বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের একটি ভারতের তাজমহল। আগ্রার এই ঐতিহাসিক সৌধটিকে ভারতীয় সংস্কৃতির প্রতীক বলে মনে করেন অনেকেই। তবে আগ্রার তাজমহলকে অবশ্য একেবারেই গুরুত্ব দিতে নারাজ খোদ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। বস্তুত, ভারতে সফরে আসা বিদেশী রাষ্ট্রপ্রধানদের তাজমহলের রেপ্লিকা দেওয়ারও বিরোধিতা করেছেন তিনি। কারণ, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন, তাজমহল ভারতীয় ঐতিহ্যের প্রতীক নয়। আর এবার যোগী জমানায় উত্তরপ্রদেশের দ্রষ্টব্য স্থানের তালিকা থেকেও বাদ পড়ল তাজমহল!
তাজমহল শুধু একটি সৌধ নয়, একটুকরো ইতিহাসও বটে। স্ত্রী মমতাজ মহলের মৃত্যুর পর, তার স্মৃতিতে আগ্রায় যমুনার তীরে একটি স্মৃতিসৌধ তৈরি করেছিলেন মোঘল সম্রাট শাহজাহান। সেই স্মৃতিসৌধটি তাজমহল নামে পরিচিত। কালে কালে তাজমহল হয়ে উঠেছে চিরন্তন প্রেমের প্রতীক। ভারতীয় সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। মোঘল আমলের এই স্থাপত্যটিকে বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের তালিকায় স্থান দিয়েছে ইউনেস্কো। শুধুমাত্র তাজমহল দেখার জন্য, প্রতি বছর আগ্রায় ভিড় করেন দেশি-বিদেশি পর্যটকরা। এমনকি, ভারত সফরে এসে তাজমহল দর্শনে যান ভিনদেশী রাষ্ট্রপ্রধান-সহ বিভিন্ন হাইপ্রোফাইল ব্যক্তিত্বরাও। কিন্তু, সেই তাজমহলকেই রাজ্যের দ্রষ্টব্যস্থানের সরকারি তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দিল উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথের সরকার!
জানা গেছে, সম্প্রতি রাজ্যের সমস্ত দ্রষ্টব্যস্থানের নাম ও ছবি-সহ একটি বুকলেট প্রকাশ করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। সেই বুকলেটে তাজমহলের নাম নেই। কিন্তু, কেন বাদ পড়ল তাজমহল? তা নিয়ে অবশ্য উত্তরপ্রদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
শুধু ভারতেই নয়, সারা বিশ্বের পর্যটন মানচিত্রে তাজমহলের গুরুত্ব অপরিসীম। তবে ভারতের যে রাজ্যে এই সৌধটি রয়েছে, সেই উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ কোনোদিনই তাজমহলকে গুরুত্ব দেননি। মানে গুরুত্ব দিতে চাননি। উত্তরপ্রদেশে যোগী জমানায় প্রথম বাজেট বক্তৃতায় কালচারাল হেরিটেজ বিভাগে স্থান পায়নি তাজমহল। এমনকি, ভারতে সফরে আসা ভিনদেশী রাষ্ট্রপ্রধানদের উপহার হিসেবে তাজমহলের রেপ্লিকার পরিবর্তে গীতা বা রামায়ণ দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছিলে্ন যোগী আদিত্যনাথ।
এদিকে তাজমহলকে বাদ দিয়ে আদিত্যনাথ রাজনীতি করছেন বলে ক্ষোভ দেখিয়েছেন বিরোধীরা।
বিডি প্রতিদিন/০৩ অক্টোবর ২০১৭/এনায়েত করিম