শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ডেঙ্গু হলে কী খাবেন?

সামিয়া তাসনিম

ডেঙ্গু হলে কী খাবেন?

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা গত রবিবার পর্যন্ত ৪৩ হাজার ১০৭ জন, আর ডেঙ্গু জ্বরে মারা গেছেন ১৭০ জন। তাই সবাইকে সচেতন হতে হবে। ডেঙ্গু ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে হবে। আর আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হলে অ্যান্টিবডি তৈরি করতে হবে। অ্যান্টিবডি তৈরিতে যে খাবারগুলো সাহায্য করছে সেগুলো খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে বেশি। এই রোগে যারা অলরেডি আক্রান্ত হয়ে গেছেন তাদের যেই সমস্যাগুলো হচ্ছে, সেগুলো দ্রুত ঠিক করতে হলেও আমাদের খাবারের মাধ্যমে করতে হবে। ডেঙ্গুতে রোগীর লিভার আক্রান্ত হয় যেখানে শরীরের জন্য ভারী, তৈলাক্ত এবং মসলাদার খাবার হজম করা কঠিন হয়ে যায়। জ্বরের সময় রোগীদের ক্ষুধা খুব কমে যায়। ডেঙ্গু সংক্রমণের সঙ্গে লড়াই করার জন্য রোগীদের সঠিক খাবার খাওয়ার মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও উন্নত করতে হবে। রোগীদের এবং তাদের পরিবারের উচিত ডেঙ্গুজ্বরের সময় এবং পরে ডায়েট সম্পর্কে যত্ন নেওয়া উচিত যা সুস্থ করতে এবং পুনরুদ্ধারে সহায়তা করে।

ডেঙ্গুর জন্য ডায়েটে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা উচিত : সহজে হজমযোগ্য খাদ্য যেমন সিদ্ধ খাবার, সবুজ শাকসবজি, কলা, আপেল, স্যুপ, দই এবং ভেষজ চা। ইলেক্ট্রোলাইট পুনরুদ্ধার করতে এবং ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধ করতে প্রচুর তরল। যেমন তাজা ফলের রস ডাবের পানি, ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশন (ওআরএস)। ভিটামিন সি যুক্ত খাবার গ্রহণ ডেঙ্গুজ্বরের প্রাকৃতিক নিরাময় হিসেবে কাজ করে। যেমন:- আমড়া, পেঁপে এবং কমলার রস। এছাড়া ডালিমের রস বা কালো আঙ্গুরের রস, সবুজ শাকসবজি (সিদ্ধ) বেশি খেতে হবে। জানতে হবে কোন খাবারে কী কী পুষ্টি উপাদান আছে, আর রোগ প্রতিরোধে কীভাবে সাহায্য করছে। 

এবার জেনে নেই খাবারগুলো কেন খাব...

ডেঙ্গুর কারণে আমাদের শরীর থেকে প্লাজমা লিকেজ হয় এবং ডায়রিয়া হয়, যার কারণে প্রচুর পরিমাণে তরল যেমন কমলার রস, ডাবের পানি, আদা পানি এবং স্যালাইন পানি (ওআরএস) খেতে হবে। এ ছাড়াও আদা জল ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীদের এই রোগের প্রভাব দূর করতে প্রয়োজন। আদা জল বমি বমিভাবের প্রভাবগুলো হ্রাস করতে সাহায্য করতে পারে। ডেঙ্গুতে প্রায়শই ডিহাইড্রেশন হতে পারে এবং ডাবের পানি আপনার শরীরের তরল মাত্রা নিয়ন্ত্রণের অন্যতম সেরা উপায়। পানির প্রাকৃতিক উৎস, প্রয়োজনীয় খনিজ এবং ইলেক্ট্রোলাইট হওয়ায় ডাবের পানি ডেঙ্গু রোগীর ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিপূরক। এই রোগের লক্ষণগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য স্যুপ একটি দুর্দান্ত উপায়। কারণ এটি কম মসলায় হজম এবং অন্ত্রের গতির জন্য ভালো। শাকসবজি এবং ফলের রস, গাজর ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ রয়েছে যা ডেঙ্গুর রোগীর প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করতে পারে। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এটি কোলাজেন উৎপাদনকে ট্রিগার করে এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। কমলা, আনারস, স্ট্রবেরি, পেয়ারা এবং কিউই জাতীয় ফল লিম্ফোসাইটের উৎপাদন বাড়ায় যা ভাইরাল সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এ ছাড়া পেঁপে ডেঙ্গু রোগীদের মধ্যে দ্রুত প্লাটিলেট উৎপাদন ট্রিগার করে।

এড়িয়ে চলতে হবে : ডেঙ্গুর অন্যতম প্রধান লক্ষণ হলো পেটের সমস্যা। নিশ্চিত করুন যে  তৈলাক্ত এবং মসলাদার খাবার খাওয়া চালিয়ে যাবেন না। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ব্যক্তি স্যাচুরেটেড ফ্যাটযুক্ত খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার, চিনিযুক্ত এবং বায়ুযুক্ত পানীয় এড়ানো উচিত। এছাড়া কাঁচা শাকসবজি খাবেন না।

লেখক : পুষ্টিবিদ, ল্যাবএইড, গুলশান, ঢাকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর