মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

যুক্তরাষ্ট্রে মোমেন-ব্লিঙ্কেন বৈঠক

আলোচনায় নিরপেক্ষ নির্বাচন মানবাধিকার

লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রে মোমেন-ব্লিঙ্কেন বৈঠক

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে গতকাল মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বৈঠকে অংশ নেন -বাংলাদেশ প্রতিদিন

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক বর্তমানে যে কোনো সময়ের চেয়ে মধুর। পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে দুই দেশ বিশ্বশান্তি রক্ষা এবং সন্ত্রাসবিরোধী চলমান অভিযান এগিয়ে নিয়ে যাবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।

ওয়াশিংটনে গতকাল স্থানীয় সময় দুপুরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। আলোচনায় গুরুত্ব পায় বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনে নিরপেক্ষতা ও মানবাধিকারের মতো ইস্যুও।

অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন বলেন, এ সম্পর্কের ভিত্তিতে দুটি দেশ উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাবে। প্রায় ২০ মিনিট স্থায়ী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় অত্যন্ত হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে। অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, বাংলাদেশের নাগরিকদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের মধ্যকার বন্ধনের ওপর ভর করে যুক্তরাষ্ট্র সামনের দিনগুলোতেও বাংলাদেশের পাশে থাকবে। বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা অব্যাহত থাকবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পাঠানো চিঠিতে বাংলাদেশের অগ্রগতি ও উন্নতি কামনা করে ‘জয় বাংলা’ বলে অভিবাদন জানানোয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ধন্যবাদ জানান। তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে সম্পূর্ণ স্বাধীন একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে বলে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেনকে নিশ্চিত করেছেন। বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানসহ দূতাবাসের অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহের কারণে কূটনৈতিক অঙ্গনে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল মোমেন-ব্লিঙ্কেনের এ বৈঠক। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্কের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চায়। ড. এ কে আবদুল মোমেন যুক্তরাষ্ট্রের সামনে সেই অবস্থান তুলে ধরেছেন। গতকালের বৈঠকে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাওয়ার আগে ৫ এপ্রিল সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন জানান, আমেরিকা আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র। উন্নয়নের মহাসড়কে যাত্রার সময়ে আমেরিকা যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশকে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে দাওয়াত দিয়েছেন। আমরা খুব ভাগ্যবান, কারণ পরপর তিনবার তাঁর দাওয়াত পেলাম। নির্বাচন প্রসঙ্গে ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে আলাপ নিয়ে ড. মোমেন বলেন, আমরা চাই স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। আমেরিকাও চায় স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। এ নিয়ে আমাদের মধ্যে কোনো দ্বিমত নেই। ঢাকা এবং ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছেন, গত জানুয়ারিতে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু এবং ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের কাউন্সেলর ডেরেক শোলের ঢাকা সফরের সময়ও গণতন্ত্র, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং মানবাধিকার সুরক্ষায় বাংলাদেশ যাতে অঙ্গীকার পূরণ করে, সে কথা বলে গেছেন। গত বছরের ৪ এপ্রিল বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তীর দিনে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসেছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন। সবশেষ চলতি বছরে মার্চের শুরুর দিকে নয়াদিল্লিতে জি-২০ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের সময় ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল মোমেনের। তবে সেখানে আনুষ্ঠানিক বা সাইডলাইনে কোনো বৈঠক হয়নি দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর