বুধবার, ৫ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা
বিশেষজ্ঞ অভিমত

অগ্নিকান্ড সহায়ক ছিল ওই মার্কেট

সাজ্জাদ হোসাইন

শামীম আহমেদ

বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকা- ১২ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে না আসা প্রসঙ্গে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের সদ্য সাবেক মহাপরিচালক    ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইন বলেছেন, ওই মার্কেটে আগুন লাগা ও তা ভয়াবহ রূপ ধারণ করার সব ধরনের সহায়ক পরিবেশ ছিল। প্রথমত কাপড় ও তুলার আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। মার্কেটে কোনো অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাও ছিল না। অপ্রশস্ত সড়কের কারণে আগুন নেভানোর জন্য ফায়ার সার্ভিসের পর্যাপ্ত সংখ্যক গাড়ি মার্কেটটির চারপাশে দাঁড়ানোর জায়গাও নেই। আমি মহাপরিচালক থাকাকালে ‘অগ্নি ঝুঁকিপূর্ণ’ উল্লেখ করে ওই মার্কেটে বহুবার ব্যানার টানিয়ে দিয়েছি। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি এসব কথা বলেন। বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা অনেক বেশি উল্লেখ করে সাজ্জাদ হোসাইন বলেন, নানা কারণে ফায়ার সার্ভিস ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। কোথাও আগুন লাগলে শত শত মানুষ গিয়ে ভিড় করে। রাস্তা আটকে মোবাইলে ভিডিও করে। এ কারণে ফায়ারকর্মীরা ঠিকভাবে কাজও করতে পারেন না। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি চলাচল বিঘ্নিত হয়। পানির উৎসেরও সমস্যা আছে। তিনি বলেন, বঙ্গবাজার মার্কেটে অল্প জায়গায় গাদাগাদি করে প্রচুর মালামাল রাখা হতো। সবই দাহ্যপণ্য। তুলা ও কাপড়ের আগুন দ্রুত নিচের দিকে চলে যায়। ওপরের আগুন নিভলেও ভিতরে থেকে যায়। নেভাতে সময় লাগে। ফায়ারকর্মীরা ওই মার্কেটের ভিতরে ঢুকে আগুন নেভাবে সেই সুযোগও নেই। ঠিকভাবে বাতাস চলাচলের জায়গাও ছিল না। এ জন্য ব্যানার টানিয়ে দিয়েছিলাম। আগুন নেভাতে হেলিকপ্টারে পানি ছিটানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখানে ওপর থেকে পানি ছিটিয়ে খুব একটা লাভ হয় না। ফায়ার ফাইটারদের ভিতরে গিয়ে পানি দিতে হয়। কিন্তু ওই এলাকার মার্কেটগুলোর যে স্ট্রাকচার, তাতে ভিতরে গিয়ে পানি দেওয়া কঠিন। প্রতিটা দোকানে তাৎক্ষণিক আগুন নেভানোর উপকরণ থাকলে আজ হয়তো এই পরিস্থিতি দেখতে হতো না। ফায়ার সার্ভিসের সাবেক এই মহাপরিচালক বলেন, এসব মার্কেট, শপিং মলে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখা বাধ্যতামূলক। কেউ মানে না। আবার আমরা সবসময় আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিতে পারি না। ফায়ার সার্ভিসের আইনে সর্বনিম্ন সাজা তিন বছর। অন্যদিকে মোবাইল কোর্ট সর্বোচ্চ দুই বছর সাজা দিতে পারে। অর্থাৎ, আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করলেও ফায়ার সার্ভিস আইনে শাস্তি দিতে পারি না। আইনের এসব দুর্বলতা দূর করা দরকার। অগ্নিদুর্ঘটনা কমাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে কাজ শুরু করতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনাগুলো চিহ্নিত করে ঝুঁকি অপসারণের ব্যবস্থা নিতে হবে।

সর্বশেষ খবর