গ্যাসের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ায় চলতি গ্রীষ্মে মিসর প্রচণ্ড জ্বালানিসংকটে ভুগছে মিসর। এছাড়া আর্থিক সংকটে থাকা দেশটি গ্যাস আমদানির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থও খরচ করতে পারছে না। তাই মিসরের পাশে দাঁড়িয়েছে সৌদি আরব ও লিবিয়া। দেশ দুটি মিসরের কেনা গ্যাসের দাম পরিশোধ করেছে।
সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। বলা হয়েছে, সৌদি আরব ও লিবিয়া এই দফায় মিসরের গ্যাস কেনার জন্য ২০ কোটি ডলার দিয়েছে। একটি সূত্র বলেছে, আগামী অক্টোবর পর্যন্ত চলতি গ্রীষ্মে মিসরের ২০০ কোটি ডলার মূল্যের গ্যাস প্রয়োজন। কিন্তু বৈদেশিক মুদ্রার সংকটের কারণে তরলীকৃত গ্যাস আমদানি দেশটির জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অন্য একটি সূত্র বলছে, ‘উপসাগরীয় এলাকায় আমাদের বন্ধুদের সহায়তা ছাড়া এই গ্যাস কেনার অর্থ দেওয়া মিসরের পক্ষে সম্ভব হবে না। মিত্রদের কাছ থেকে অতিরিক্ত তহবিল সংগ্রহের চেষ্টা করছে দেশটির কর্মকর্তারা।
চলতি বছর সব মিলিয়ে মিসর ৩২ কার্গো এলএনজি কিনেছে, যার মধ্যে তিনটির জন্য অর্থ দিয়েছে সৌদি আরব। বাজারের বর্তমান দর অনুযায়ী এর জন্য ১৫ কোটি ডলার খরচ হতে পারে। লিবিয়া গত জুলাইয়ে এক কার্গো এলএনজি কিনেছে, যার জন্য খরচ হয়েছে পাঁচ কোটি ডলারের মতো। লিবিয়ান ন্যাশনাল অয়েল করপোরেশন এই অর্থ দিয়েছে।
লিবিয়ার গ্যাস কেনা এবং সৌদি আরব ও লিবিয়ার অর্থ সহায়তার বিষয়টি নিয়ে এর আগে সংবাদ প্রকাশিত হয়নি।
সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত এর আগে মিসরকে শত শত কোটি ডলারের সহায়তা দিয়েছে। এর লক্ষ্য হলো প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসিকে সমর্থন জানানো। দেশ দুটি আল-সিসিকে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র বলে মনে করে।
গ্যাসের চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে বিপুল পার্থক্যের কারণে মিসরে গত বছর লোডশেডিং করে বিদ্যুতের ব্যবস্থা চালু রাখে। জ্বালানিসংকটের কারণে মিসরের বাজেটেও বড় ধরনের চাপ পড়ছে, কারণ, দেশটিকে জ্বালানি খাতে ভর্তুকি দিতে হয়।
মিসরের সরকার চলতি গ্রীষ্মে জ্বালানি ও খাদ্যে ভর্তুকির হার বাড়িয়েছে। কিন্তু এ বছরের মার্চ থেকে মিসরের মুদ্রা পাউন্ডের ৬০ শতাংশ অবমূল্যায়ন হওয়ার কারণে ভর্তুকির হার বৃদ্ধি তেমন কাজে আসছে না। ফলে দেশটির বিপুলসংখ্যক মানুষ জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির কারণে চাপে রয়েছেন।
গত মে মাসে মিসরের বিদেশি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫৪ বিলিয়ন বা ১৫ হাজার ৪০০ কোটি ডলারে। এর আগে ২০২৩ সালের শেষে বিদেশি ঋণের পরিমাণ ছিল ১৬৮ বিলিয়ন বা ১৬ হাজার ৮০০ কোটি ডলার।
বিডি-প্রতিদিন/শআ