শিরোনাম
সোমবার, ১৫ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

ঝড়ের তান্ডব সেন্টমার্টিনে

আশঙ্কার চেয়ে ক্ষতি কম ♦ ১২ হাজার ঘর বিধ্বস্ত ♦ ক্ষতি কক্সবাজার-চট্টগ্রামেও

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঝড়ের তান্ডব সেন্টমার্টিনে

সেন্টমার্টিন দ্বীপে ঘূর্ণিঝড় মোখায় পড়ে গেছে অনেক গাছ। বিধ্বস্ত হয়েছে ঘরবাড়ি। কক্সবাজারেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েক হাজার ঘর (ডানে) -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ঘূর্ণিঝড় মোখার তান্ডবে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে সেন্টমার্টিন। বঙ্গোপসাগরের বক্ষে থাকা এই প্রবাল দ্বীপের গাছপালা ও বাড়িঘরের বেশ ক্ষতি হয়েছে; উড়ে গেছে ঘরবাড়ির চালা, উপড়ে গেছে গাছগাছালি। গাছচাপায় কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া উপকূলীয় কয়েকটি এলাকার ঘরবাড়ি, গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটিসহ বিভিন্ন অবকাঠামো উপড়ে পড়েছে। সেন্টামার্টিন ছাড়াও কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ১২ হাজার ঘরের ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে। এ ক্ষতি আশঙ্কার চেয়ে অনেক কম বলে দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে। এদিকে ঝড়ের বিপদ কেটে যাওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। আবহাওয়া বিভাগের তথ্যানুযায়ী, মোখার প্রভাবে আজ সারা দেশে বৃষ্টি হতে পারে। প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, সেন্টমার্টিনের মতো টেকনাফের বাহারছড়া, সাবরাং ও শাহপরীর দ্বীপে ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে গাছপালা উপড়ে বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উপকূল জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে। শুধু সেন্টমার্টিনে ১২ শ’র মতো ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়েছে। অনেক সড়কে চলাচল বন্ধ হয়েছে। তবে সেন্টমার্টিন ও টেকনাফের মতো বড় প্রভাব পড়েনি কক্সবাজার সদর, মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায়। মোখার প্রভাবে কক্সবাজারের টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে ব্যাপক ঝড়ো হাওয়া হয়েছে। আবহাওয়া অধিদফতর বলেছে, বেলা আড়াইটায় সেন্টমার্টিন দ্বীপে ১৪৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বাতাসের গতিবেগ ছিল। মোখার প্রভাবে টেকনাফেও ব্যাপক ঝড়বৃষ্টি হয়েছে।

গতকাল সকাল থেকে ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাব পড়তে শুরু করে কক্সবাজার জেলার সেন্টমার্টিনে। দুপুরের দিকে বৃষ্টি ও বাতাসের বেগ বাড়তে থাকে। বিকাল ৪টার পর তা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। টানা এক ঘণ্টার বেশি প্রচ- বাতাস ও বৃষ্টির পর আবহাওয়া ধীরে ধীরে শান্ত হতে থাকে। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, সন্ধ্যা ৬টায় উপকূল অতিক্রম করেছে মোখা। ঘূর্ণিঝড় মোখা পরিণত হয়েছে স্থল নিম্নচাপে।

এদিকে উপকূলে আঘাত হানার পর কক্সবাজার এবং মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে তান্ডব চালিয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা। বৃষ্টি ঝরিয়ে শক্তি হারিয়ে পরিণত হয়েছে স্থল গভীর নিম্নচাপে। ঝড়ের বিপদ কেটে যাওয়ায় কক্সবাজার বন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে তার বদলে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম ও পায়রাবন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে তার বদলে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। আর মোংলা বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার বদলে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

জলোচ্ছ্বাসের মাত্রা ‘সহনীয়’ : মোখার প্রভাবে উপকূলে জলোচ্ছ্বাসের মাত্রা ‘সহনীয়’ ছিল জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেছেন, এ দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য এখন পর্যন্ত আসেনি। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতিপ্রবল এই ঘূর্ণিঝড় নিয়ে গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সেন্টমার্টিনে ৩৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে সাড়ে ৮ হাজার মানুষ আশ্রয় নেয়। এ ছাড়া কক্সবাজারে ৫৭৬টি কেন্দ্রে ২ লাখের বেশি, চট্টগ্রামে ১ হাজার ২৪ আশ্রয়কেন্দ্রে ৫ লাখ মানুষ আশ্রয় নেয়। কুতুবদিয়া, মহেশখালী, সন্দ্বীপ, সুবর্ণচরের মানুষকেও নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতির সংবাদ আমরা পাইনি। আমরা পাঁচ বছরে যত দুর্যোগ মোকাবিলা করেছি, তার মধ্যে এবারের আয়োজন ব্যবস্থাপনাটি ছিল সর্বোচ্চ সঠিক।’ দুর্যোগকালীন লাখ লাখ মানুষের ব্যবস্থাপনা সহজ নয় জানিয়ে এনামুর রহমান বলেন, হাজার হাজার আশ্রয়কেন্দ্র, লাখ লাখ মানুষ। এদের ব্যবস্থাপনা বাস্তবিক অর্থে এত সহজ নয়। আমরা দেখেছি এর আগেও সক্ষমতা ১০০ জনের হলেও ২০০ মানুষ আসে। তাদের খাওয়া-দাওয়া, স্যানিটেশনের ব্যবস্থা খুব সহজ নয়। তবে এবারের ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য, সেন্টমার্টিন, টেকনাফ ও কক্সবাজারের স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কাজের প্রশংসা করেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এবার আমাদের ব্যবস্থাপনা খুবই সুন্দর হয়েছে। কোথাও কোনো লুপহোল ছিল না।’

