ভিয়েতনামের ট্রুং মাই ল্যান নামের এক শীর্ষস্থানীয় নারী ধনকুবের ১২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাতের মামলায় মৃত্যুদণ্ডর মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ব্যাংক জালিয়াতির ঘটনা এটি। বৃহস্পতিবার তিনিসহ কয়েক ডজন আসামির বিরুদ্ধে এই অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আদালতে প্রমাণিত হয়েছে।
জানা গেছে, ৬৭ বছর বয়সী অভিযুক্ত ল্যান একটি ডেভেলপার কোম্পানির চেয়ারপারসন। তিনি ভিয়েতনামের সাইগন কমার্শিয়াল ব্যাংক (এসসিবি) থেকে এক দশক ধরে জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। তার সঙ্গে অন্যান্য অভিযুক্তরাও হাইপ্রোফাইল প্রাক্তন সরকারি কর্মকর্তা এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তা। এছাড়া যে ব্যাংকটি থেকে টাকা আত্মসাৎ হয়েছে, ওই ব্যাংকের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাও এ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ, ক্ষমতার অপব্যবহার, জালিয়াতি এবং ব্যাংকিং আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
অবশ্য এ মামলায় দায় অস্বীকার করেছেন ল্যান। তিনি মামলার সকল দায় তার অধীনস্তদের ওপর চাপিয়েছেন। তার আইনজীবীরা বলছেন, ল্যানের কোনো দোষ নেই। তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে এসসিবির পদস্থও নন।
তবে বিচারকদের যুক্তি, ল্যান এসসিবি ব্যাংকের ৯১ দশমিক ৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক। তিনিই ঋণ অনুমোদনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ব্যক্তিগত ব্যয় পরিচালনার জন্য উৎস হিসেবে তিনি এসসিবিকে ব্যবহার করেছেন। ২০১২ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ব্যাংকিং বিধি লঙ্ঘন করে ৩৬৮টি ঋণ অনুমোদনের নির্দেশ দিয়েছেন ল্যান। এসব কারণে ব্যাংকের লোকসান দাঁড়ায় ৬৪ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন ভিয়েতনামি দং। ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে তিনি ৩০৪ ট্রিলিয়ন ভিয়েতনামি দং তছরুপ করেছেন।
ভিয়েতনামে ২০১৮ সাল থেকে বেসরকারি খাতের ব্যক্তিদের অর্থ তছরুপকে ফৌজদারি আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ কারণে ল্যানের বিরুদ্ধে মামলাটি আত্মসাৎ হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে।
এদিকে ল্যান গত সপ্তাহে আদালতে বলেছেন, হতাশায় আমি আত্মহত্যার কথা ভেবেছিলাম। আমি বোকা ছিলাম বলেই এই ভয়ংকর ব্যবসায়িক পরিবেশে জড়িয়ে পড়েছি। ব্যাংক খাত সম্পর্কে আমার জ্ঞান খুব কম। সূত্র : বিবিসি ও ডেইলি মেইল।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক