ভারতের রাজধানী নয়দিল্লিতে চার দিনব্যাপী সংঘর্ষ চলাকালীন দিল্লি পুলিশের কাছে ১৩ হাজার ২০০টি অভিযোগ আসলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, কোথাও গোলাগুলি হচ্ছিলো আবার কোথাও গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়াও অভিযোগ এসেছিল। তা সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি দিল্লি পুলিশ। একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের বরাত দিয়ে এমন সংবাদ প্রকাশ করেছে আনন্দবাজার পত্রিকা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর বিরোধী ও সমর্থকদের সংঘর্ষে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দফায় দফায় মেতে উঠে দিল্লি। তাতে এখনও পর্যন্ত ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে দুই শতাধিক মানুষ। পুলিশ-প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার জন্যই সহিসংসতা এমন চরম আকার ধারণ করে বলে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের অভিযোগ, ফোনে বার বার অভিযোগ করা সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ।

শুধুমাত্র যমুনা বিহার থেকেই ভজনপুরা থানায় ২৪-২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার ফোন এসেছিল বলে জানিয়েছে ওই সংবাদ মাধ্যম। ভজনপুরা থানার আট পাতার কল রেজিস্টার খতিয়ে দেখে তারা জানিয়েছে, কোন নম্বর থেকে ফোন আসছে, কী অভিযোগ এবং তার প্রেক্ষিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তার জন্য রেজিস্টারের পাতায় আলাদা আলাদা কলাম থাকলেও শুধুমাত্র কোথা থেকে ফোন এসেছিল, কী অভিযোগ তা-ই লেখা রয়েছে। এমনকি গুলি চলা এবং আগুন লাগানোর অভিযোগও লেখা রয়েছে তাতে। কিন্তু অভিযোগের প্রেক্ষিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তার উল্লেখ নেই সেভাবে। অর্থাৎ অভিযোগ পেয়েও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ।

শুধু সাধারণ মানুষই নন, তার অভিযোগের প্রেক্ষিতেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন যমুনা বিহারের বিজেপি কাউন্সিলর প্রমোদ গুপ্ত। পুলিশ তাঁর ফোনই ধরেনি বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। সংবাদ মাধ্যমে প্রমোদ গুপ্ত বলেন, ‘পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেনি। পুলিশ যদি ব্যবস্থা নিতো পরিস্থিতি এতটা খারাপ দিকে মোড় নিত না।’

একই অভিযোগ শিববিহারের ‘রাজধানী পাবলিক স্কুল’-এর মালিক ফয়জল ফারুকের। তিনি জানান, সোমবার স্কুলে হামলা চালায় তাণ্ডবকারীরা। সমস্ত পড়ুয়া এবং শিক্ষক-শিক্ষিকারা বেরিয়ে গেলে বার বার পুলিশকে ফোন করেন তিনি। ফোনে তাদের আশ্বাস দিলেও স্কুল চত্বরে পুলিশ এসেই পৌঁছয়নি।

বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব