আর দুই দিন পরই খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে ভোট গ্রহণ। তফসিল অনুযায়ী প্রার্থীরা প্রচার চালাতে পারবেন শনিবার মধ্যরাত পর্যন্ত। প্রচারের আর খুব বেশি সময় হাতে না থাকায় গতকাল রোদবৃষ্টি মাথায় নিয়েই ভোটারদের কাছে ক্লান্তিহীন ছুটেছেন প্রার্থীরা। জলাবদ্ধতা নিরসন, মাদক নির্মূলসহ উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে মন জয়ের চেষ্টা করেছেন ভোটারদের।
আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক গতকাল সকালে খালিশপুরের বৈকালী বাজার, খুলনা আলিয়া কামিল মাদরাসা, বাস্তুহারা ৯ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন। তিনি খুলনার ধারাবাহিক উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে আবারও নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।
তালুকদার খালেক বলেন, চলমান ড্রেনেজ উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শেষ হলে জলাবদ্ধতা নিরসন হবে। এ ছাড়া মাদকের সঙ্গে যুক্ত কেউ প্রার্থী হলে নির্বাচনে ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন গতকাল নগরীর বয়রাবাজার এলাকায় গণসংযোগ ও দলীয় কার্যালয়ে বিভিন্ন কেন্দ্রভিত্তিক কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তিনি বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। নির্বাচনে ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকেই ভোট দেবেন। আমরা খুলনার চলমান প্রকল্পের কাজ শেষ করে পরিচ্ছন্ন আধুনিক নগরী গড়ে তুলতে নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী আবদুল আউয়াল আইনজীবী সমিতি, নিক্সন মার্কেট, মহসিন মোড়, রেলগেট, মানিকতলা সোনালী গেট, ফুলবাড়ি গেট বাজার, সেনপাড়ায় গণসংযোগ করেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত এ নগরীর উন্নয়নে সময় ক্ষেপণ করার অবকাশ নেই। দলমতনির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে খুলনাকে এগিয়ে নিতে হবে। এখানে অপরাজনীতির সুযোগ নেই। আবদুল আউয়াল ১২ জুন হাতপাখা প্রতীকে ভোট দিয়ে খুলনাকে দুর্নীতিমুক্ত, আধুনিক নগরী হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি জলাবদ্ধতা নিরসন ও মাদকমুক্ত খুলনা গড়ে তোলার ঘোষণা দেন।এ ছাড়া জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু গতকাল ২২ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, নির্বাচিত হলে সিটি করপোরেশনের সব কাজে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, ২২ খালসহ ময়ূর নদ খনন, নদকেন্দ্রিক বিনোদন স্থান, কর্মমুখী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সুপেয় পানি নিশ্চিত, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও গ্রিন সিটি ক্লিন সিটি স্থাপন করা হবে। তিনি খুলনা সিটিকে দেশের শ্রেষ্ঠ সিটি করপোরেশন হিসেবে গড়ে তোলার কথা বলেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম শফিকুর রহমান মুশফিক গতকাল ১ নম্বর ওয়ার্ড, দৌলতপুর মাছবাজার, রূপসা মাছবাজার, ২২ নম্বর ওয়ার্ড, ১২ নম্বর ওয়ার্ড বিহারি কলোনি এলাকায় গণসংযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘খুলনার উন্নয়নে ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার কাজ করার কথা বলা হলেও তার সুফল খুলনাবাসী পায়নি। এই যে রাস্তাঘাটে খোঁড়াখুঁড়ি তা অপরিকল্পিত কাজ। ২৫ হাজার বাড়িঘর রাস্তা থেকে নিচু হয়ে গেছে। এখানে ভোটের একটা ভিন্ন সমীকরণ তৈরি হয়েছে। মানুষ চায় মেয়রকে কাছাকাছি, কথা বলতে চায়। বিগত দিনে সেই সুযোগ হয়নি। এবার তাই মানুষ পরিবর্তন চায়।