ক্ষতবিক্ষত হয়েছে সেন্টমার্টিন : গতকাল সন্ধ্যার দিকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বরাত দিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, সেন্টমার্টিনে ১২ শ’র মতো ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়েছে। তবে জেলাজুড়ে হতাহতের কোনো খবর আমাদের কাছে নেই। এ সময় তিনি আরও জানান, আবহাওয়া একটু ভালো হলেই জেলা প্রশাসনের ত্রাণ তৎপরতা ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে কাজ শুরু হবে। সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুল ইসলাম সন্ধ্যায় বলেন, আমরা স্থানীয় মেম্বার ও লোকজনের কাছ থেকে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য নিচ্ছি। প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গাছপালা উপড়ে গেছে, ঘরবাড়ি ভেঙে মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে এখনই প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি জানা সম্ভব না উল্লেখ করে ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘এখন অন্ধকার হয়ে গেছে। আকাশ বেশ মেঘাচ্ছন্ন, গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিও হচ্ছে।’ তবে সেন্টমার্টিনের মূল ভূখন্ডের কোথাও জলোচ্ছ্বাস হয়নি বলেও জানান ইউপি চেয়ারম্যান। তিনি আরও জানান, তবে আবহাওয়া শান্ত হওয়ার পর লোকজন আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে যাচ্ছে। সেন্টমার্টিন দ্বীপের স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলে জানা গেছে, ঝড়ের সময় দ্বীপে যারা অবস্থান করছিলেন তাদের বড় অংশই ছিলেন সরকারি আশ্রয়কেন্দ্র, হোটেল ও রিসোর্টে। সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে দুই হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন। ঝড় কমে যাওয়ার পর অনেকেই সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন। পুরুষরা আগে বেরিয়ে কাছাকাছি থাকা বাড়িঘর গিয়ে দেখে আসে। পরে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে সঙ্গে থাকা জিনিসপত্রসহ নারী ও শিশুদের নিয়ে বাড়িঘরে যায়। তবে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন তারাই; যাদের বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। সড়কে গাছপালা পড়ে থাকতে দেখা গেছে। কোথাও কোথাও গাছ উপড়ে বাড়িঘরে পড়েছে। বাড়ির সীমানাপ্রাচীর পড়ে গেছে। এর মধ্যেই লোকজন বাড়ি ফিরেছে।

বিভিন্ন স্থান থেকে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

কক্সবাজার : গতকাল বিকাল ৫টার পরে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, সকাল থেকে শুরু হওয়া ঝড়ো হওয়া দুপুর ১টার পর থেকে ক্রমাগত তীব্র হতে থাকে। বিকাল ৪টার পর থেকে বাতাসের তীব্রতা কমে বৃষ্টিপাতের মাত্রা বাড়তে থাকে। এই পুরো সময়ে দ্বীপের ১২ শতাধিক আধাপাকা টিনশেড ঘর, ছোট্ট মানের কটেজ বাতাসে বিধ্বস্ত হয়েছে। দ্বীপের ৭৫ শতাংশ গাছ ভেঙে ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে। সাগরের পানি স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে একটু বেশি হলেও কোথাও প্লাবিত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের সদস্য (মেম্বার) খোরশেদ আলম জানিয়েছেন, দ্বীপের পূর্ব পাশে অবস্থিত বাজারের অধিকাংশ দোকান বাতাসে উড়ে গেছে। গাছচাপায় দিলদার বেগম নামে এক নারী আহত হলেও আর কেউ হতাহত হননি। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান জানিয়েছেন, সেন্টমার্টিনের চেয়ারম্যান ও সেখান থেকে পাওয়া প্রাথমিক তথ্যানুযায়ী, দ্বীপের ৭৫ শতাংশ গাছ ছাড়াও ১২ শতাধিক ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত কোনো হতাহতের তথ্য পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর দ্বীপে গিয়ে ক্ষতির সার্বিক চিত্র বা পরিমাণ জানা যাবে। কক্সবাজার আঞ্চলিক আবহাওয়া কার্যালয়ের প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান জানিয়েছেন, গতকাল বিকাল ৩টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে ১৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এরপর বৃষ্টির তীব্রতা বেড়েছে।

