মঙ্গলবার, ৮ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা
বিজেপি সভাপতি নাড্ডা

আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিজেপির সম্পর্ক ঐতিহাসিক

বিশেষ প্রতিনিধি

আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিজেপির সম্পর্ক ঐতিহাসিক

বিজেপির কেন্দ্রীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা গতকাল নয়াদিল্লির নিজ বাসভবনে ভারত সফররত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) কেন্দ্রীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং জঙ্গিবাদ দমন উন্নয়নে বিজেপি ও আওয়ামী লীগের লক্ষ্য অভিন্ন। দক্ষিণ এশিয়ার দুই ঐতিহ্যবাহী দল এ বিষয়ে একযোগে কাজ করবে।

গতকাল ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির আমন্ত্রণে বর্তমানে আওয়ামী লীগের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল দিল্লি সফর করছে। জে পি নাড্ডা বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের আমলে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এখন এক নতুন উচ্চতায়। দুই দেশের স্বার্থ রক্ষায় বিজেপি ও আওয়ামী লীগ একসঙ্গে কাজ করতে চায়। গতকাল সকালে বিজেপির কেন্দ্রীয় সভাপতি নয়াদিল্লিতে তার নিজ বাসভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেন। বৈঠকে বিজেপি সভাপতি গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশের বিস্ময়কর উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। নয়াদিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশন এসব তথ্য জানিয়েছে।

বৈঠকে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন- আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কেন্দ্রীয় সদস্য মেরিনা জামান ও সংসদ সদস্য এরোমা দত্ত। হাইকমিশন জানায়, ভারতের ক্ষমতাসীন দলের সভাপতি ও প্রবীণ রাজনীতিবীদ জে পি নাড্ডার সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের অত্যন্ত সৌহার্দপূর্ণ ও আন্তরিক পরিবেশে আলোচনা হয়েছে। এতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু স্থান পায়। বৈঠকে বিজেপি সভাপতি বলেন, শেখ হাসিনার সরকারের আমলে শুধু বাংলাদেশেই নয়, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলেও শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। বর্তমান সরকারের আমলে দুই দেশের মধ্যকার বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর সমাধান হয়েছে। সীমান্ত এলাকায় শান্তি বিরাজ করছে, যা দুই দেশের বন্ধুত্বের মাত্রাকে আরও শক্তিশালী করেছে। আমরা দুই দেশের মধ্যকার সরকারের চলমান সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চাই।

বিজেপি সভাপতির এ আশাবাদকে বাস্তবে রূপ দিতে সফররত আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের নেতৃবৃন্দও একই মত প্রকাশ করেন। আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন আসন্ন। এ নির্বাচন বাংলাদেশের মানুষের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, জঙ্গি দমন এবং উন্নয়নে আগামী নির্বাচনের ফলাফল প্রভাব ফেলবে।

বিজেপির পক্ষ থেকে বলা হয়, আমাদের কাছে প্রতিবেশী প্রথম। বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অনেকটা আবেগ ও বন্ধুত্বের। আমাদের মধ্যে সম্পর্কটা ঐতিহাসিক। আমরা চাইব আঞ্চলিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং জঙ্গিবাদ দমনে প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্রের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে। বিজেপির সভাপতির সঙ্গে পূর্ব নির্ধারিত বৈঠকের আগে দিল্লির বিজেপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক বিনোদ তড়ের সঙ্গে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দলের আলাদা বৈঠক হয়। সেখানেও অত্যন্ত খোলামেলা আলোচনায় দুই দেশ ও দুই রাজনৈতিক দলের বন্ধুত্বের বিষয়টি গুরুত্ব পায়। বৈঠকে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বিনোদ তড়ে বলেন, ভারত বাংলাদেশের মধ্যে বর্তমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক যে কোনো সময়ের চেয়ে অন্য মাত্রায়; যা এক সোনালি অধ্যায়। আমাদের দুই বন্ধুপ্রতীম দল সবসময় এ সম্পর্ক অটুট রাখতে কাজ করে যাবে। পরে জাতীয় সংসদ ভবনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. জয়শংকরের সঙ্গেও সফররত আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিদলের বৈঠক হয়। বৈঠকে অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের সরকারপ্রধান শেখ হাসিনার সরকারের আমলে দুই দেশের মধুর সম্পর্ক অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে আলাদা।

সর্বশেষ খবর