রোহিত ভেমুলার আত্মহত্যার পরে মোদী সরকারকে ‘দলিত বিরোধী’ তকমা দিয়েছিল বিরোধীরা। সেই তকমা ঝেড়ে ফেলতে মঙ্গলবার গরিব ও দলিতদের মন জয়ের চেষ্টা করলেন নরেন্দ্র মোদী।
পাখির চোখ থাকল ন’মাস পরের উত্তরপ্রদেশের ভোটের উপর। যে রাজ্যে পাঁচ ভাগের এক ভাগ ভোটার দলিত। অন্য সব রাজ্যের থেকে বেশি।
তফসিলি জাতি-উপজাতির উদ্যোগপতি ও ব্যবসায়ীদের জন্য ঋণ বন্দোবস্তে ‘স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়া’র আনুষ্ঠানিক সূচনা করতে দিল্লির সীমানা পেরিয়ে মঙ্গলবার উত্তরপ্রদেশের নয়ডায় গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দিনটিও বেছে নেওয়া হয়েছিল প্রয়াত দলিত নেতা বাবু জগজীবন রামের জন্মদিবসটি মনে রেখে।
দলিত বিরোধী ও ‘স্যুট-বুট কি সরকার’-এর তকমা ছেড়ে মোদী প্রথমেই অনুষ্ঠান মঞ্চের পাশে সাজানো বাবু ভাইয়ের চায়ের দোকানে স্থানীয় রিকশওয়ালা, শ্রমিক, মজুরদের সঙ্গে আড্ডায় বসলেন। যোগ দিতে হল অরুণ জেটলি, রাজ্যপাল রাম নাইককে।
এই অনুষ্ঠানেই ৫১০০ জনকে ই-রিকশা দেওয়া হয়। এই সব ‘ইলেক্ট্রনিক’ বা ই-রিকশা মোবাইলের ওলা-অ্যাপস থেকেই ডেকে নেওয়া যায়। ভাড়া মিটিয়ে দেওয়া যায় মোবাইলের ফ্রিচার্জ অ্যাপস থেকে। মোদীও তাই করলেন।
মোবাইল থেকে ‘রিকশা’ ডেকে মন্ত্রীদের সাথে তাতে চড়েই মঞ্চে পৌঁছলেন। তারপর ভাড়াও মেটালেন অ্যাপস থেকে। রিকশার সঙ্গে রেডিও-ও দেওয়া হলো বিনামূল্যে, যাতে সকলে প্রধানমন্ত্রীর ‘মন কি বাত’ শুনতে পারেন।
‘স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়া’ প্রকল্পে তফসিলি জাতি-উপজাতি ও মহিলা উদ্যোগপতিদের নতুন বিনিয়োগের জন্য ১০ লক্ষ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হবে। প্রতিটি ব্যাঙ্কের শাখা থেকে এই প্রকল্পে অন্তত দু’টি নতুন লগ্নির জন্য ঋণ দিতে হবে।
মোদী বলেন, ‘‘দলিত ও গরিব মানুষকে সুযোগ দিলে তাঁরাই দেশে আমূল সংস্কার আনতে পারে। সেটাই আমার দৃষ্টিভঙ্গি। এতদিন যাঁরা চাকরি চাইতেন, তাঁরাই যাতে অন্যদের চাকরি দিতে পারেন, সেই সুযোগই তৈরি করতে চাইছি।’’
এদিকে সাজানো চায়ের দোকানে রিকশাওয়ালাদের সঙ্গে মোদীর আড্ডা দেখে কংগ্রেস বলছে, সবটাই আসলে সাজানো। মানুষ বারবার ধোঁকা খাবে না। কিন্তু বিজেপি নেতারা বলছেন, লোকসভায় উত্তরপ্রদেশে ৮০টির মধ্যে ৭১টিই জিতেছিল বিজেপি। লখনউয়ের মসনদ দখলে দলিত ভোট সঙ্গে থাকাটা জরুরি। মোদী সেই চেষ্টাই শুরু করে দিয়েছেন।
বিডি-প্রতিদিন/০৬ এপ্রিল, ২০১৬/হিমেল