মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই ধাপে ধাপে অভিবাসন নীতিকে শক্ত করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশেষ করে অবৈধ অভিবাসী ঠেকাতে সব সময়ই তৎপর ট্রাম্প প্রশাসন। সেই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালের শুরু থেকে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে আমেরিকায় প্রবেশের অপরাধে আটককৃতদের সংখ্যা ১৭ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থায় পৌঁছায়।
এ ব্যাপারে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের তৎকালীন মন্ত্রী জন কেলির দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ট্রাম্প যখন হোয়াইট হাউজে প্রবেশ করেন তখন এই সংখ্যা ছিল ১১ হাজার ১২৭। অবৈধ অভিবাসী প্রবেশের সংখ্যা হ্রাসের নেপথ্যে ট্রাম্পের অভিবাসন সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশকে কারণ হিসেবে তুলে ধরেছিলেন জন কেলি।
ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগের মাস অর্থ্যাৎ ২০১৬ সালের অক্টোবরে এ সংখ্যা ছিল ৬৬ হাজার। এটা ক্রমশ কমছিল। ২০১৭ সালের এপ্রিলে এ সংখ্যা ছিল ১৫ হাজার ৭৬৬। কিন্তু এরপরই চিত্র পাল্টাতে থাকে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে এ সংখ্যা বেড়ে হয় ৪০ হাজার ৫১৩। জানুয়ারি এ সংখ্যা কিছুটা কমেছে, ৩৫ হাজার ৮২২। তবে এ সংখ্যা ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য অবশ্যই স্বস্তির নয়। এরই মধ্যে ‘ট্রাম্প ইফেক্ট’ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের অবৈধ অভিবাসন নীতি ক্ষণস্থায়ী বলে প্রমাণিত হচ্ছে।
এপ্রিলের শুরুতে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ জানিয়েছে, সীামান্ত রক্ষী বাহিনী গত মার্চে ৩৭ হাজার ৩৯৩ জন মানুষকে অবৈধ সীমান্ত পারাপারের সময় আটক করেছে। গত বছরের চেয়ে এই সংখ্যা ২০০ শতাংশেরও বেশি। অন্যদিকে, অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সময় আটককৃত একাকী শিশুদের সংখ্যা বেড়েছে ৩০০ শতাংশ। অপরদিকে আটককৃত পরিবারের সংখ্যা বেড়েছে ৭০০ শতাংশ। এ খবর দিয়েছে দ্য ইকোনমিস্ট।
উল্লেখ্য, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বলছে, প্রত্যাবর্তনের উদ্দেশ্যে সর্বোচ্চ ৩৯ হাজার অভিবাসীকে আটক রাখার সামর্থ্য তাদের রয়েছে। ট্রাম্প এই সংখ্যাকে ৪৮ হাজারে উন্নীত করতে চান। তবে কয়েক দশক ধরে কার্যকর একটি রায় মোতাবেক, অভিবাসন কর্তৃপক্ষ একাকী শিশুদেরকে সর্বোচ্চ ২০ দিন আটক রাখতে পারবে। এরপর তাদেরকে যুক্তরাষ্ট্রে তার কোনো পরিবারের সদস্য বা স্পন্সরের কাছে হস্তান্তর করতে হবে।
আইনানুযায়ী, যেসব আশ্রয়প্রার্থীকে দেশে ফেরত পাঠালে তার ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তাকে অবশ্যই মুক্তি দিতে হবে, যদি না তিনি কোনো নিরাপত্তা হুমকির কারণ হন।
সূত্র: লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস ও দ্য ইকোনমিস্ট।
বিডি প্রতিদিন/১৫ এপ্রিল ২০১৮/ওয়াসিফ