টেকনাফ (কক্সবাজার) : কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিন ও উপকূলীয় এলাকাসহ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৫ ঘণ্টাব্যাপী প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে ৩ শতাধিক বসতবাড়ি, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভেঙে পড়ছে। একই সঙ্গে পানের বরজ, ফসলি খেত নষ্ট হয়ে গেছে। গাছপালা ও বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়েছে।

টেকনাফ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুজ্জামান বলেন, আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, সেন্টমার্টিন ও টেকনাফ হয়ে ঘূর্ণিঝড় মোখা মিয়ানমারের দিকে অতিক্রম করেছে। সেন্টমার্টিন-টেকনাফ ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ উপকূলের অনেক ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে, পাশাপাশি রাস্তায় গাছপালাসহ বৈদ্যুতিক খুঁটি পড়ে গেছে।

চট্টগ্রাম : প্রবল অতি ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে চট্টগ্রামের উপকূলীয় এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে নিরাপদে নেওয়া হয় ৩২ হাজার অধিবাসীকে। সাগর উত্তাল থাকায় প্রায় ৪০০ ছোট জাহাজ আশ্রয় নেয় কর্ণফুলী নদীতে। এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। জরুরি চিকিৎসাসেবায় গঠন করা হয়েছে বিশেষ ছয়টি টিম। প্রস্তুত রাখা হয়েছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, ওয়ার্ড, চিকিৎসা উপকরণ ও অপারেশন থিয়েটার। এ ব্যাপারে দেওয়া হয়েছে বিশেষ নির্দেশনা। 

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) : গতকাল দুপুরে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় কোনো দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তবে বাতাসের গতিবেগ স্বাভাবিক ছিল, নদীতে পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। আকাশ সারা দিনই ছিল মেঘাচ্ছন্ন। বন্যা আতঙ্কে শহর কিংবা গ্রামে লোকজনের আনাগোনা ছিল খুবই কম।

ভোলা : ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে ভোলায় সকাল থেকে আকাশ কিছুটা মেঘাচ্ছন্ন ছিল। মাঝেমধ্যে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। তবে বাতাসের গতিবেগ স্বাভাবিক ছিল। দুপুরের দিকে মেঘনা কিছুটা উত্তাল হয়ে ওঠে। জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, শনিবার রাতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার ৬১টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ১০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। ওই রাতে সদর উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে গিয়ে শুকনো খাবার বিতরণ করেছেন ভোলা সদর আসনের সংসদ সদস্য সাবেক শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তবে সকাল হতে না হতে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে সবাই নিজ নিজ বাড়ি চলে গেছেন।

পাথরঘাটা (বরগুনা) : মোখার বিপদ কেটে গেছে জানার পর বিকাল থেকেই স¦াভাবিক জীবনযাত্রা শুরু হয়ে যায়। তবে উপকূলীয় উপজেলা পাথরঘাটার আকাশে সকাল থেকেই সূর্যের আলো দেখা যায়নি। ?সকাল? থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত প্রচ- গরম থাকলেও দুপুরের পর কিছুটা গরম কমে যাওয়ায় জনমনে স্বস্তি বিরাজ করে। বিকাল সাড়ে ৩টা থেকেই পাথরঘাটার আকাশে রোদ এবং আকাশ পরিষ্কার হয়ে যায়।

পটুয়াখালী : পটুয়াখালীর উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড় মোখার তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। সারা দিন রোদ আর মেঘের উঁকিঝুঁকি ছিল আকাশজুড়ে। তাই দাপদাহ অনেকটাই কমে আসে। অভ্যন্তরীণ নদনদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পায়। কোথাও কোথাও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

নোয়াখালী : বিপদ কেটে যাওয়ার খবর আসতেই নোয়াখালীর উপকূলীয় হাতিয়াসহ চারটি উপজেলার চরাঞ্চলের লোকজন স্বাভাবিক জীবেন ফিরতে শুরু করেছেন। ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি, হিমেল হাওয়া এবং সাগর, নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উচ্চতায় জোয়ারের পর পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে ওঠে।  হাতিয়া দ্বীপের চেয়ারম্যান ঘাট চতলার ঘাট থেকে নৌকা নিয়ে কিছু জেলেকে নদীতে মাছ ধরতে যেতেও দেখা গেছে। চেয়ারম্যান ঘাট, চতলারঘাটসহ বিভিন্ন নৌঘাটে নদী পারাপারের জন্য যাত্রীদের অপেক্ষমাণ থাকতে দেখা গেছে। হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরুল কায়সার জানান, হালকা বাতাস এবং নদী কিছুটা উত্তাল। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের কোনো প্রভাব লক্ষণীয় ছিল না।

সর্বশেষ খবর