গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন আজ। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ইভিএমে টানা ভোট গ্রহণ চলবে। এ নির্বাচন ঘিরে উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে নির্বাচনী এলাকায়। শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণের প্রত্যাশা নির্বাচন কমিশনের। তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই এ সিটি ভোটকে নির্বাচন কমিশনের প্রথম পরীক্ষা হিসেবে দেখছেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা। এ নির্বাচনে মাত্র পাঁচটি দল অংশগ্রহণ করছে। অন্য দলগুলো সিটি নির্বাচনের পরিবেশ-পরিস্থিতি দেখে সংসদ নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেবে। এদিকে সুষ্ঠু ভোট গ্রহণে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ভোট পর্যবেক্ষণে থাকছেন ইসির নিজস্ব কর্মকর্তারা। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। গতকালই কেন্দ্রে কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ও নির্বাচনী মালামাল। ঢাকা থেকে ভোট মনিটরিংয়ের জন্য কেন্দ্রে কেন্দ্রে থাকছে সিসি ক্যামেরা। নির্বাচন নিয়ে নগরজুড়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। কে হচ্ছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের তৃতীয় মেয়র তা নিয়ে যেন আলোচনার শেষ নেই। ভোট নিয়ে তেমন কোনো শঙ্কা না থাকলেও অভিযোগ রয়েছে প্রার্থীদের। ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানোর কারণে গতকাল একজন কাউন্সিলর প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন। ভোটে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে কমিশন। এ সিটিতে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন ভোট দেবেন। নির্বাচনী লড়াইয়ে রয়েছেন মেয়র পদে আটজন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭৮ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৫ জন প্রার্থী। নির্বাচন উপলক্ষে সিটি এলাকায় থাকছে সাধারণ ছুটি। এ সিটি নির্বাচনে ইভিএমে ভোট দেওয়া নিয়ে তরুণ ভোটারদের উৎসাহ বেশি। ৪৮০টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৩৫১টিকে ঝুঁকিপূর্ণ (গুরুত্বপূর্ণ) বলে চিহ্নিত করেছে কমিশন। ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ কেন্দ্রে আলাদা করে গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে মহানগর পুলিশ। নগরজুড়েই থাকছে নি-িদ্র নিরাপত্তা। কেন্দ্রের পাশাপাশি আশপাশেও টহলে থাকছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ইসি জানিয়েছে, ৫৭টি ওয়ার্ডে নির্বাহী হাকিম থাকবেন ৭৬ জন, বিচারিক হাকিমও থাকবেন। র্যাবের ৩০টি টিম থাকবে। বিজিবি থাকবে ১৩ প্লাটুন। এ ছাড়া স্ট্রাইকিং ফোর্স পুলিশের ১৯টি টিম এবং মোবাইল টিম হিসেবে ৫৭টি টিম থাকবে। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৭ ও সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ জন সদস্য থাকবেন।
গাজীপুরসহ পাঁচ সিটি নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান। গতকাল তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘প্রতিটি নির্বাচনই আমাদের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। গাজীপুর সিটি নির্বাচনও এর ব্যতিক্রম নয়। রাজশাহী, খুলনা, সিলেট ও বরিশাল সিটি নির্বাচনের প্রতিটি পদক্ষেপেই সুতীক্ষè নজর রাখছি আমরা। বৃহস্পতিবারের (আজ) গাজীপুর সিটি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ভোটের দিনও আমরা সরাসরি সিসি ক্যামেরায় এ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করব।’ তিনি বলেন, ‘আমি আগেই বলেছি ইভিএম স্বচ্ছতার প্রতীক। ভোটার নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন। নির্বিঘ্ন ভোটাধিকার প্রয়োগের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায়ে আমাদের নির্দেশনা রয়েছে। সেই সঙ্গে সবার সহযোগিতাও দরকার।’ এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আগের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ইভিএমে ভোট দিতে ভোটারদের যেন কোনো অসুবিধা না হয় সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ভোট কেন্দ্রে ইভিএমের জন্য দক্ষ কারিগরি টিমও থাকবে। আশা করি কোনো ধরনের ভোগান্তি ছাড়াই সুন্দরভাবে সবাই ভোট দিতে পারবেন। তফসিল ঘোষণার পর থেকেই ভোট পর্যন্ত নির্বাচনে বিধিবিধান প্রতিপালনে আমাদের অবস্থান কঠোর ছিল, আছে ও থাকবে। আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য কাউকে কোনো ছাড় দেওয়া হয়নি এবং ছাড় দেওয়া হবেও না। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীকে সরাসরি নির্বাচন কমিশনের তলব করার নজির স্থাপন করা হয়েছে এবং একজন কাউন্সিলর প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলও করা হয়েছে। আমাদের বার্তা স্পষ্ট, আমরা সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করছি, অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করায় আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ এবং নির্বাচনে অনিয়ম-বিশৃঙ্খলা করলে কোনো ধরনের ছাড় নেই। আশা করছি আমরা সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে যাচ্ছি।’
কাউন্সিলর প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল : নৌকায় ভোট না দিলে কাউকে ভোট কেন্দ্রে আসতে দেওয়া হবে না- এমন কথা বলার পর এখন নিজেরই ভোট করা হচ্ছে না আজিজুর রহমানের। তিনি গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ছিলেন। কথার মাধ্যমে ভীতি ও ত্রাস সৃষ্টি করায় তার প্রার্থিতা বাতিল হয়ে গেছে। গাজীপুরে ভোট গ্রহণের ঠিক আগের দিন গতকাল নির্বাচন কমিশন আজিজুরের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত জানায়। অভিযোগ পাওয়ার পর গতকাল আজিজুরকে ডেকেছিল ইসি। তার বক্তব্য শোনাসহ এ-সংক্রান্ত শুনানি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এবং তা স্বীকার করার পরিপ্রেক্ষিতে লাটিম প্রতীকে কাউন্সিলর প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল ঘোষণা করেছে ইসি।আজিজুর রহমান ২২ মে সন্ধ্যায় পুবাইল এলাকার কলের বাজার নামক স্থানে মিছিল ও জনসভা করেন। ‘নৌকায় ভোট না দিলে কাউকে ভোট কেন্দ্রে আসতে দেওয়া হবে না’- তার এমন বক্তব্য বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় আসে। তা দেখে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে রিটার্নিং কর্মকর্তা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এর ভিত্তিতে ইসি আজিজুরকে ঢাকায় তলব করে।
ইসি সচিব জানান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের উপস্থিতিতে চার নির্বাচন কমিশনারের সামনে ব্যাখ্যা দেওয়ার পর প্রার্থী ক্ষমা প্রার্থনা করলেও তা গৃহীত হয়নি। পরে কমিশন ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে’ এ প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল ঘোষণা করে। ইসির সিদ্ধান্তে হতাশ আজিজুর সাংবাদিকদের বলেন, ‘বৃহস্পতিবার নির্বাচন, আর কিছু করার নেই। আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার মতো সুযোগও আর নেই।’
নগরজুড়ে নিরাপত্তা : নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে পুরো নগরী। নির্বাচনী এলাকায় পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, এপিবিএন ও আনসার ভিডিপি সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় ১৩ হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। গতকাল সকাল থেকে নির্বাচনী এলাকার ৪৮০টি ভোট কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কাছে ইভিএমসহ ৪৬ আইটেমের নির্বাচনী সামগ্রী বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। গাজীপুর সিটির পৃথক পাঁচটি আঞ্চলিক কেন্দ্র থেকে এসব নির্বাচনী সরঞ্জাম বিতরণ করা হয়।
পুলিশের ব্রিফিং : গতকাল সকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশে গাজীপুর শহরের শহীদ বরকত স্টেডিয়ামে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম নিরাপত্তা বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন। নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন যাতে হয় সে বিষয়ে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হলো একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করা। জনগণ ভোট কেন্দ্রে এসে নিরাপদে যাতে ভোট দিয়ে চলে যেতে পারে সে ব্যবস্থা করা।’
গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘নি-িদ্র নিরাপত্তার মাধ্যমে নাগরিকদের একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন যেন উপহার দিতে পারি তা নিশ্চিত করব। নির্বাচনে ৪৮০টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩৫১টি কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং ৩৫১টি কেন্দ্রে আমরা আলাদাভাবে গুরুত্ব দেব।’ তিনি বলেন, ‘যখন ভোট গ্রহণ শুরু হবে সবাই যাতে লাইনে দাঁড়াতে পারে, কেউ যেন পেশিশক্তি ব্যবহার করতে না পারে, কেউ যাতে মাস্তানি করতে না পারে এ বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে। ভোটার ও জনগণের সঙ্গে সুন্দর ব্যবহার করতে হবে। মা-বোনদের সঙ্গে সুন্দর ব্যবহার করতে হবে। অনেক বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধী ভোটার আসবেন তাদের যেভাবে সাহায্য করা যায় সাহায্য করবেন।’
তিনি বলেন, ‘পুরো গাজীপুরসহ সারা বিশ্বের লোকজন তাকিয়ে আছে এ নির্বাচনের দিকে। আমরা আমাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করব একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে।’ এ সময় গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান, নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলামসহ পুলিশ, বিজিবি, আনসার বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে গাজীপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘সবার সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা যেন গাজীপুরে মডেল নির্বাচন জাতিকে উপহার দিতে পারি। সিটি নির্বাচনে পাঁচ স্তরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করে গাজীপুরকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।’
ভোট কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা ও ইভিএম : এ নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন, মহিলা ভোটার ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন এবং হিজড়া ভোটার ১৮। নির্বাচনে ভোট গ্রহণের জন্য মোট ৪৮০টি কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি। এসব কেন্দ্রে ব্যবহার করার জন্য ৫ হাজার ২৪৬টি ইভিএম মেশিন প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে ৪৮০ জন ট্রাবল শুটার, প্রতি দুই কেন্দ্রে একজন করে মোট ২৪০ জন (ভ্রাম্যমাণ) টেকনিক্যাল এক্সপার্ট, ১৪ জন সহকারী প্রোগ্রামার এবং চারজন থাকবেন প্রোগ্রামার, যাতে কোনো ইভিএম মেশিনে সমস্যা দেখা দিলে তা দ্রুত সমাধান করা যায়। প্রতি কেন্দ্রে একটি এবং কক্ষে একটি করে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।
মেয়র পদে লড়ছেন যারা : জেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার এ এইচ এম কামরুল হাসান জানান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের এবারের নির্বাচনে ৮ মেয়র প্রার্থী, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭৮ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে প্রার্থী ২৪৫ জন। এ ছাড়া এ নির্বাচনে ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ফয়সাল আহমেদ সরকার ইতোমধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তাকে নিয়ে এবার নির্বাচনে মোট প্রার্থীর সংখ্যা ৩৩১ জন। তিনি জানান, এ নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত (নৌকা প্রতীক) অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান, জাতীয় পার্টির প্রার্থী (লাঙ্গল প্রতীক) এম এম নিয়াজ উদ্দিন, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির রাজু আহাম্মেদ, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের আতিকুল ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ছাড়া স্বতন্ত্র মেয়র পদে টেবিলঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন, হাতি প্রতীকে সরকার শাহনূর ইসলাম রনি এবং ঘোড়া প্রতীকে হারুন-অর রশীদ লড়ছেন।
জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের সঙ্গে ইসির মতবিনিময় : গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক মতবিনিময় সভা গতকাল বিকালে গাজীপুর সার্কিট হাউস সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় মতবিনিময় করেন নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা। পরে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে সব ইলেকশনই (ছোট-বড়) সমান গুরুত্বপূর্ণ। গাজীপুর সিটি নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমাদের আলাদা কোনো চ্যালেঞ্জ নেই। যেখানেই নির্বাচন হচ্ছে আমরা তা মনিটরিং করছি। আমাদের কাছে ইলেকশন মানে ইলেকশন। আর ইলেকশন মানেই তা গুরুত্বপূর্ণ। গাজীপুর সিটি নির্বাচন নিয়ে আমাদের ওপর কোনো চাপ নেই। আমাদের পক্ষ থেকেও কারও ওপর কোনো চাপ নেই। যার যার মতো নির্বাচনের কাজ করছে। তাতে কোনো অসুবিধা নেই।’
ভোট কেনার ঘটনা ভাইরাল : গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে টঙ্গীর প্রতিটি ওয়ার্ডে টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে অসাধু প্রার্থীদের লোকজন ঘুরছে ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে, আবার বিকাশ নম্বর নিয়ে। এমনকি এলাকার বাইরে যেসব ভোটার রয়েছেন, তাদের কাছে টাকা পাঠিয়ে এলাকায় আনা হচ্ছে। বিভিন্ন কৌশলে ভোট কেনা হচ্ছে। গতকাল টঙ্গীতে অবস্থিত ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের এক কাউন্সিলর প্রার্থীর ভাইয়ের টাকা দিয়ে ভোট কেনার ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
যান চলাচল বন্ধ : সিটি এলাকায় মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে আগামীকাল শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পুলিশ। গতকাল দিবাগত রাত ১২টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার রাত ১২টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে সব ধরনের ভারী যানবাহন। তবে নির্বাচনে সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত দেশি-বিদেশি সাংবাদিক (পরিচয়পত্র থাকা সাপেক্ষে), নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা, কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলার কাজে নিয়োজিত বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য, নির্বাচনের বৈধ পরিদর্শক ও অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ডাক, টেলিযোগাযোগে ব্যবহৃত যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে।