পাকিস্তানে ইসলাম অনুমোদন করে না এমন অভিযোগে মৌলভীর নির্দেশে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে গান্ধব সভ্যতার একটি প্রাচীন বুদ্ধ মূর্তি। দেশটির খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে ১৭ জুলাই একটি বাড়ি তৈরির জন্য ভিত খুড়তে গিয়ে মাটির তলা থেকে বেরিয়ে আসে প্রাচীন বুদ্ধ মূর্তিটি। স্থানীয় এক মৌলভীর নির্দেশে সেই মূর্তি হাতুড়ি দিয়ে ভেঙে ফেলে পাকিস্তানের শ্রমিকেরা। মূর্তি ইসলাম বিরোধী, এই কথা বলে সেটিকে ধ্বংস করে দিয়েছে তারা। এই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
খাইবার পাখতুনখোয়া জেলার মর্দনে তখত ভাই এলাকায় পাওয়া যায় সেই মূর্তি। এই এলাকাটি গান্ধব সভ্যতার নিদর্শন হিসেবে ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় আন্তর্ভূক্ত। মর্দনে অবস্থিত প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলো খ্রিস্টীয় ৭ম শতকের। গন্ধর্ব সভ্যতার অংশ ছিল তখত ভাই। প্রথমবার ১৮৩৬ সালে খনন কাজ হয় এখানে। এরপর থেকে পুরাতত্ববিদরা শতাধিক পুরনো সামগ্রী মাটির নীচ থেকে উদ্ধার করেছেন। এর অধিকাংশই টেরাকোটা ও কাদামাটি দিয়ে তৈরী।
অভিযোগ উঠেছে নির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত কন্ট্রাক্টর কোনো এক মৌলভীর পরামর্শে এই কাজ করেছে। মৌলভীর বক্তব্য, ওই মূর্তি থাকলে ভয়ঙ্কর ক্ষতি হতে পারে এবং তাদের বিবাহ ভেঙে যাবে। ফলে ভয় পেয়ে কন্ট্রাক্টর শ্রমিকদের দিয়ে মূর্তিটি ধ্বংস করে দিয়েছেন।
এদিকে, গত জুন মাসে রাজধানী ইসলামাবাদে প্রথম হিন্দু মন্দিরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের কথা ছিল, তবে মৌলবাদীদের বাধার মুখে সংখ্যালঘুদের প্রথম সেই স্থাপনার ভিত্তি স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। পাকিস্তানে কেবল হিন্দু সম্প্রদায়ের নয়, অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ঐতিহ্যকে রাষ্ট্রীয় সহায়তায় ধ্বংস করা হয়েছে। হিন্দু, শিখ, খ্রিস্টান এবং অন্যান্য ধর্মের উপর জোর করে ধর্মান্তর, অপহরণ এবং হত্যার ঘটনাও অব্যাহত রয়েছে দেশটিতে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন