প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরের আগে ভারত মার্কিন পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই পদক্ষেপ ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও জোরদার করতে নেওয়া হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারত প্রায় ৩০টি মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক কমানোর পরিকল্পনা করেছে। এতে ফুটওয়্যার থেকে শুরু করে বিভিন্ন উৎপাদন খাতের পণ্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এর আগে, ব্রিকস (BRICS) দেশগুলোর ওপর শুল্ক বাড়ানোর হুমকি দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ব্রিকসের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে চীন, রাশিয়ার পাশাপাশি ভারতও রয়েছে। ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি ব্রিকস দেশগুলোর ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখতে ভারত স্পষ্ট করেছে যে, তারা মার্কিন ডলার থেকে সরে যাবে না, কারণ ডলার বিশ্বব্যাপী প্রধান মুদ্রা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
ভারতের এই শুল্ক ছাড়ের আওতায় বিলাসবহুল গাড়ি, সোলার সেল, সেমিকন্ডাক্টর ডিভাইস ও কেমিক্যালসের মতো গুরুত্বপূর্ণ পণ্য অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্রের বিলাসবহুল গাড়ির ক্ষেত্রে ৩৫ লাখ রুপি বা তার বেশি দামের গাড়িতে ৪০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক ও ৭০ শতাংশ মূল কাস্টমস শুল্ক কমানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, বাইক, ফুটওয়্যার, স্মার্ট মিটার, ইলেকট্রনিক খেলনা এবং কিছু রাসায়নিক পণ্যের শুল্কও কমানো হতে পারে।
এছাড়া, মার্বেল, গ্রানাইট ও স্ল্যাবের মতো পণ্যে শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যদিও ভারত এই পণ্যগুলো অনেক বেশি উৎপাদন করে। ফলে এসব পণ্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা হলে সেগুলোর দাম কমবে।
ভারত মূলত মার্কিন পণ্য আমদানি বাড়াতে এ উদ্যোগ নিয়েছে। বর্তমানে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মোট বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ১২০ বিলিয়ন ডলার। তবে, ভারত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ৪০ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য উদ্বৃত্তে রয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে ভারত এই পদক্ষেপ নিয়েছে। এর আগে, ট্রাম্প চীন, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য ও মেক্সিকোর ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন। তবে ভারত এ মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক আরও উন্নত করার কৌশল নিচ্ছে।
উল্লেখ্য, নরেন্দ্র মোদি আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন। সফরে ট্রাম্পের সঙ্গে তার বৈঠকে বাণিজ্য, প্রযুক্তিগত সহযোগিতা, প্রতিরক্ষা সম্পর্ক ও অভিবাসন নীতি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠিয়েছে, যা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। এর মধ্যেই মোদির এই সফর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
ফ্রি প্রেস জার্নাল
বিডি প্রতিদিন/আশিক