গোপন দলিলপত্র ফাঁস করে আলোচিত ওয়েবসাইট উইকিলিকসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে ব্রিটেনের পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
বৃহস্পতিবার লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাস থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গত সাত বছর ধরে ইকুয়েডরে রাজনৈতিক পুনর্বাসনে ছিলেন অ্যাসাঞ্জ।
বৃহস্পতিবার হঠাৎ তার মাথার ওপর থেকে হাত তুলে নেয় ইকুয়েডর। ইকুয়েডরের সাবেক প্রেসিডেন্ট রাফাল করিয়ার চোখে ‘হিরো’ হয়েছিলেন অ্যাসাঞ্জ। কিন্তু ২০১৭ সালে লেনিন মোরেনো ইকুয়েডরের ক্ষমতায় আসার পর থেকে সরকারের সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে শুরু করে অ্যাসাঞ্জের।
বিভিন্ন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে বেনামে ওয়েবসাইট চালানোর অভিযোগ তুলেছে মোরেনো সরকার।
অভিযোগ উঠে, মোরেনোর ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিষয়ে নানা তথ্য প্রকাশ করা হয় ওই বেনামী ওয়েবসাইটে। সেখানে ‘আইএনএ পেপার্স’ নামে একটি নথি প্রকাশিত হয়। যেখানে জানানো হয় যে, অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন করে মোরেনোর ভাই ও পরিবার ইউরোপে বিলাসবহুল জীবনযাপন কাটিয়েছেন।
শুধু তাই নয়, সেই নথিতে মোরেনো ও তার পরিবারের ব্যক্তিগত ছবিও ফাঁস করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
এতে অ্যাসাঞ্জের ওপর ক্ষেপে যান মোরেনো। তিনি তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট ও ছবি হ্যাক করার অধিকার কে দিয়েছে প্রশ্ন ছুড়েন অ্যাসাঞ্জকে।
মোরেনোর এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করে উইকিলিকস। তবে তাতে কোনো কাজ হয়নি। এতে অ্যাসাঞ্জকে দেয়া আশ্রয় প্রত্যাহার করে নেয় ইকুয়েডর সরকার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মোরেনোর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এবং ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের সন্দেহে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইকুয়েডর সরকার।
এদিকে আটক করার পর জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণ করা হচ্ছে। কম্পিউটার হ্যাক করার ষড়যন্ত্রের মামলায় সেখানে তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
প্রসঙ্গত, অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক অ্যাসাঞ্জ ২০১০ সালে পেন্টাগন ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লাখ লাখ সামরিক এবং কূটনৈতিক গোপন নথি ফাঁস করে দিয়ে বিশ্বজুড়ে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন।
২০০৬ সালে কয়েকজন সঙ্গী নিয়ে অ্যাসাঞ্জ ওয়েবসাইট উইকিলিকস চালু করেন। ২০১০ সালে উইকিলিকস বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলতে সক্ষম হয়।
সুইডেনে তার বিরুদ্ধে মামলার ঘটনায় জামিনে থাকার সময় ২০১২ সাল থেকে লন্ডনে ইকুয়েডর দূতাবাসটিতে আশ্রয় নিয়ে ছিলেন অ্যাসাঞ্জ।
বিডি প্রতিদিন/১৩ এপ্রিল ২০১৯/আরাফাত