গণ অভ্যুত্থান-সংক্রান্ত জুলাই ঘোষণাপত্রে সবার মালিকানা থাকতে হবে বলে মতামত দিয়েছে বৈঠকে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনগুলো। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সর্বদলীয় বৈঠকে অংশ নিয়ে তারা বলেছেন, বিগত ফ্যাসিবাদ শাসনকালে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠন সবার দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের অবদান ধারাবাহিকভাবে উল্লেখ থাকতে হবে ঘোষণাপত্রে। সেই সঙ্গে এ নিয়ে দলগুলোর ঐক্যে জোর দেওয়া হয়েছে।
ঘোষণাপত্রের রাজনৈতিক ও আইনি কাঠামো স্পষ্ট করার বিষয়েও মতামত দিয়েছেন অংশগ্রহণকারীরা। এজন্য একটি কমিটি গঠন করে গণ অভ্যুত্থানের পক্ষের সব রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনসহ সবার সঙ্গে আরও আলোচনার প্রস্তাবও উঠে এসেছে। পাশাপাশি গণ অভ্যুত্থানের পাঁচ মাস পর এ ধরনের ঘোষণাপত্রের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি।
গতকাল বিকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জুলাই গণ অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনগুলোর সর্বদলীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত টানা বৈঠক চলে। বৈঠক শেষে বেরিয়ে এসে পৃথকভাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সরকারের প্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনের নেতারা। এই বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক কমিটিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শুরুর আগে অনিশ্চয়তা থাকলেও শেষ পর্যন্ত বিএনপির প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। বৈঠক শেষে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, জুলাই গণ অভ্যুত্থানের পক্ষের রাজনৈতিক শক্তি, ছাত্র-জনতা সবার সঙ্গে আরও বেশি আলোচনার ভিত্তিতে, সর্বসম্মতভাবে ঘোষণাপত্র প্রণয়ন করার ওপর সবাই গুরুত্ব দিয়েছেন। বৈঠকে জুলাই গণ অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রণয়ের বিষয়ে সবাই একমত হয়েছেন। সবাই বলেছেন, এ ধরনের একটা ঘোষণাপত্র দরকার; এখানে অনেক পরামর্শ আসছে, মোটাদাগে ঘোষণাপত্রে সবার অবদান বলতে হবে, ধারাবাহিকতা উল্লেখ করতে হবে।’
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘ঘোষণাপত্রের রাজনৈতিক নেইচার বা লিগ্যাল নেইচার কি হবে, সেটা স্পষ্ট করতে হবে।’ রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নিয়ে ঘোষণাপত্র প্রণয়নের বিষয়ে খুব দ্রুত একটা কর্মকৌশল ঠিক করা হবে বলেও জানান তিনি। জুলাই গণ অভ্যুত্থানে সবাই যেভাবে একত্রিতভাবে ফ্যাসিস্ট গণহত্যাকারী শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে, তেমনি সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এই ঘোষণাপত্র তৈরি করতে পারবে বলেও আশা প্রকাশ করেন আসিফ নজরুল। ঘোষণাপত্রের সময়সীমা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘সব রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনের যারা অংশ নিয়েছেন, তারা সবাই বলেছেন, ঐকমত্যের ভিত্তিতে সর্বসম্মতিক্রমে একটি ঘোষণাপত্র তৈরির জন্য। এ জন্য যত সময় প্রয়োজন, নেওয়া যেতে পারে; এটা যাতে অযথা কালবিলম্ব না হয়, সেই মতামতও উঠে এসেছে। আবার অনেকে প্রস্তাব করেছেন, আলোচনা করার জন্য একটি কমিটি গঠন করার। আমরা এই প্রস্তাবগুলো দ্রুত বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’
ঘোষণাপত্র নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে কি না- এমন প্রশ্নে আসিফ নজরুল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনোরকম দূরত্ব সৃষ্টি হয়নি। শুধু কী পদ্ধতিতে ঘোষণাপত্র প্রণীত হবে, তা নিয়ে বিভিন্নরকম মতামত এসেছে। সব মতামতকে আমরা স্বাগত জানাই। কোথাও আমরা অনৈক্যের সুর দেখি না; বরং সবাই বলেছেন, এই ঘোষণায় যেন সবার মালিকানা থাকে, সে দিকে লক্ষ্য রাখতে।’
