ইউক্রেনে সেনা অভিযানের পর থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়েছে রাশিয়া। দেশটি এসব নিষেধাজ্ঞা সামাল দিতে বন্ধুত্বপূর্ণ নয় এমন সব দেশের কাছে নিজের প্রাকৃতিক সম্পদ বিক্রির ক্ষেত্রে রুশ মুদ্রা রুবলে অর্থ পরিশোধের শর্ত দেয়। তবে, পার্শ্ববর্তী দেশ ফিনল্যান্ড রাশিয়ার এই শর্তে রাজি হয়নি। এর মধ্যে আবার রাশিয়ার হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে আনুষ্ঠানিকভাবে ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার আবেদন করেছে। ফলে রাশিয়া পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে দেশটিতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিএনএন ও কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরার খবরে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
খবরে ফিনল্যান্ডের রাষ্ট্রমালিকানাধীন জ্বালানি প্রতিষ্ঠান গাসুম’র বরাতে বলা হয়েছে, আজ শনিবার স্থানীয় সময় সকাল থেকে ফিনল্যান্ডে রুশ গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে তাদের জানিয়ে দিয়েছে রাশিয়ার জ্বালানি কোম্পানি গ্যাজপ্রম। মূলত ফিনল্যান্ড রুশ মুদ্রা রুবলে গ্যাসের অর্থ পরিশোধ করতে রাজি না হওয়ায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।তবে, এ ঘোষণা এমন সময় এল, যখন ন্যাটো জোটের সদস্যপদের জন্য আবেদন করে রাশিয়ার তোপের মুখে আছে ফিনল্যান্ড। ফিনল্যান্ডে ব্যবহৃত বেশিরভাগ গ্যাস রাশিয়া থেকে আসে।
গাসুমের প্রধান নির্বাহী মিকা উইলজানেন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এটি অত্যন্ত দুঃখজনক যে, আমাদের সরবরাহ চুক্তির অধীনে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করা হবে। তবে, আমরা এই পরিস্থিতির জন্য সতর্কতার সঙ্গে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম এবং গ্যাস ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্কে কোনো বিঘ্ন ঘটবে না। আমরা সামনের মাসগুলোতে আমাদের সব গ্রাহককে গ্যাস সরবরাহ করতে পারব।’
এদিকে গত রবিবার থেকে ফিনল্যান্ডে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয় রাশিয়া। ক্রেমলিনের এক মুখপাত্র বলেছেন, কেউ তো আর কোনো কিছু বিনা মূল্যে দিতে যাবে না। এর আগে গত মাসে পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়ায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধের ঘোষণা দেয় রাশিয়া। কারণ সেই একই। দুই দেশই গ্যাসের দাম রুবলে পরিশোধ করতে অসম্মতি জানায়।
প্রসঙ্গত, ইউক্রেনে সেনা অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়ার ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদেশগুলো। রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল–গ্যাস কিনবে না বলে জানিয়ে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। যদিও তেল–গ্যাসের ওপর নিষেধাজ্ঞার পথে হাঁটেনি ইউরোপ। কারণ, রাশিয়া থেকে আমদানি করা জ্বালানির ওপর বড় নির্ভরশীলতা রয়েছে ইউরোপের অনেক দেশের।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর