মহাস্থানগড়ের সন্নিকটে বগুড়া সদর উপজেলার অন্তর্গত গোকুল এলাকায় প্রায় ৯ একর জায়গা নিয়ে বিস্তৃত পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি। একটি বৈচিত্র্যময়, নৈতিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে প্রাণবন্ত ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে বিশ্ববিদ্যালয়টি কাজ করছে। নতুন শতাব্দীর গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক, ব্যবসায়িক, সামাজিক-রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক প্রশ্নগুলোর সমাধানের জন্য এখানে গবেষণা এবং বৃত্তিকে উৎসাহিত করা হচ্ছে...
দেশের উত্তরাঞ্চলের জ্যেষ্ঠতম প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। মহাস্থানগড়ের সন্নিকটে বগুড়া সদর উপজেলার অন্তর্গত গোকুল এলাকায় প্রায় ৯ একর জায়গা নিয়ে বিস্তৃত এ বিশ্ববিদ্যালয়টি। স্বল্প খরচে মানসম্মত শিক্ষা প্রদানই পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটির উদ্দেশ্য। প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশে মানসম্মত উচ্চশিক্ষা বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
বিশ্ববিদ্যালয়টিতে চারটি অনুষদের অধীনে ১৯টি প্রোগ্রাম চলমান। প্রোগ্রামগুলোর মধ্যে সিএসই, ইইই, সিভিল, ইনফরমেশন ও কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং; বিবিএ, ইংরেজি, বাংলা, ইসলামিক স্টাডিজ (অনার্স) ও এমএ ইংরেজি, ইসলামিক স্টাডিজ; এমবিএ, ইএমবিএ, এমডিএস, এমপিএইচ, বিএড ও এমএড অন্যতম। এ ছাড়াও সম্প্রতি চার বছর মেয়াদি এলএলবি ও জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ (অনার্স) চালু হয়েছে। সমাজবিজ্ঞান ও ফার্মেসিসহ আরও অধিক চাহিদাসম্পন্ন বিভাগসমূহ চালু করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত সবুজেঘেরা ও নিরিবিলি পরিবেশে ২০তলা বিশিষ্ট একটি, পাঁচ তলা বিশিষ্ট তিনটি, এক তলা বিশিষ্ট দুটি একাডেমিক ভবন এবং তিন তলা বিশিষ্ট একটি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ল্যাব ভবন নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। পাশাপাশি আরও রয়েছে ছাত্রছাত্রীদের জন্য আলাদা দুটি হল এবং শিক্ষার্থী পরিবহনে পর্যাপ্ত নিজস্ব পরিবহনব্যবস্থা। এ ছাড়াও এখানে রয়েছে প্রত্যেক বিভাগের প্রয়োজনীয় ল্যাব, প্রায় ১২ হাজার গ্রন্থ সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার, রোবোটিকস ক্লাব, ডিবেটিং ক্লাব, বিজনেস ক্লাব, প্রোগ্রামিং ক্লাব, স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন, কালচারাল ক্লাব, লিটারেচার ক্লাব, স্পোর্টিং ক্লাব ইত্যাদি।
পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির সঙ্গে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, ইনস্টিটিউট ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে শিক্ষা ও বিভিন্ন পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট ইস্যুতে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দি ইউনিভার্সিটি অব মিশিগান ফ্লিন্ট, দি গ্লোবাল হেলথ অ্যাকাডেমিক, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, দক্ষিণ কোরিয়ার কিয়ংডং ইউনিভার্সিটি গ্লোবাল ক্যাম্পাস, ভারতের ব্যাঙ্গালোর ভিত্তিক (AIMS) আচারিয়া ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড সায়েন্স এবং আয়ারল্যান্ড ভিত্তিক (AIMS) আসেম এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্স হাব ফর লাইফ লং লার্নিং।
পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটিতে বর্তমানে বিভিন্ন প্রোগ্রামে ২ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। এ ছাড়াও প্রায় ৩ হাজার শিক্ষার্থী কৃতিত্বের সঙ্গে তাদের কোর্স সম্পন্ন করেছেন। কোর্স সমাপ্তকারীদের অধিকাংশ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী বিদেশে স্কলারশিপ নিয়ে উচ্চশিক্ষার উদ্দেশে গমন করেছেন। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দক্ষ শিক্ষকমণ্ডলীও উচ্চতর শিক্ষার জন্য বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তিলাভ করছেন। সম্প্রতি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সম্মানিত চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. হোসনে আরা বেগমের আন্তরিক প্রচেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
একটি বৈচিত্র্যময়, নৈতিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে প্রাণবন্ত ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। নতুন শতাব্দীর গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক, ব্যবসায়িক, সামাজিক-রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক প্রশ্নগুলোর সমাধানের জন্য পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি গবেষণা এবং বৃত্তিকে উৎসাহিত করে থাকে। এখানে জ্ঞানের সব শাখায় শিক্ষার সঙ্গে নৈতিক ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধকে একীভূত করে শেখার অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করা হয়। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের আত্মমূল্যায়ন, আত্মশৃঙ্খলা এবং দায়িত্ববোধ জাগিয়ে তুলতে বিশেষ নজর দেওয়া হয়। স্নাতকদের আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যথাযভভাবে দক্ষ ও অভিজ্ঞ করে গড়ে তোলাই এ প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য। এখানে আছে অভিজ্ঞ ও যোগ্য পূর্ণকালীন ফ্যাকাল্টি মেম্বার। এ ছাড়া মানসম্মত উন্নত পাঠদানের জন্য দেশের প্রথিতযশা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে খণ্ডকালীন ফ্যাকাল্টি মেম্বার নিয়োগ দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর জন্য ইংরেজি দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি এবং কম্পিউটার দক্ষতা উন্নয়ন প্রোগ্রাম চালু রয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজিটালইজড গ্রন্থাগারসহ সমৃদ্ধ বই এবং জার্নালে রয়েছে শিক্ষার্থীদের অনলাইন অ্যাক্সেস। ই-লার্নিং রিসোর্সের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শেখার অসুবিধা দূর করার জন্য আনুষ্ঠানিক পরামর্শ/টিউটোরিয়াল সেশন এবং মেক-আপ ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এখানে স্টুডেন্ট কাউন্সেলিং, ক্যারিয়ার গাইডেন্স এবং প্লেসমেন্ট পরিষেবা বিদ্যমান। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে আধুনিক বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ও সুসজ্জিত ল্যাবরেটরিসহ আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব রয়েছে। ইইই এবং সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ব্যবহারিক শিক্ষা ফলপ্রসূ করতে রয়েছে অত্যন্ত মানসম্পন্ন ল্যাবরেটরি ও ক্যাম্পাসে ফ্রি ওয়াইফাই সুবিধা। এ ছাড়া শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে মানসম্পন্ন দৃষ্টিনন্দন ক্যাফেটেরিয়া। পুণ্ড্র বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাতীয় ও বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ক্রেডিট ট্রান্সফার সুবিধা রয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষগুলো অত্যন্ত আধুনিক শিক্ষা উপকরণ মাল্টিমিডিয়া সমৃদ্ধ। আইন বিভাগসহ ১৩টি বিভাগের Outcome Based Education Curriculum (OBEC) ইউজিসি থেকে অনুমোদন লাভ করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যা পূর্বের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার ফলে পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠানে তাদের ক্যারিয়ার গঠনের সুযোগ পাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং ছাত্রী হল সংস্কার করার ফলে শিক্ষার্থীরা স্বল্প ব্যয়ের আবাসন সুবিধা রয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএমএসএসের অর্থায়নে ১২টি গবেষণা প্রকল্প বাস্তবায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। গবেষণা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্র তৈরি হবে এবং টিএমএসএসের আওতাভুক্ত এলাকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠী অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি প্রফেসর ড. হোসনে আরা বেগম বলেন, ‘পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির পৃষ্ঠপোষক অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান টিএমএসএসের সার্বিক পরামর্শও দিকনির্দেশনা এবং সাহায্য-সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সমস্যা ও চ্যালেঞ্জগুলো পর্যায়ক্রমে সমাধানে আমরা আশাবাদী। পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিশেষ করে অবহেলিত উত্তর জনপদের সব শ্রেণি-পেশার জনগোষ্ঠীর ছেলেমেয়েদের মানববিদ্যা, ব্যবসায় প্রশাসন শিক্ষাসহ আধুনিক প্রযুক্তি সংবলিত উচ্চশিক্ষার একটি অপার সম্ভাবনার পীঠস্থান হিসেবে দেশ ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে স্থান পাবে।’ সুন্দর ও কল্যাণকর সমাজ বিনির্মাণে শিক্ষা একটি অপরিহার্য বিষয়। দেশের ক্রমবর্ধমান চাহিদার প্রেক্ষাপটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারণা দেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সে ধারাবাহিকতায় দেশের উত্তরজনপদে মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে তাদের দক্ষ মানব সম্পদে উন্নীত করার লক্ষ্যে পিইউবি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং টিএমএসএসের প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর ড. হোসনে আরা বেগম, অশোকা ফেলো, পিএইচএফ অ্যান্ড একেএস নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।