মিয়ানমারের আরাকানে রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে ঝড় উঠেছে বিশ্ব গণমাধ্যমে। তবে এই ইস্যুতে দেশটির প্রধান শহর ইয়াঙ্গুনে বসবাসকারীদের দৃষ্টিভঙ্গি পুরোপুরি ভিন্ন। রাখাইন রাজ্যে চলমান সংকট নিয়ে তাদের সাথে আলোচনা করলে 'রোহিঙ্গা' শব্দটিই শোনা যাবে না।
ইয়াঙ্গুনবাসীদের মতে, রোহিঙ্গারা হচ্ছে 'বিদেশি', বাংলাদেশ থেকে আসা অভিবাসী। যাদের ভাষা ও সংস্কৃতি আলাদা।
এ ব্যাপারে একজন নারী বললেন, "তারা লেখাপড়া শেখে না, তাদের কোনো চাকরিও নেই। তাদের প্রচুর বাচ্চাকাচ্চা। আপনার প্রতিবেশীর যদি অনেক বাচ্চা থাকে এবং সব সময় চেঁচামেচি করতে থাকে - আপনি কি তা পছন্দ করবেন?"
এছাড়া স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে 'সন্ত্রাসী আক্রমণ' এবং সহিংসতার কারণে যে 'অ-রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী' বাড়িঘর হারিয়েছে, তার ওপরও জোর দেওয়া হয়। বিভিন্ন শহরে 'আরসা চরমপন্থী বাঙালি সন্ত্রাসীদের' আক্রমণ বা 'বড় আক্রমণের পরিকল্পনা' করছে - এমন খবরও এখানকার পত্রিকায় এসেছে।
এসব খবরে বলা হচ্ছে, সেনাবাহিনী নয় বরং 'জঙ্গী গ্রুপগুলোই গ্রাম পুড়িয়ে দিচ্ছে' এবং রোহিঙ্গারা যে বাংলাদেশে পালিয়ে যাচ্ছে এ কথার কোনো উল্লেখ এসব রিপোর্টে থাকে না। এদিকে মিয়ানমারের জাতীয়তাবাদী গ্রুপগুলো প্রচার করছে, 'রোহিঙ্গা মুসলিমরা একটি হুমকি, কারণ তারা চার স্ত্রী এবং বহু সন্তান নিতে পারে। ' এ বিষয়ে রাখাইনে অনেকে মনে করেন, জনসংখ্যা বাড়লে তারা একদিন তাদের সব জমি নিয়ে নেবে।
অবশ্য এমনও অনেকে আছেন, যারা রোহিঙ্গাদের দুর্দশার প্রতি সহানুভুতিশীল যদিও তারা বেশি কথা বলতে চান না। একজন ট্যাক্সি ড্রাইভার বলছিলেন," আমার মনে হয় অনেক বাঙালি মুসলিম মারা গেছে। আমার ধারণা সরকারি বাহিনী তাদের অনেককে হত্যা করেছে, কারণ কিছু এলাকা আছে যেগুলো দুর্গম বা বিচ্ছিন্ন।"
সূত্র: বিবিসি বাংলা
বিডি-প্রতিদিন/১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭/ওয়াসিফ