পাঁচ মাস পর ঘোষণাপত্রের কী প্রয়োজন প্রশ্ন বিএনপির : ‘গণ অভ্যুথানের সাড়ে পাঁচ মাস পর রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিকভাবে জুলাই ঘোষণাপত্রের কী প্রয়োজন ছিল’- এই প্রশ্ন তুলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, জুলাই গণ অভ্যুত্থান সম্পর্কিত ঘোষণাপত্র নিয়ে কিছু আলোচনা হয়েছে, সব রাজনৈতিক দলের নেতা তাদের বিভিন্ন পরামর্শমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা প্রশ্ন করেছি যে, জুলাই গণ অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র আসলেই সাড়ে ৫ মাস পরে কোনো প্রয়োজন ছিল কি না? যদি থেকে থাকে সেটার রাজনৈতিক গুরুত্ব, ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং আইনি গুরুত্ব কী?- সেটা নির্ধারণ করতে হবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আরও বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর আমাদের রাজনৈতিক ঐক্যে যাতে ফাটল না ধরে, সেদিকে দৃষ্টি রাখার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি। আমরা সব রাজনৈতিক দল যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত ছিল, তাদের সবাইকে নিয়ে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে চাই। ফ্যাসিবাদের দোসররা যেন এখন যেকোনো রকমের অনৈক্যের বিজ আমাদের ভেতরে বপন করতে না পারে, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।’
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানে আমরা বৈঠক অংশ নিয়েছি। রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য আমরা আমাদের পরামর্শ তুলে ধরেছি। যদি কোনো রাজনৈতিক দলিল ঐতিহাসিক দলিলে পরিণত হয়, অবশ্যই আমরা সেটাকে সম্মান করি। কিন্তু সেটা প্রণয়ন করতে গিয়ে যাতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, তাদের পরামর্শ নেওয়া হয়, আলোচনা করা হয়, সেই দিকটা আমরা পরামর্শ দিয়েছি।’
ঘোষণাপত্রের বিষয়ে সব দল একমত -জামায়াতে ইসলামী : জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে জানিয়ে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘সব দলই জুলাই ঘোষণাপত্রের বিষয়ে একমত। তবে তাড়াহুড়ো করতে গেলে অভ্যুত্থানের চেতনার ক্ষেত্রে ভুল হতে পারে। এ জন্য এটার কাঠামোগত দিক নিয়ে আরও আলোচনা দরকার। এটা প্রাথমিক আলোচনা।’ তবে ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করতে দুই দিন আগে থেকে সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া খসড়াগুলো অনেকেই সময়মতো পায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা পরামর্শ দিয়েছি সরকারের এমন একটি মূল্যবান দলিল তৈরির পেছনে কোনো অস্থিরতা, অসংগতি বা সমন্বয়হীনতার প্রয়োজন নেই। ধীরস্থিরভাবে আমাদের এই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের জন্য প্রতিটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মতবিনিময় হওয়া দরকার।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আমরা পরামর্শ দিয়েছি, সরকারের এমন মূল্যবান ঘোষণাপত্রের জন্য আরও মতবিনিময় হওয়া দরকার। তবে ঘোষণাপত্রের খসড়ায় অনেক মৌলিক জিনিস বাদ পড়েছে। বাংলাদেশে ইসলামী শক্তি বড় একটি ইসলামী শক্তি, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে তাদের অস্বাধারণ ত্যাগ, বহু মানুষকে শহীদ করা হয়েছে, নিরীহ-নিরপরাধ নেতৃবৃন্দকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে, গুম করা হয়েছে, ক্রসফায়ারে নেওয়া হয়েছে। এই সত্য ইতিহাসগুলো ঘোষণাপত্রের কাঠামোয় স্থান পায়নি। ইতিহাস থেকে এমন মৌলিক বিষয় যেন বাদ না পড়ে, আমরা সেগুলো সরকারের দৃষ্টিতে এনেছি। আমরা বলেছি, প্রক্রিয়াটা এমন হওয়া দরকার যাতে সব দলসহ স্টেকহোল্ডাররা মতামত দিতে পারে।’ বৈঠকে তিনি ছাড়াও অন্যদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হাবিবুর রহমান আজাদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, এহসানুল মাহবুব জুবায়ের উপস্থিত ছিলেন বলে জানান।
গণঅধিকার পরিষদ : গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, ‘এ গণ অভ্যুত্থান কোনো পরিকল্পিত আন্দোলন ছিল না। ৩৬ দিনের আন্দোলনে শেখ হাসিনার পতন হয়নি। এর পেছনে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন হয়েছে। ২০১৮ সালের ঐতিহাসিক কোটা সংস্কার আন্দোলনের মাধ্যমে এর সূত্রপাত। সেসব আন্দোলন ঘোষণাপত্রে সংযুক্ত করতে বলেছি। যে ঘোষণাপত্র দেখানো হয়েছে তা কারা লিখেছে, সে জিজ্ঞাসার কোনো সদুত্তর পাইনি।’
হেফাজতে ইসলাম : হেফাজতে ইসলামের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব জুনাইদ আল হাবীব বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের পরে যে বিপ্লবী সরকার গঠিত হয়েছে, আমরা গত পাঁচ মাসে বিপ্লবী কোনো কিছুই দেখি নাই। পরাজিত শক্তির দোসর এবং তাদের সহযোগী যে যেখানেই আছে প্রত্যেককে ধরে এনে বিচার করতে হবে। আমরা আমাদের মতামত জানিয়েছি। ঘোষণাপত্রে ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের গণহত্যা ও ২০২১ সালে পাখির মতো গুলি করে ওলামায়ে কেরাম হত্যা, হাজার হাজার ওলামায়ে কেরামকে গ্রেপ্তার করে বছরের পর বছর জেলখানায় বিনা বিচারে আটক রাখার বিষয়ও ঘোষণাপত্রে রাখতে বলেছি।’
