শুক্রবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

ইনডোর প্লান্টের যত্ন

ঘরদোর পরিপাটি রাখতে গাছপালা আর তাদের সুস্থ রাখতে চাই সঠিক পরিচর্যা। রইল পরামর্শ...

ইনডোর প্লান্টের যত্ন

মডেল : আফরিন ছবি : মনজু আলম

গৃহের কোনে সবুজের ছোঁয়া। যার সজীবতা মন ভালো করে দেয়। বাড়ির আঙিনায়, বারান্দা এমনকি ছাদে প্লান্টের আইডিয়া বেশ পুরনো। আজকাল ঘরের ভিতরেও শোভা পাচ্ছে ছোট ছোট প্লান্ট। আসলে শহরের বুকে জায়গার অভাবে অনেকেরই গাছের শখ পূরণ হয় না। তাই ঘর সাজাতে ইনডোর প্লান্টই ভরসা। সাজও হবে সজীবতাও অটুট থাকবে। তবে এসব প্লান্ট ভালো রাখার জন্য প্রয়োজন সঠিক পরিচর্যার। যেহেতু ইনডোর প্লান্ট ও পরিচর্যা একই পদ্ধতিতে করলে চলবে না। এদের যত্নের ধরন আলাদা আলাদা। আপনার জন্য রইল জরুরি পরামর্শ।

 

কেমন হবে গাছের যত্ন
গাছের পরিচর্যার প্রথম ধাপ গাছের খাবার অর্থাৎ পানি দেওয়া। শুনে কিছুটা সহজ মনে হলেও পানির পরিমাণ ঠিক না থাকলে বিপদ। তাই গাছের পরিমাপ বুঝে পানি দেওয়া প্রয়োজন। কেননা, অতিরিক্ত পানি গাছের ক্ষতির কারণ। গাছের গোড়ায় পানি জমে থাকলে গাছ পচে যেতে পারে। তাই গাছে প্রতিদিন পানি না দিলেও চলবে। আর যিনি প্লান্ট করবেন তাকেই বুঝে নিতে হবে গাছের চাহিদা। পানি দেওয়ার আগে হাত দিয়ে মাটি চেপে দিতে হবে। আর হ্যাঁ, মাটিতে ভিজে ভাব থাকলে পানি দেওয়ার প্রয়োজন নেই। এ ক্ষেত্রে একটি পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। গাছের মাটিতে লম্বা একটি সুচ ঢুকিয়ে তুলে আনুন। যদি সুচে ভিজে মাটি লেগে থাকে তাহলে আর পানির প্রয়োজন নেই।

আর ইনডোর প্লান্টের আরেকটি শর্ত হলো পর্যাপ্ত আলো-বাতাস। যে ঘরে আলো বাতাসের চলাচল রয়েছে সে ঘরে গাছ রাখুন। অন্ধকার ঘর বা খুব রোদ আসে, এমন স্থানে গাছ রাখবেন না। গাছের নতুন চারা বারান্দায় রাখুন। এতে চারা গাছটি ঠিকঠাক বেড়ে উঠবে এবং গাছে ফাঙ্গাসও হবে না। আর যে ঘরে এসি ব্যবহার করেন সে ঘরে গাছ না রাখাই ভালো। এতে গাছের পাতা সহজে ঝরে যেতে পারে। নামে ইনডোর প্লান্ট হলেও গাছ বাড়ন্তের জন্য পর্যাপ্ত আলো, বাতাস এবং পানি প্রয়োজন হয়। তাই কোনো গাছই দীর্ঘদিন ঘরের ভিতর রাখবেন না। মাঝে মাঝে বারান্দা বা ছাদে আলো বাতাসের স্থানে নিয়ে রাখুন। কোন গাছ কতদিন অন্তর বাইরে রাখবেন, কতটা সময় রোদে  দেবেন তা নির্ভর করে গাছের প্রকৃতির ওপর। তাই গাছ কেনার সময় তার পরিচর্যার ব্যাপারেও জেনে নিন।

গাছের বেড়ে ওঠার জন্য মাঝে মাঝে গাছের প্রকৃতি অনুযায়ী সার দেওয়ার প্রয়োজন পরে। তবে বুঝে শুনে সার দিতে হবে। বেশি সার দেওয়ার ফলে গাছ দ্রুত বেড়ে উঠলেও অনেক ক্ষেত্রে কা- হলুদ হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, গাছ তার স্বাভাবিকতা হারায়। এ ক্ষেত্রে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বেশ কযেকবার গাছের গোড়ায় পানি দিন। সার ধুয়ে গেলে সমস্যাও মিটবে। টব সব সময় পরিষ্কার রাখুন। ঝরে পড়া ফুল, শুকনো পাতা টবের মধ্যে যেন জমে না থাকে। এতে গাছ ভালো থাকবে।

গাছের পাতায় ধুলোময়লা বা ঝুল জমলে শুকনো নরম কাপড় দিয়ে হালকা হাতে পাতাগুলো মুছে দিন। উনডোর প্লান্টের ছোট ছোট গাছগুলোয় স্প্রে-বোতলে পানি ভরে স্প্রে করে পরিষ্কার করুন। গাছে কুড়ি ধরলে,  টবের স্থান ঘন ঘন পরিবর্তন করবেন না। এতে গাছের কুড়ি ঝরে পড়তে পারে। একসঙ্গে সব গাছ পরিষ্কার করতে চাইলে ঝড়নার নিচে গাছগুলো রাখুন। তবে পরিষ্কার করার আগে গাছের গোড়ার অংশ ও তার চারদিক প্লাস্টিক দিয়ে মুড়ে দিন। না হলে গাছের মাটি ধুয়ে যেতে পারে। গাছে পোকামাকড় থাকলে পানিতে অ্যাসপিরিন জাতীয় ট্যাবলেট গুঁড়ো করে মিশিয়ে দিন। মিশ্রণটি স্প্রে-বোতলে ভরে গাছের পাতায় মাঝেমধ্যে স্প্রে করে দিন। এটি গাছের ইমিউনিটি বাড়ায়।


লেখা : সাইফ ইমন

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর