যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ায় আজকের বিতর্কে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস মুখোমুখি হচ্ছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। বাংলাদেশের সময় বুধবার সকালে এবিসি নিউজের এই বিতর্কে কোটি কোটি দর্শকের চোখ থাকবে দুই প্রার্থীর দিকে। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কমলার আক্রমণ এবং তার প্রতিক্রিয়া কীভাবে পরিচালিত হবে, তা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। বিশেষ করে রিপাবলিকান সমর্থকরা মনে করছেন, কমলা বিতর্কে টিকে থাকতে পারবেন না। অন্যদিকে, ডেমোক্র্যাট সমর্থকদের আশা, কমলা হ্যারিস তার অভিজ্ঞতা ও প্রস্তুতির মাধ্যমে ট্রাম্পকে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করতে প্রস্তুত।
বিতর্ক সামনে রেখে, এএফপির একদল সাংবাদিক মার্কিন ভোটারদের মতামত সংগ্রহ করেছেন। দেখা গেছে, উভয় পক্ষের সমর্থকেরাই তাদের প্রার্থীকে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী। অনেকেই মনে করছেন, কমলা ও ট্রাম্পের আলোচনায় শুধু নীতিগত ইস্যুই নয়, তাদের মঞ্চে উপস্থাপন কৌশল, ভঙ্গি এবং সংযমও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
পেনসিলভানিয়ার একটি সাম্প্রতিক ট্রাম্প সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ৭৩ বছর বয়সী ফ্লো এবারহার্ট, যিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং ট্রাম্পের সমর্থক। তার মতে, ‘ট্রাম্পের অবস্থান অত্যন্ত সুবিধাজনক। কমলা হ্যারিস কিছুই জানেন না, এবং তিনি মঞ্চে টিকতে পারবেন না।’ যদিও কমলা হ্যারিস একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ এবং ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে কাজ করেছেন, ট্রাম্পের সমর্থকরা তার বিতর্ক দক্ষতা নিয়ে সন্দিহান।কমলা হ্যারিসের তরুণ সমর্থক জ্যামিলা স্কেলস মনে করেন, হ্যারিস খুব ভালোভাবেই ট্রাম্পের মুখোমুখি হবেন এবং তাকে ঘায়েল করবেন। নিউ হ্যাম্পশায়ারের বাসিন্দা স্কেলস জানান, ‘আমি নিশ্চিত, কমলা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তার শক্ত অবস্থান দেখাতে পারবেন। এই বিতর্ক মার্কিন জনগণের জন্য একটি অসাধারণ দিন হতে যাচ্ছে।’
অন্যদিকে, ট্রাম্পের সমর্থকরা আশা করছেন, ট্রাম্প তার স্বভাবসুলভ আক্রমণাত্মক কৌশল থেকে সরে এসে বিতর্কে নতুন কিছু উপস্থাপন করবেন। জিমি ট্যাগার্ট নামের এক ট্রাম্প সমর্থক মনে করেন, ‘ট্রাম্প যদি একটু চুপ থাকেন, তাহলে কমলা নিজেই ধরা পড়বেন।’ তবে, ট্রাম্প সাধারণত চুপ থাকার ব্যক্তি নন, ২০১৬ সালের হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গে বিতর্কে তিনি শক্ত অবস্থানে ছিলেন।
ডেমোক্র্যাট সমর্থক কেট থম্পসন মনে করেন, ট্রাম্প যতই ভয় দেখানোর চেষ্টা করুন না কেন, কমলা হ্যারিস যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়েই মঞ্চে আসবেন এবং ট্রাম্পকে কৌশলীভাবে মোকাবিলা করবেন।
পেনসিলভানিয়ার সাবেক সেনা কর্মকর্তা কার্ক ম্যাককেন্ড্রি বলেন, ট্রাম্পের উচিত হবে বিতর্কে শৃঙ্খলার মধ্যে থাকা এবং বাইডেনের শাসনামলের সঙ্গে তুলনা করে তার আগের চার বছরের অর্জনগুলো তুলে ধরা।
বিতর্কের আরেকটি সম্ভাব্য ইস্যু হতে পারে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্যগুলো। যেখানে তিনি পেনসিলভানিয়ার ভোটিং সিস্টেমকে জালিয়াতি হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং ৬ জানুয়ারির দাঙ্গাকারীদের ক্ষমা করে দেওয়ার কথা বলেছেন। কমলা হ্যারিস এসব নিয়ে ট্রাম্পের মানসিকতা এবং উগ্রপন্থাকে আক্রমণ করতে পারেন। তবে বিতর্কের আগে দুই পক্ষের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে, এবং কে এগিয়ে থাকবে, তা বলা কঠিন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল