প্রতিরক্ষাখাতে খরচ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস।
ট্রাম্প বলেছেন, সামরিক জোট ন্যাটোর দেশগুলোকে জিডিপির পাঁচ শতাংশ প্রতিরক্ষাখাতে খরচ করতে হবে। তবে এতে একমত নন শলৎস।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) পশ্চিম জার্মানিতে একটি নির্বাচনি ইভেন্টে জার্মান চ্যান্সেলর বলেছেন, ‘জার্মানির ক্ষেত্রে জিডিপির পাঁচ শতাংশ খরচ করা মানে প্রতিরক্ষায় ২০ হাজার কোটি ইউরো খরচ করা। জার্মানির ফেডারেল বাজেটই ৫০ হাজার কোটি ইউরো হয় না।’
জার্মান চ্যান্সেলর জানান, ‘প্রচুর কর বাড়িয়ে বা অন্য সব খরচ ছাঁটাই করে প্রতিরক্ষাখাতে খরচ বাড়াতে হবে। কিন্তু অন্য সব খাতে খরচ করাটা জার্মানির জন্য খুব জরুরি। আমি কখনই পেনশন কমাব না, স্থানীয় সরকার বা যানবাহন পরিকাঠামোর জন্য খরচ ছাঁটাই করব না।’
শলৎস জানিয়েছেন, গতবছর জিডিপির দুই শতাংশ প্রতিরক্ষায় খরচ করা হয়েছিল। স্নায়ুযুদ্ধের পর এই প্রথমবার জার্মানি প্রতিরক্ষায় জিডিপির দুই শতাংশ অর্থ খরচ করলো। এই খরচ বহাল রাখা হবে বলে শলৎস জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ‘যারা জিডিপির দুই শতাংশের বেশি অর্থ খরচ করার প্রস্তাব দিচ্ছেন, তারা এটাও জানান, ওই অর্থ কোথা থেকে পাওয়া যাবে?’
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর জর্মানির পার্লামেন্টে শলৎস জানিয়েছিলেন, জার্মানির সেনাবাহিনীর জন্য তিনি ১০ হাজার কোটি ইউরোর বিশেষ তহবিল তৈরি করবেন। কিন্তু বাজেট পরিস্থিতি ও ঘাটতি নিয়ে কড়া সাংবিধানিক নিয়মের মধ্যে পড়ে শলৎস তা করতে পারেননি।
শলৎস এই কথা বললেও জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও তার দলের নেতা বরিস পিস্টোরিয়াস বলেছেন, সেনাবাহিনীর জন্য খরচ বাড়ানো উচিত।
ইউক্রেনের হাতে অত্যাধুনিক কামান তুলে দেয়া উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, ‘আগামী দিনে সেনার ক্ষমতা বাড়ানোকেই আমাদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা ২০২৫ সালে এই প্রবণতা বজায় রাখব। আমরা জানি, তার পরের বছরগুলোতে আমাদের প্রতিরক্ষায় আরও বিনিয়োগ করতে হবে। জিডিপির দুই শতাংশ দিয়ে তা শুরু হয়েছে। সেটা আরো বাড়াতে হবে।’
অন্যান্য ন্যাটো দেশগুলোর মধ্যে রাশিয়ার প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ড ২০২৪ সালে তাদের জিডিপির চার দশমিক দুই শতাংশ প্রতিরক্ষায় খরচ করেছে। এস্তোনিয়া জিডিপির তিন দশমিক চার, লাটভিয়া তিন দশমিক ১৫, লিথুয়ানিয়া দুই দশমিক ৮৫, ফিনল্যান্ড দুই দশমিক ৪১ শতাংশ অর্থ প্রতিরক্ষায় খরচ করে।
যুক্তরাষ্ট্র প্রতিরক্ষাখাতে খরচ করে তিন দশমিক ৩৭ শতাংশ।
সূত্র : ডয়চে ভেলে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত