ভারতে এখন থেকে যত্রতত্র বুলডোজার চালিয়ে কোনো ব্যক্তির ঘরবাড়ি ভাঙা যাবে না বলে স্পষ্ট করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, কোনো ব্যক্তি অপরাধে অভিযুক্ত বা দোষী সাব্যস্ত হলেও তার সম্পত্তি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া যাবে না। এমন পরিস্থিতিতে সার্বিকভাবে নিয়মনীতি প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে আদালত।
বিচারপতি বি আর গাভাই ও বিচারপতি কে ভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ আরও জানায়, এক ব্যক্তির অপরাধের শাস্তি তার পরিবারের ওপর চাপানো যায় না। যদিও অবৈধ নির্মাণ ভাঙার অধিকার সরকারের রয়েছে, তবে সে ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নিয়ম মানা আবশ্যক, যেমন আগে নোটিশ প্রদান এবং উত্তরের সুযোগ দেওয়া।
উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, এবং রাজস্থানের মতো রাজ্যগুলোতে ফৌজদারি অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের বাড়িঘর বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেওয়ার ঘটনা বেড়ে গেছে। বিশেষ করে, উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের জন্য ‘বুলডোজার বাবা’ নামকরণও হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের এই রায় বিরোধীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আসে, যেখানে বলা হয়, বিজেপি বিরোধীদের এবং বিশেষ করে মুসলমানদের বাড়ি টার্গেট করে ভাঙা হচ্ছে। আদালতে এ নিয়ে মামলা হলে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করে জানায়, এ ধরনের আচরণ বিচারবিরোধী।
বিচারপতিরা আরও বলেন, দেশে বুলডোজার ব্যবহারের নীতি বিষয়ে নতুন গাইডলাইন তৈরি করা হতে পারে, যাতে এর অপব্যবহার রোধ করা যায়। ১৭ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
আইনজীবীরা আদালতকে দিল্লির জাহাঙ্গীরনগর এবং রাজস্থানের উদয়পুরের উদাহরণ দিয়ে জানান, বহু পুরোনো বাড়িও বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে অভিযুক্তের অপরাধের দায় তার পরিবারকে বহন করতে হচ্ছে। আদালত এই প্রক্রিয়াকে অন্যায্য হিসেবে চিহ্নিত করে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল