দেড় মিনিটের জন্য ‘মৃত্যু’ হয়েছিল রূপায়ণ রায়ের। তার পরেও জীবনে ফিরলেন। পথ দুর্ঘটনায় ‘ব্রেন ডেথ’ হয়ে যাওয়া এক তামিল যুবকের হৃদযন্ত্র নিয়েই আপাতত সুস্থ ভারতের এন্টালির ট্যাংরার বাসিন্দা ৪২ বছরের রূপায়ণ। সম্ভবত তিনিই প্রথম বাঙালি, যার হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপিত হল।
দৈনন্দিন কাজ করতে গিয়ে হাঁপিয়ে উঠতেন তিনি। ছেলেকে কোলে তুলে খেলা করতে গিয়েও অসুস্থতা অনুভব করতেন রূপায়ণ। একাধিক চিকিৎসককে দেখালে ধরা পড়ে, হৃদযন্ত্রের রক্ত সঞ্চালক ধমনী ও শিরাগুলি স্বাভাবিকের তুলনায় বড়। ফলে প্রয়োজনের মাত্র ২০ শতাংশ রক্ত সঞ্চালন হতো শরীরে। দিল্লির এইমস ও একটি বেসরকারি হাসপাতালের পরামর্শমতো গত জুলাইয়ে চেন্নাইয়ে এক বেসরকারি হাসপাতালে হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। সেখানেই ঘর ভাড়া নিয়ে হৃদযন্ত্রের দানের অপেক্ষায় থাকতে শুরু করেন রূপায়ণ ও তার স্ত্রী জয়তী।
শুরু হয় অপেক্ষা। রূপায়ণ জানান, পরপর দু’দিন হৃদযন্ত্র জোগাড় হলেও শেষমুহূর্তে তা বাতিল হয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘‘৩১ জুলাই একটি শপিংমলে ছিলাম। ফোন করে দ্রুত হাসপাতালে যেতে বলা হয়। রাতেই ভেলোর থেকে চেন্নাইয়ের হাসপাতালে গ্রিন করিডর করে দেড়ঘণ্টায় আনা হয়েছিল হৃদযন্ত্র। প্রতিস্থাপিত হয় আমার শরীরে।’’
আপাতত ভাল আছেন জীবনবিমা নিগমের কর্মী রূপায়ণ। হাসপাতাল সূত্রের খবর, ২০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দীর্ঘসময় ধরে অস্ত্রোপচার করেন। গত ২৩ অাগস্ট রূপায়ণকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়। গত সেপ্টেম্বর মাসে তিনি কলকাতায় ফেরেন। জয়তী বলেন, ‘‘আমরা ওই যুবকের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার পরিচয় না দেওয়ায় সম্ভব হয়নি। ওই যুবক আমাদের কাছে প্রভু।’’
বিডি প্রতিদিন/৭ ডিসেম্বর ২০১৬/হিমেল