রবিবার, ৩ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

চারজন রিমান্ডে চার লাশ হস্তান্তর

এখনো পাঁচজন আশঙ্কাজনক পুলিশের মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জনের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা করেছে পুলিশ। গত শুক্রবার রাতে রমনা থানায় মামলাটি করা হয়। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এখন পর্যন্ত চারজন গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গতকাল আরও চারজনের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল সকালে স্ত্রী-সন্তানসহ কাস্টম কর্মকর্তার লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে ঢাকা জেলা প্রশাসন। পরে মিনহাজ উদ্দিন (২৫) নামে আরও একজনের লাশ শনাক্ত হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাত আরও দুটি লাশ ঢামেক মর্গে রাখা আছে। এ দুটির ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার পর পরিচয় শনাক্ত হলে তা হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এদিকে আগুন লাগার ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিন করে রিমান্ডে নিয়েছে রমনা থানা পুলিশ।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মোহাম্মদ সালমান ফার্সি গতকাল বলেন, বেইলি রোডের আগুনের ঘটনায় এ পর্যন্ত চারজনকে আটক দেখানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদেরকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা হলেন- চুমুক নামক দোকানের দুই মালিক আনোয়ারুল হক ও শফিকুর রহমান এবং কাচ্চি ভাই নামক দোকানের ম্যানেজার জয়নুদ্দিন ও ভবনের ম্যানেজার হামিমুল হক বিপুল। পুলিশ জানায়, বেইলি রোডের আগুনের ঘটনায় করা মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অবহেলাজনিত হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। আর মামলাটি তদন্ত করছেন রমনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু আনসার।

গতকাল ধানমন্ডিতে অভিযান চালিয়ে গ্রিন কোজি কটেজ ভবনের ম্যানেজার হামিমুল হক বিপুলকে আটক করে রমনা থানা পুলিশ। এসি মোহাম্মদ সালমান ফার্সি বলেন, অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা হলেও গ্রেফতার এই চারজনকে পুলিশের মামলায় আটক দেখানো হয়েছে। গ্রিন কোজি কটেজ ভবনটিতে বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টায় আগুন লাগে। এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ৭৫ জনকে।

পুলিশ বলছে, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ২০ জন পুরুষ, ১৮ জন নারী ও ৮ শিশু। এদের মধ্যে ৪৪ জনের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে।

বার্ন ইনস্টিটিউটে এখনো আশঙ্কাজনক পাঁচজন : রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাদের চিকিৎসায় ১৭ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এই মেডিকেল বোর্ডের প্রধান স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন নিজেই। গতকাল বেলা ১১টায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন দগ্ধ এসব রোগীকে দেখতে আসেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। সাংবাদিকদের তিনি জানান, এখানে ১১ জন ভর্তি হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে ছয়জনকে চিকিৎসকরা ছাড়পত্র দিয়েছেন। তাদের শারীরিক অবস্থা ভালো। বাকি পাঁচজনকে ভর্তি রাখা হয়েছে। তাদের অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক। চিকিৎসার জন্য একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী গণভবনে আমাকে ডেকে নিয়ে বলেছেন, এসব রোগীদের বিশেষভাবে কেয়ার নেওয়ার জন্য। তাদের চিকিৎসার খরচ প্রধানমন্ত্রী নিজে বহন করবেন। আমাদের এখানে প্রধানমন্ত্রীর একটা ফান্ড আছে। সেই ফান্ডে বেশ কিছু টাকা পাঠিয়ে দিয়েছেন। তিনি জানান, চিকিৎসাধীন পাঁচজনের শ্বাসনালি ফুলে গেছে। তাদের ফুসফুসে একটু জটিলতা আছে। এ জন্য আমরা তাদের এখনই রিলিজ দিচ্ছি না।

সর্বশেষ খবর