গণসংহতি আন্দোলন : গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ‘কীভাবে দলিলটি হতে পারে সে বিষয়ে জানিয়েছি। ড্রাফট কমিটি করা দরকার। সবার মতামত যুক্ত করে যথাযথ সময় নিয়ে দলিলটি তৈরিতে আমরা পদ্ধতিগত প্রস্তাব দিয়েছি।’
এবি পার্টি : আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সেক্রেটারি জেনারেল আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, ‘সব দলের একমত হওয়া কঠিন। তবে প্রক্রিয়ার ব্যাপারে, উপকরণের ব্যাপারে একমত হতে হবে। সংবিধান সংস্কার কমিশনকে এ দায়িত্ব দেওয়া যায় কি না সে প্রস্তাব দিয়েছি।’
ইসলামী আন্দোলন : ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব কাজী আতাউর রহমান বলেছেন, ‘ঘোষণাপত্র লিখতে হলে মৌলিক জায়গায় এক হতে হবে। সেটা জানিয়েছি। ছাত্রদের কেন জুলাই বিপ্লব ও ৫ আগস্টের ঘোষণাপত্রের জন্য আলটিমেটাম দিতে হয়, সে প্রশ্ন প্রধান উপদেষ্টাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কেন দূরত্ব তৈরি হচ্ছে সরকারের, এর কারণ খুঁজে দূরত্ব কমিয়ে আনতে বলেছি।’
খেলাফত মজলিস : খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের বলেছেন, ‘ঘোষণাপত্রের ডকুমেন্টসে কিছু ভুলত্রুটি আছে। সেগুলো ঠিক করতে বলেছি। সংবিধান সংশোধন করতে বলেছি।’
খেলাফত আন্দোলন : খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মুফতি ফখরুল ইসলাম বলেছেন, ‘যে ঘোষণাপত্র আসতে চলেছে আমরা তার সঙ্গে একমত। সরকারকে সহযোগিতা করব।’
এনডিএম : এনডিএম মহাসচিব মোমিনুল আমিন বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আগের রাতে যেভাবে আলোচনার জন্য দাওয়াত দেওয়া হয়েছে এটা যেন “ওঠ ছেমড়ি তোর বিয়ে”। প্রতিটি রাজনৈতিক দল এ ব্যাপারে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বলতে আমরা বুঝি সব ছাত্রের অংশগ্রহণ। কিন্তু তা হয়নি। ঘোষণাপত্র দিতে হলে সবার অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করার কথা বলেছি।’
জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আলোচনার জন্য রাজনৈতিক দলগুলো সময় চেয়েছে। সবাই মিলে দ্রুত একটা ঘোষণাপত্রের ব্যাপারে আমরা সবাই একমত হয়েছি। ৩১ তারিখের আগে থেকে এটা নিয়ে আমরা ধৈর্য ধারণ করে যাচ্ছি। প্রয়োজনে সবাইকে আরও কিছুদিন ধৈর্য ধরতে হবে।’ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল বলেন, ‘আমরা ৩১ ডিসেম্বর ঘোষণাপত্র দিতে চেয়েছিলাম। সরকার সবার সঙ্গে আলোচনা করে ঘোষণাপত্র দিতে রাজি হলে আমরা সম্মত হই। আমরা ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ঘোষণাপত্র দেওয়ার আলটিমেটাম দিয়েছিলাম। আশা করেছিলাম সেটা হবে। কিন্তু সরকারকে আমরা এ ব্যাপারে তড়িৎ পদক্ষেপ নিতে দেখিনি। তার পরও আমরা তাদের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছি। আমরা আশাবাদী অবিলম্বে সব দল ও অংশীজনের অংশগ্রহণে জুলাই ঘোষণাপত্র জারি হবে।’
এর আগে বিকালে জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে সর্বদলীয় বৈঠকে যোগ দিতে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পৌঁছেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। রাজনৈতিক দলের নেতাদের আগমনের মধ্যেই পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর আগে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং প্রেস সচিব শফিকুল আলম বৈঠক স্থলে প্রবেশ করেন। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রবেশ করেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান ও যুগ্ম মহাসচিব আশরাফুল আলম, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাসদের (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা এবং গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক। বিকাল পৌনে ৫টার দিকে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এসে পৌঁছান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। বৈঠকে অংশ নেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদেরের নেতৃত্বে তিন সদস্য, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নেতা হাসনাত কাইয়ূম, আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদউদ্দিন মাহমুদ স্বপন, জাতীয় গণফ্রন্টের কামরুজ্জামান। এরই মধ্যে বৈঠকে উপস্থিত হন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল ও মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদ।