মঙ্গলবার, ৮ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

জলাবদ্ধতা পুঞ্জীভূত অবহেলার ফল

দেলোওয়ার হোসেন মজুমদার

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

জলাবদ্ধতা পুঞ্জীভূত অবহেলার ফল

নগর পরিকল্পনাবিদ প্রকৌশলী দেলোওয়ার হোসেন মজুমদার বলেছেন, চট্টগ্রাম নগর চার দিন ধরে পানির নিচে থাকাটা দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার ফল।

গত চার দিন ধরে চট্টগ্রাম মহানগর পানির নিচে থাকার প্রেক্ষিতে বিশেষ সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি এসব কথা বলেন। প্রকৌশলী দেলোওয়ার বলেন, প্রতি বছর বর্ষার আগে আমরা সেবা সংস্থাগুলোর কাছে শুনি, আগামী বছর জলাবদ্ধতা কমবে। আমরা তাদের কথা বিশ্বাস করি। কিন্তু বর্ষার সময় তাদের আশ্বাস আর আমাদের বিশ্বাস জলাবদ্ধতায় ডুবে যায়। তাই এখানে সরকারকে হস্তক্ষেপ করতে হবে। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ চট্টগ্রাম শাখার সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী দেলোওয়ার হোসেন মজুমদার বলেন, চট্টগ্রাম নগরের প্রকৃতিটা অন্য নগর থেকে একটু ব্যতিক্রম। এখানে বেশি মাত্রায় জোয়ার হলে পানির উচ্চতা বেড়ে নগরে প্রবেশ করে। আগে নগরে অনেক নিচু জায়গা ছিল বলে পানি ধারণ করতে পারত। অতিরিক্ত হারে পানি বাড়ার আগেই আবার ভাটা শুরু হতো। ফলে নগরে পানি কম সময় স্থির থাকত। কিন্তু এখন প্রতিনিয়তই নগরে মানুষ বাড়ছে। অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও যত্রতত্র আবাসন গড়ে তোলার কারণে নগরের উন্মুক্ত এবং জলাধার একেবারেই কমে গেছে। ফলে নগরে পানি ধারণ করার মতো কোনো খোলা স্থান নেই। কমছে নালা-নর্দমা ও ড্রেন। একই সঙ্গে ভরাট ও দখল হচ্ছে খাল। এসব কারণে চরমভাবে সংকুচিত হচ্ছে পানি ধারণ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থা। এসব কারণেই প্রকট হচ্ছে জলাবদ্ধতা। এই নগর পরিকল্পনাবিদ আরও বলেন, আমাদের নাগরিকদেরও কিছু বদঅভ্যাস আছে। তারা নালা-নর্দমা ও ড্রেনকে ডাস্টবিন মনে করে। ফলে নালা-নর্দমা ভরাট হচ্ছে। এ ছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসনে নগরীর তিন সংস্থার কাজের সমন্বয়হীনতাকে দায়ী করেন তিনি। বলেন, অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, নাম কিনতেই প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। ফলে প্রকল্পের সুফল জনগণ পাচ্ছে না। এখানে প্রকল্প নেওয়া হয় অসম্পূর্ণ, অপরিকল্পিত ও ত্রুটিপূর্ণ। এ ছাড়া সমন্বয় হয় না সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যেও। কাজ হয় কিন্তু কাজের সফল সমাপ্তি হয় না। ফলে মেলে না এর সুফল। তাই বলা যায়, এই জলাবদ্ধতা সামগ্রিক অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার ফল।

সর্বশেষ খবর