ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রধান বলেছেন, তার দেশের পরমাণু অস্ত্র বানানোর ক্ষমতা আছে, তবে বোমা বানানোর কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। শীর্ষস্থানীয় ইরানি কর্মকর্তার মুখে এ ধরনের দাবি শোনা যাওয়াটা খুবই বিরল। সংবাদদাতারা বলছেন, এর ফলে ইরানের পরমাণু কর্মসূচির প্রকৃতি নিয়ে উদ্বেগ বেড়ে যেতে পারে।
সোমবার ফার্স নিউজ এজেন্সিতে বেরুনো খবরে এসলামি বলেন, ‘যেমনটা খাররাজি বলেছেন - ইরানের পরমাণু বোমা বানানোর কারিগরী ক্ষমতা আছে, কিন্তু এরকম কোন কর্মসূচি এখন এজেন্ডায় নেই।
এর আগে গত ১৭ জুলাই আল-জাজিরা চ্যানেলে প্রকাশিত মন্তব্যে খাররাজি বলেছিলেন ‘একটি পারমাণবিক বোমা বানানোর কারিগরী ক্ষমতা ইরানের আছে কিন্তু এটা তৈরি করার কোন সিদ্ধান্ত ইরান নেয়নি।’
ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ২০১৫ সালে একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি হবার পর তাদের এ সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড সীমিত হয়ে পড়েছিল। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হবার পর যুক্তরাষ্ট্র চুক্তিটি থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়ে নতুন নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর এর কার্যকারিতা কমে যায়।
তারপর থেকে ইরানের পরমাণু সংক্রান্ত কার্যক্রম জোরদার হয়েছে। ইরান দাবি করে যে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচির উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ - কিন্তু পশ্চিমা শক্তিধর দেশগুলো এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা এ ব্যাপারে নিশ্চিত নয়। পশ্চিমা কর্মকর্তারা এর আগে সতর্ক করেছেন যে চুক্তিটি পুনরায় কার্যকর করার সময় দ্রুত পেরিয়ে যাচ্ছে। কারণ এ বিলম্বের ফলে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি এমন এক স্তরে পৌঁছে যেতে পারে যেখান থেকে আর পেছন ফেরা যাবে না।
একটি পরমাণু বোমা বানাতে প্রায় ২৫ কেজি ইউরেনিয়াম দরকার হয় - যা ৯০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ হতে হবে। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা আইএইএ মে মাসে এক রিপোর্টে বলেছিল, ইরানের হাতে ৬০% পর্যন্ত সমৃদ্ধ ৪৩.১ কেজি ইউরেনিয়াম আছে। অবশ্য এ সংস্থার প্রধান রাফায়েল গ্রসি তখন বলেছিলেন যে যথেষ্ট পরিমাণ ইউরেনিয়াম থাকলেই যে ইরান বোমা বানাতে পারবে - তা নয়।
পরমাণু বোমা বানানোর মত উচ্চ মাত্রার সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম যথেষ্ট পরিমাণে হাতে পেতে ইরানের যে সময় লাগতে পারে - সেই সময়টাকে বলা হচ্ছে 'ব্রেকআউট টাইম' । ইরানের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ হলো, ইরানকে থামানোর জন্য এ সময়টুকু হাতে আছে কিনা - তা নিয়েই। সূত্র : বিবিসি বাংলা
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর