রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর হাই কোর্ট বেবিচকের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন। পরবর্তীতে ২০১৭ সালের আগস্টে অ্যারোনটিক্যাল চার্জের ক্ষেত্রে ভ্যাট প্রযোজ্য বলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ রুল জারি করেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে বিমান পরিবহন-সম্পর্কিত সেবায় দেওয়া ভ্যাট ছাড় সুবিধা তুলে নেয় সরকার। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে অ্যারোনটিক্যাল এবং নন-অ্যারোনটিক্যাল চার্জ আরোপ শুরু করেছে বেবিচক। এমিরেটস, ফ্লাই-দুবাই, ইতিহাদ এবং অন্যান্য এয়ারলাইনস কোম্পানি সেই অনুযায়ী অর্থ দিয়েছে। যাত্রীদের খরচের সঙ্গে চার্জ সরাসরি সম্পৃক্ত না হওয়ায় এয়ারলাইনস কোম্পানি তিনটি যাত্রীদের কাছ থেকে এই ভ্যাট আদায় করতে পারছে না বলে বিষয়টি বিবেচনার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছে।

সর্বশেষ খবর