যুক্তরাজ্যের আদালতে দাঁড়িয়ে মৌখিকভাবে ধর্ষণের বর্ণনা দিতে হবে না বলে জানিয়েছেন দেশটির বিচারমন্ত্রী এলিজাবেথ ট্রুস । সম্প্রতি দেশটিতে ধর্ষণ প্রতিরোধ আইনে এমনি সংশোধনী আনা হয়েছে।
বিচারমন্ত্রী জানিয়েছেন, অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য এখন আর ধর্ষিতাকে আদালতে দাঁড়িয়ে প্রমাণ দিতে হবে না। তার বক্তব্য আগেই রেকর্ড করে বিচারচলাকালীন জুরিদের শোনানো/দেখানো হবে। আগামী সেপ্টেম্বর থেকেই এটি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।যদিও আইনটি সংশোধনে জ্যেষ্ঠ বিচারকদের সম্মতি মিলেছে এবং তা কার্যকর করার পথে অনেকখানি এগিয়ে গেছে।তবে আগামী বছরের আগে আর এই প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে না।
মন্ত্রী ট্রুস বলেন, যৌন অপরাধ এবং অপরাধের শিকারদের ব্যাপারে মনোভাব পাল্টেছে। বর্তমানে ধর্ষণের মামলা রেকর্ড সংখ্যক হারে বাড়ছে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যৌন নিপীড়নের শিকার ব্যক্তির বিচার পাওয়ার পথটি আরো দ্রুত এবং যতোটা সম্ভব কম পীড়াদায়ক হোক।তিনি আরো বলেন, এই প্রক্রিয়ায় সুষ্ঠু বিচার পাওয়ার অধিকার ক্ষুণ্ণ হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। বরং এতে করে নিপীড়নের শিকার ব্যক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে এবং এবং তথ্য প্রমাণ পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে।
অন্যদিকে বিচার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ ব্যাপারে একটি সফল পাইলট প্রজেক্টের পরই তারা আইন সংশোধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। একটি শিশু যৌন হয়রানির ঘটনায় দেখা গেছে এই পদ্ধতিতে অর্থাৎ বিচারকের সামনে দাঁড়ানোর আগেই ধর্ষিতাকে আলাদা করে জবানবন্দি নিলে সে কম চাপ অনুভব করে এবং ঘটনা ঠিকঠাক মনে করতে পারে। এতে করে সঠিক তথ্য পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।একই সাথে ইন্টারনেটে শিশু যৌন নিপীড়নকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান পরিচালনার অঙ্গীকারও করেছেন মন্ত্রী ট্রুস।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশসহ অনেক দেশেই ধর্ষণ মামলার বিচার ধর্ষিতার জন্য রীতিমতো অস্বস্তিকর ও অপমানজনক বলে মনে করেন মানবাধিকার কর্মীরা। বিচারের সময় একজন ধর্ষিতাকে পুরুষ চিকিৎসকের কাছে গিয়ে মেডিকেল টেস্ট দিতে হয়। শুধু তা-ই নয়, ভরা এজলাসে বিচারকের সামনে প্রমাণ স্বরূপ তাকে ধর্ষণের আগাগোড়া বর্ণনা দিতে হয়। এতে করে ধর্ষিতা কার্যত দ্বিতীয়বার ধর্ষণের শিকার হয় বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
সূত্র: দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট