নায়াগ্রা অঞ্চলের মধ্যে সেন্ট ক্যাথেরিন সব চেয়ে বড় শহর। নায়াগ্রা ফলস থেকে এই শহরটির দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। কানাডার অন্যান্য ছোট শহরগুলোর মতই শান্ত। প্রায় ১ লক্ষ ৩২ হাজারের মত জনসংখ্যা। শহরটির পরিচিতি ‘গার্ডেন সিটি’ হিসেবে। বিশেষভাবে চেরি, পিয়ার, আপেল, এ্যাপ্রিকট, পিচ ও সর্বোপরি আঙুরের চাষ প্রসিদ্ধ। নায়াগ্রার বিশ্বখ্যাত আইস ওয়াইনের বেশির ভাগ উৎপাদন স্থল এই শহরের গ্রামীণ অঞ্চলগুলো। বিশেষত আঙুর বাগানের সংলগ্ন এলাকায় তা হয়।
এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের আসা শুরু হয়ে যায় মেক্সিকো, গায়না, জামাইকা ইত্যাদি দেশ থেকে। পুরো শহর কোলাহলে মেতে ওঠে টানা সাত-আট মাস শীতের কবল থেকে মুক্তির আনন্দে। গরমকাল আসছে বলে সব স্কুল ছুটির অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু এ বারে সবই আলাদা, সেই ফেব্রুয়ারি থেকে স্কুলে ছুটি পড়ছে। ইস্টারও চলে গেল বাড়ির মধ্যে কাটিয়ে। ইস্টার এগ ও হান্ট হল বাড়ির বাইরে না বেরিয়ে।
ড্যাফোডিল ফুটতে শুরু করেছে। টিউলিপের কুঁড়ি এসে গেছে। আগামী সপ্তাহে ফুলের দেখা পাওয়া যাবে। প্রকৃতি তার নিয়মে অনান্য বছরের মত ঋতু পরিবর্তনের সব সংকেত নিয়ে উপস্থিত। কিন্তু সবার মাঝে অনুপস্থিত শুধু মানুষ। নায়াগ্রার কাছে-পিঠের পার্কগুলোতে মনের আনন্দে হরিণ বিচরণ করছে।
পাশের রাষ্ট্রে প্রতি দিন মানুষের মৃত্যু-মিছিল। নায়াগ্রার ওপারেই নিউ ইয়র্ক স্টেটের দ্বিতীয় বৃহত্তর শহর বাফেলো। এখান থেকে মাত্র ৪৫ কিলোমিটার দূরে। প্রতিদিন অসংখ্য গাড়ি, মানুষ, মাল পরিবহনের ট্রাক পারাপার করে। কী সাংঘাতিক ব্যস্ততা থাকে সব সময়। এক পলকে এখন তা খাঁ-খাঁ করছে।
নায়াগ্রার ধারে টেবিল রক সেন্টারে তিল ধারণের জায়গা থাকে না, এখন কী এক জাদুতে তা জনমানব শূন্য। কিন্তু প্রতিদিনের মতোই নায়াগ্রার জল অবিরত ধারায় বয়ে চলেছে। এখন অপেক্ষা মহামারির শেষ হওয়ার। তবেই আবার নায়াগ্রার মনমোহিনী রূপ দেখার জন্য দর্শক সমাগম ঘটবে। মহামারির শেষ যেন অতি দ্রুত সমগ্র বিশ্ব দেখতে পায়। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন