কয়েকদিন আগেই ভারতের উড়িষ্যার কালাহান্ডির দানা মাঝির কাহিনী সারা দেশকে লজ্জিত করেছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অ্যাম্বুলেন্স দিতে অস্বীকার করায় দরিদ্র দানা মাঝি নিজের স্ত্রীর লাশ কাঁধে তুলে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ার দুনিয়ার সেই ঘটনার সাক্ষী হয়েছিল গোটা ভারত। সেই ঘটনার রেশ কাটতে কাটতে না কাটতেই আরও এক অমানবিক ঘটনা সেই ওড়িষ্যাতে। অ্যাম্বুলেন্স নিতে অস্বীকার করায় সাত বছরের শিশুকন্যার লাশ কোলে নিয়ে প্রায় ছয় কিলোমিটার পথ হাঁটলেন শোকার্ত বাবা-মা।
শারীরিক অসুস্থতার দুইদিন দিন আগে মালকানগিরি মিথালি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় বর্ষা খেমেডু(৭)-কে। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় শুক্রবার দুপুরের দিকে তাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল মালকানগিরি জেলা হাসপাতালে। কিন্তু পথেই অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে মৃত্যু হয় বর্ষার। এ কথা জানার পরই চালক বর্ষার লাশ নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স থেকে নেমে যেতে বলা হয় তার বাবা-মাকে। উপায় না দেখে মেয়ের লাশ কোলে করেই হাঁটতে থাকেন বর্ষার বাবা-মা। চোখের সামনে সেই দৃশ্য দেখার পরই স্থানীয় বাসিন্দারা যোগাযোগ করেন স্থানীয় ব্লক ডেভলপমেন্ট অফিসার (বিডিও) এবং স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে।
বর্ষার বাবা দীনবন্ধু খেমেডু জানান বর্ষার মৃত্যু হয়েছে জানতে পেরেই চালক আমাদের গাড়ি থেকে নেমে যেতে বলেন। বিষয়টি জানাজানি হতেই মালকানগিরি জেলা কালেক্টর কে. সুদর্শন চক্রবর্তী জেলার মুখ্য জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (সিডিএমও) উদয় শঙ্করকে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সিডিএমও এই ঘটনায় অ্যাম্বুলেন্সের চালক ছাড়াও অ্যাম্বুলেন্সের ভিতরে থাকা এক ফার্মাসিস্ট ও অ্যাটেন্ডেন্টের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছেন।
জেলা কালেক্টর জানান, ‘এই ঘটনা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং এটা চালকের অপরাধ মূলক গাফিলতি। যারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে’।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬/ আফরোজ