বাংলাদেশের আর্থিক খাত সংস্কারে অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের সদ্যনিযুক্ত ভাইস প্রেসিডেন্ট জোহানেস জুট। বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির প্রতিও দৃঢ় সমর্থন ব্যক্ত করেছেন তিনি। সোমবার রাতে ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিশ্বব্যাংকের পক্ষে তাঁর এ অবস্থান তুলে ধরেন জুট। বৈঠকে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের জন্য নিযুক্ত ডিরেক্টর জ্যাঁ পেসমে ও প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন।
অধ্যাপক ইউনূসের উদ্দেশে জোহানেস জুট বলেন, আপনি এবং আপনার দুর্দান্ত টিম চমৎকার কাজ করছেন। বাংলাদেশের প্রতি গভীর ভালোবাসার কথা জানিয়ে জোহানেস জুট ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে তাঁর পূর্ববর্তী দায়িত্বকালের কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশে তরুণদের জন্য সুযোগ তৈরিতে সহায়তা করবে। গত অর্থবছরে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি অর্থায়ন করেছে এবং আগামী তিন বছরেও একই ধরনের সহযোগিতা চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি রয়েছে। তিনি নারীর ক্ষমতায়নে অধ্যাপক ইউনূসের কাজের প্রশংসা করে বলেন, আমরা আপনাকে সমর্থন দিয়ে যাব। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় বাংলাদেশে মেয়েদের শিক্ষাবৃত্তি প্রকল্প চালু হয়েছিল, যা পরে অন্যান্য দেশেও অনুসরণ করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা জুটের সমর্থন ও প্রশংসার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা যখন দায়িত্ব গ্রহণ করি, তখন দেশ ধ্বংসস্তূপের মতো ছিল। আমাদের কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না। তবু সব উন্নয়ন সহযোগী আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। এটা আমাদের অনেক সহায়তা করেছে।’ তিনি বলেন, ‘তরুণরাই আমাদের দেশের কেন্দ্রবিন্দু। আমাদের তাদের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে।’
বাংলাদেশকে শুধু ‘একটি ভৌগোলিক সীমানা’ হিসেবে না দেখে বৃহত্তর অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশ সমৃদ্ধ হলে গোটা দক্ষিণ এশিয়া সমৃদ্ধ হবে। আমাদের একটি সমুদ্র আছে, যা আমাদের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অনেক দেশেই তরুণের সংখ্যা কমে যাচ্ছে, তাই আমরা তাদের বলেছি তাদের কারখানাগুলো এখানে নিয়ে আসুক। আমরা শিল্প খাতে প্রয়োজনীয় সবকিছু সরবরাহ করব, যেন বাংলাদেশ একটি উৎপাদন কেন্দ্র হয়ে ওঠে।’