তালেবানরা ইতোমধ্যে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে প্রবেশ করে ফেলেছে। ফলে তারা দেশটির ক্ষমতা দখলের দ্বারপ্রান্তে। এমন অবস্থায় দেশটিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হাতে ‘শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর’ করতে চাইছে আফগান সরকার। আজ রবিবার দেশটির ভারপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায় বিবিসি।
আর এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে প্রধান হিসেবে দেশটির সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও কূটনীতিক আলী আহমাদ জালালির নাম শোনা যাচ্ছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
আফগানিস্তানের সংবাদ সংস্থা খামা প্রেসও তার নাম বলা হয়েছে। বিশেষ সূত্রের বরাত দিয়ে খামা প্রেসের খবরে বলা হয়েছে, তালেবান বাহিনী একের পর এক অঞ্চল দখল করে নেওয়ার পর আজ কাবুলে প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবনে জরুরি বৈঠকে বসেছেন প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি। আফগানিস্তানের হাই কাউন্সিল ফর ন্যাশনাল রিকনসিলিয়েশনের প্রধান আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ ক্ষমতা হস্তান্তর শুরুর প্রক্রিয়ার মধ্যস্থতা করছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে জালালির নিয়োগের চূড়ান্ত অনুমোদন তালেবান দেবে কি না, সে ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু জানা যায়নি।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল সাত্তার মিরজাকওয়াল এক টেলিভিশন ভাষণে বলেছেন, শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে। তবে এই ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।
ইতোমধ্যে আট থেকে নয়জনের একটি তালেবান প্রতিনিধি দল আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের ভেতরে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে আলোচনায় বসেছেন বলে জানা গেছে। তালেবানের মুখপাত্র সুহেল শাহীন বিবিসিকে বলেছেন, আফগানিস্তানের জনগণের প্রতি কোনো প্রতিশোধ নেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, ‘আমরা আফগানিস্তানের মানুষকে, বিশেষ করে কাবুল শহরে তাদের সম্পত্তি, তাদের জীবনের নিরাপত্তার ব্যাপারে আশ্বস্ত করছি। আমরা দেশ ও জনগণের সেবক। আমাদের নেতা আমাদের বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে কাবুলের গেটে থাকতে, শহরে প্রবেশ না করতে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের অপেক্ষায় আছি।’
তিনি আরও জানান, যেসকল আফগান নাগরিক ইসলামী সরকার গঠনে অংশগ্রহণ করবে, তালেবান না হলেও তাদের সরকার গঠনে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
এদিকে পালাচ্ছেন কাবুলের বাসিন্দারা। বাসিন্দারা শহর ছেড়ে পালাতে শুরু করেছেন। কোন পথে শহর ছাড়বে মানুষ তা ঠিক করতে হিমশিম খাওয়ায় রাস্তায় গাড়ির লম্বা লাইন তৈরি হয়েছে।
অপরদিকে এক টুইটে তালেবান ক্ষমা ঘোষণা করে বলেছে, ‘আফগানিস্তানে যারা এর আগে আগ্রাসনকারীদের জন্য কাজ করেছে বা তাদের সাহায্য করেছে, অথবা এখন যারা দুর্নীতিবাজ কাবুল প্রশাসনের বিভিন্ন পদে আসীন রয়েছে – তাদের সবার জন্য ইসলামিক আমিরাত দরজা খোলা রেখেছে এবং ক্ষমা ঘোষণা করেছে। আমরা আরেকবার তাদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি, যেন তারা দেশ ও জাতির জন্য কাজ করতে এগিয়ে আসেন।’
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