প্রযুক্তির অপব্যবহার মানব জাতীর জন্য কতোটা বিপদজনক হতে পারে তা বলা দায়! যদিও বলা হয়ে থাকে মানবকল্যাণের জন্যই প্রযুক্তি। কিন্তু চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী। চোর মানবকল্যাণ নয়, নিজের 'কল্যাণ' নিয়েই সদা ব্যস্ত। নিজের 'কল্যাণে' প্রযুক্তি ব্যবহারে সে একটু বেশিই কৌশলী। এমনই কাণ্ড ঘটিয়েছেন এক সৌদি নাগরিক। কারাগারে চেতনানাশক মাদক বড়ি এবং গাঁজা পাচারে ব্যবহার করেছেন একটি ছোট্ট ড্রোন।
রিমোট কন্ট্রোল নিয়ন্ত্রিত ওই ড্রোনের করে কারাগারে পাঠানো হয় ১৯৯৭ টি চেতনানাশক মাদক বড়ি এবং ১১৫ গ্রাম গাঁজা। প্রায় আড়াই বছর আগে জেদ্দার কেন্দ্রীয় কারাগার ব্রিমান-এর ৭ ও ৮ নম্বর ব্যারাকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই সৌদি নাগরিককে দ্রুতবিচার আদালত ১৫ বছরের জেল এবং ১৫০০টি বেত্রাঘাতের সাজা দিয়েছে। অবশ্য এটাকে গুরুতর অপরাধ আখ্যা দিয়ে মূলহোতার মৃত্যুদণ্ড চেয়েছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
একজন লেবানিজ নাগরিক ওই সৌদি পাচারকারীর কাছে ড্রোনটি বিক্রি করেছিল। এজন্য তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড, এক হাজার বেত্রাঘাত এবং কারাভোগ শেষে সৌদি আরব থেকে বহিষ্কারের আদেশ দিয়েছে আদালত। এ ঘটনায় জড়িত দুই কারারক্ষীসহ আরও সাতজনকে তিন থেকে ১০ বছর মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। দুই কারারক্ষীর বিরুদ্ধে মাদক পাচারে সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়। ড্রোনটি ৭ ও ৮ নম্বর ব্যারাকের ছাদে নামার আগে পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে উড্ডয়নরত দেখতে পান কারাগারের কন্ট্রোল টাওয়ারের প্রহরী।
চার পাখার ড্রোনটি ছিল ৪৫ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ৪৫ সেন্টিমিটার চওড়া। চীনে তৈরি ড্রোনটি কারাগারের নিকটবর্তী একটি জায়গা থেকে রিমোট কন্ট্রোলে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছিল। জানা গেছে, পাশের একটি সুপার মার্কেট থেকে ড্রোনটি উড়ানো হয়। মূল আসামির দুই ভাই ড্রোনটি চালাচ্ছিল। মূলহোতা ওই কয়েদী এসব চেতনানাশক মাদক বড়ি এবং গাঁজা অন্য কয়েদীদের কাছে বিক্রি করতো। একটি নির্দিষ্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মূল্য পৌঁছে যেত। ছাদে ঘুরতে যাওয়ার সুযোগে অন্য কয়েদীরা ড্রোনটি আনা-নেয়ায় ওই কয়েদীকে সাহায্য করতো।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই লেবানিজ নাগরিক প্রতিটি ৪০০০ থেকে ৫০০০ রিয়ালে এ ধরনের আরও ১৩টি ড্রোন বিক্রি করেছিল। আর পাচার চক্রের সদস্যদের কাছ থেকে দুই লাখ রিয়ালও পাওয়া গেছে। অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, ওই কয়েদী আগের একটি মাদক পাচারের মামলায় ১৫ বছরের সাজা ভোগ করছে। এসময় কারাগারে বসেই অভিনব কায়দায় তার মাদক ব্যবসা চালিয়ে গেছে।
সূত্র: সৌদি গেজেট ও আল-আরাবিয়া
বিডি-প্রতিদিন/এ মজুমদার