দীর্ঘ ছয় দশক ধরে চীনের ছত্র ছায়া থেকে বেরিয়ে আলাদা স্বাধীন রাষ্ট্রগঠনের আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে তাইওয়ান। কিন্তু দেশটিকে নিজেদের অধিকারের বাইরে ভাবতে নারাজ বেইজিং।
চীনা মূল ভূখণ্ড থেকে স্বাধীন হলে তাইওয়ানের জন্য সে স্বাধীনতা মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করে দেন চীনের প্রেসিডেন্ট।
এদিকে, নতুন করে চীনের ছায়া থেকে বেরিয়ে স্বাধীন তাইওয়ান কখনো 'সহ্য করা হবে না’ বলে জানিয়েছেন বেইজিং সরকারের এক মুখপাত্র।
সাই ইং ওয়েন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নিতেই চীনের মূল ভূ-খণ্ড থেকে এমন হুঁশিয়ারি আসলো।
তাইওয়ানকে স্বশাসিত অঞ্চল হিসেবে মর্যাদা দিলেও স্বাধীনতা প্রশ্নে তাদের অবস্থান ইস্পাত কঠিন। বরং তাইওয়ানকে এক করে ফেলতে চেষ্টার কমতি নেই চীন সরকারের। স্বাধীনতাকামীদের নিয়ন্ত্রণে সামরিক পদক্ষেপ নিতেও পিছ পা হয় না তারা।
এর আগে, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং জানান, তাইওয়ানকে অবশ্যই চীনের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে মিশে যেতে হবে।
চীনের তাইওয়ান অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক অফিসের মুখপাত্র মা সিয়াওগুয়াং চীনের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে বলেছেন, “জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার পর্যাপ্ত সক্ষমতা চীনের রয়েছে। বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যক্রম বা চীনের ভেতরকার রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করে এমন কোনো বহিশক্তির হস্তক্ষেপ কখনই মেনে নেবে না বেইজিং।”
মা জানিয়েছেন, শান্তিপূর্ণ পুনর্মিলনের বড় সম্ভাবনা তৈরিতে ছিল চীন। তবে এখন আর তাইওয়ানের কোনো ধরনের স্বাধীনতাকামী আন্দোলনকারীদের আর সুযোগ দেওয়া হবে না। শান্তিপূর্ণ পুনর্মিলনের ক্ষেত্রে চীন সেই ‘এক দেশ, দুই নীতি’ অনুসরণ করতে পারে বলে জানান তিনি।
আধা-স্বায়ত্তশাসিত হংকংয়ের মতো তাইওয়ানকেও চীন ‘এক দেশ, দুই নীতি’ প্রস্তাব দিয়ে আসছে দীর্ঘ দিন ধরে। তাতে তাইওয়ান মূল চীনে বিলুপ্ত হবে, কিন্তু তাদের স্বায়ত্তশাসন দেওয়া হবে। কিন্তু তাইওয়ান সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
এ ব্যাপারে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং ওয়েনের সঙ্গে বিরোধ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। সাই মনে করেন, তাইওয়ান কার্যত একটা স্বাধীন রাষ্ট্র এবং সেটা চীনের অংশ না।
তাইওয়ান বর্তমানে একটি স্বায়ত্বশাসিত দেশ এবং নিজেদেরকে তারা স্বাধীন দাবি করে। ১৯৪৯ সালে গৃহযুদ্ধের ভেতর দিয়ে তারা আলাদা হয়ে যায়। তবে তাইওয়ানকে এখনো অবিচ্ছেদ্য অংশ বলেই মনে করে চীন।
চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, চীন ও তাইওয়ান দু’পক্ষ একই পরিবারভুক্ত ছিল। তাইওয়ানের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেয়ার কোনো রকম তৎপরতাকে কখনোই সহ্য করবে না চীন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন